সোমবার, ৩ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা
সাক্ষাৎকার : সাদিয়া জাহান প্রভা

আমি সাংবাদিকদের কাছে কৃতজ্ঞ

আমি সাংবাদিকদের কাছে কৃতজ্ঞ

ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও মডেল সাদিয়া জাহান প্রভা। দীর্ঘ শোবিজ ক্যারিয়ারে একের পর এক দর্শকপ্রিয় নাটক-টেলিছবি উপহার দিয়েছেন।  তবে ১০ বছরেরও অধিক সময় ধরে গণমাধ্যমে নিজেকে অনেকটাই নিভৃতচারী হিসেবেই প্রতিষ্ঠা করেছেন। সম্প্রতি প্রভার সঙ্গে সমসাময়িক নানা বিষয়ে কথা বলেছেন - পান্থ আফজাল

 

কেমন আছেন?

জি ভালো আছি।

 

কয়েক দিন আগেই তো জন্মদিন গেল। কেমন কাটল দিনটি?

এবারের জন্মদিনটা অনেক সুন্দর কেটেছে। কভিডের পর আমার মনে হয় এত সুন্দর করে জন্মদিনটা কখনো কাটেনি। আমাদের বাসায় থাকে এক ছোট ভাই। সে অনেক ক্রিয়েটিভ। সে আমার জন্মদিনের আনন্দটা বাড়িয়ে দিয়েছে নানারকম চমক দিয়ে। এত সুন্দর করে সাজাইছে! এরপর তো কাজিন, বেস্ট ফ্রেন্ডস, বাবা-মা মিলে জন্মদিনের কেক কেটে পালন করেছি। একটা মজার বিষয় হচ্ছে, আমার কোনো জন্মদিনে বাবা কোনো কাজ রাখেন না, শরীয়তপুরেও যান না। এবারও একই ঘটনা ঘটেছে। শুধু আমার জন্মদিনটা স্পেশাল করে পালন করবেন সে জন্য। বাবা সারা দিন বাসায় থেকেছেন। এর পরদিন আমার খুব কাছের কিছু বন্ধু-বান্ধব এসেছিল বাসায়। আসলে খুবই স্পেশাল ছিল এবারের জন্মদিনটা।

 

তেমন করে নাটক-টেলিছবির কাজে কেন দেখা যাচ্ছে না?

কাজ করতে ভালো লাগে না। কেন লাগে না বলি, আমি কিন্তু ১৬-১৭ বছর বয়স থেকে কাজ করি। অবশ্য প্রথমে কাজ করার কোনো ইচ্ছা ছিল না। পরে একসময় কাজ করতে করতে কাজের প্রতি মায়া লেগে যায়। ভালো লাগা, ভালোবাসা কাজ করে। তখন পড়াশোনা কমপ্লিট করেছি কেবল। লক্ষ্য বলতে তখন তেমন করে কিছুই ছিল না। তবে সবসময় মাথায় ছিল, ভালো কাজ করব। এরপর টুকটাক অ্যাক্টিং শুরু করি ভালো লাগা থেকে। কিন্তু এখন পারিপার্শ্বিক অবস্থা দেখলে কষ্ট লাগে। শুটিং সেটে বাইরে থেকে অনেকেই আসে। চিনি না অনেককেই। এদের কোনো কিছু বলাও যায় না। তাদের টিকটক, ইউটিউব চ্যানেল আছে। শুটিং সেটে কারও অজান্তেই বাজে অ্যাঙ্গেলে মোবাইল-ক্যামেরা ধরে! এরপর তার বাজে হেডিং দিয়ে তাদের ইউটিউব চ্যানেল, রিল, টিকটক আইডিতে ছেড়ে দেয়। এটা তো দন্ডনীয় অপরাধ। প্রাইভেসি নেই কোথাও। এ জন্য কাজ করতে চাই না। ভালো লাগে না।

 

তাহলে সময় কীভাবে কাটে?

মাকে সময় দিই। ঘর গোছাই। মার্কেটে গিয়ে এটা-ওটা কিনি। শরীয়তপুরে যাই মাঝেমধ্যে। আব্বু-আম্মুর সঙ্গে বাইরে খেতে বের হই। মাঝেমধ্যে লাঞ্চ-ডিনার একসঙ্গে করি। কাছের কিছু বন্ধুর সঙ্গে সপ্তাহে এক দিন দেখা করি, আড্ডা, খাওয়া-দাওয়া করি। এই তো কিছুদিন আগে একটা সলোট্রিপ দিয়েছি। এভাবেই ভালো কিছু সময় কাটাচ্ছি। অনেক বাজে সময় পার করেছি। এখন ভালো আছি নিজের মতো করে। আমি এখন অনুভব করি, বেশি উদার হওয়ার দরকার ছিল না। অশিক্ষিত মানুষদের সঙ্গে মেলামেশা করাও উচিত হয়নি। ভালো ও শিক্ষিত ছেলে-মেয়েরা কেন মিডিয়ায় আসে না, তা এখন বুঝেছি। আমি বাজেভাবে ভুক্তভোগী।

 

দুঃসময়ে কাছের বন্ধুরা কি পাশে থেকেছে?

মিডিয়ায় আমার তেমন কোনো বন্ধু নেই। আর কাছের কিছু বন্ধু আছে, তবে সেটা হাতে গোনা কয়েকজন। আমার বন্ধুরা অনেক ভালো। যখন আমি কোনো মোহে পড়ি তখন অনেক কষ্ট দিই ওদের। তবে মোহ থেকে বের হয়ে তাদের কাছে গেলে তারা আমাকে আগলে রাখে, ভরসা দেয়। যেমন- মিডিয়ায় এখন জাহের আলভী ভালো কাজ করে। ওর সঙ্গে কিছু কাজ করেছি। ওর মন-মানসিকতা অনেক ভালো। ওকে যখন বলি এই কাজ করব, এই কাজ করব না-সেটা সে বুঝে। মিসইউজ করে না। নোংরামি মেন্টালিটি ওর মধ্যে নেই। আসলে কাছের মানুষ না হলে দূর থেকে চেনা দায়।

 

এই যে টিকটক, রিল, ইউটিউব চ্যানেলে কাউকে বাজেভাবে প্রেজেন্ট করছে, এটা কি ঠিক?

রুচির যে দুর্ভিক্ষ চলছে, কথাটা তো সত্যি। যেমন- আগে যদি শুটিংয়ে বৃষ্টিতে ভেজা দৃশ্য থাকত তাহলে ফুরফুরে মনে বৃষ্টিতে ভিজতাম। তখন বাইরে থেকে যারা শুটিং দেখতে আসত সবার কাছে কিন্তু ক্যামেরা থাকত না বা মোবাইল। তাই এসব দৃশ্যকে তারা খারাপভাবে উপস্থাপন করার সুযোগ পেত না। একটা কথা বলে রাখি, আমাদের এখানকার শুটিং ক্যামেরাম্যানের ম্যাক্সিমাম ভালো কাজ করেন। তবে বাইরে থেকে শুটিং ইউনিটে অনেকে আসে টিকটক, রিল, ইউটিউব চ্যানেলের জন্য ভিডিও ধারণ করতে। তারা দূর থেকে মোবাইলে বাজেভাবে ধরে ক্যাপচার করে। এরপর ছেড়ে দেয় তাদের নিজস্ব চ্যানেলে বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এটা কিন্তু খারাপ। তারা লুকিয়ে ছবি তোলে। এ কারণে কাজ করা কমিয়ে দিয়েছি। কোনো কিছুকে ভালোভাবে প্রেজেন্ট না করে তারা হেয় করে। যখন থেকে এগুলো দেখেছি, তখন থেকে কাজও কমিয়ে দিয়েছি। এই আমি একসময় কাজের জন্য ফ্যামিলির সঙ্গে ফাইট পর্যন্ত করেছি।  

 

আপনি কি মনে করেন সাংবাদিকদের সঙ্গে অনেকটা দূরত্ব তৈরি হয়েছে?

আমি মনে করি না। আমি সর্বদা সাংবাদিকদের কাছে খুবই কৃতজ্ঞ। যখন মিডিয়ার বাইরের মানুষগুলো আমাকে নিয়ে বিভিন্ন রকম মনগড়া কথা বলে, লিখে-সে সময় এই প্রিয় সাংবাদিক ভাই-বোনেরাই সর্বপ্রথম আমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। তাঁরা আমাকে সবার সামনে ইতিবাচকভাবে প্রেজেন্ট করেছেন। আমি সত্যিই তাঁদের কাছে কৃতজ্ঞ।

 

কী কারণে সবার থেকে দূরে ছিলেন?

এতদিন ভয়ের মধ্য দিয়ে গেছি। কিছু বিষয়ে ভীতি কাজ করছিল।  এখন সেই অবস্থা থেকে উত্তরণ করেছি। এখন কোনো বিষয়ে আশঙ্কা কাজ করে না। তাই স্বস্তিতে রয়েছি। ভালো আছি এখন।

 

ঈদ উপলক্ষে কোনো কাজ করা হয়েছে?

আপডেট দেওয়ার মতো কোনো কাজ নেই।  কাজ তেমন করে করিনি। 

সর্বশেষ খবর