'বুনোহাঁস' নানা কারণে ইতোমধ্যে আলোচনায় এসেছে, এ চলচ্চিত্রে আপনিও অভিনয় করেছেন, অনুভূতির কথা জানতে চাই?
আমি গর্ববোধ করছি, কারণ আজ থেকে প্রায় ২০ বছর আগে সমরেশদার সঙ্গে আলাপ প্রসঙ্গে তিনি আমাকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন তার উপন্যাসের মূল চরিত্রে কাজ করতে হবে। সেটি চলচ্চিত্র বা নাটক যাই হোক। তিনি নিজেও কিন্তু নাটক, টেলিফিল্ম নির্মাণ করেন। বিষয়টি প্রায় চূড়ান্তও হয়ে গিয়েছিল, পত্র-পত্রিকায় সংবাদও প্রকাশ হয়েছিল। পরে নানা ব্যস্ততায় দুজনেরই অনেকগুলো বছর কেটে গেল। কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন আর পূরণ হয়নি। কিন্তু আন্তরিক স্বপ্ন কখনো অধরা থাকে না। হঠাৎ করে প্রস্তাব পেলাম সমরেশদার 'বুনোহাঁস' উপন্যাসের চলচ্চিত্রে গুরুত্বপূর্ণ একটি চরিত্রে কাজ করতে হবে। দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন পূরণ হওয়ায় সত্যিই আমি পুলকিত।
প্রথমবারের মতো বিদেশি কোনো চলচ্চিত্রের শুটিং বাংলাদেশে হলো, কেমন লাগছে?
এ তো এক অসাধারণ ভালো লাগার ব্যাপার। কারণ আমাদের দেশ যে অনেক সুন্দর, সুজলা-সুফলা সোনার বাংলা বলেই কলকাতার চলচ্চিত্রের শুটিং এখানে হয়েছে। আমার বিশ্বাস এ বিষয়টি অনুধাবন করে আগামীতে হলিউড-বলিউডের ছবির শুটিংও এখানে হবে। কারণ এখানে চমৎকার এবং বিশ্বসেরা সব লোকেশন রয়েছে।
'বুনোহাঁস' চলচ্চিত্রে আপনার অভিনীত চরিত্র সম্পর্কে জানতে চাই-
এতে আমি অতিথি চরিত্রে কাজ করেছি। বাংলাদেশি একটি চরিত্র। আমার চরিত্রের নাম হাবিব। আমি দেবের সহযোগী। দেবের চরিত্রের নাম অমল। সে কলকাতার আন্ডার ওয়ার্ল্ভ্রের ছেলে। আর আমি বাংলাদেশের আন্ডার ওয়ার্ল্ডের লোক। অমল ঢাকায় এসে আমার শেল্টারে থাকে। আমি খুবই প্রভাবশালী। তা সত্ত্বেও আমার মধ্যে মানবিক সব গুণই আছে। আমি চাই সবাই যেন দায়িত্ব গ্রহণের ক্ষমতা অর্জন করতে পারে। এই চলচ্চিত্রে আমার চরিত্রের পরিধি কম হলেও গুরুত্ব অনেক বেশি। এ চরিত্রে কাজ করতে পেরে সত্যিই নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছি।
আমাদের চলচ্চিত্র এবং শিল্পীদের সম্পর্কে
কলকাতার মানুষ কতটা জানে?
দুঃখজনক হলেও সত্যি আমাদের চলচ্চিত্র এবং শিল্পীদের সম্পর্কে সেখানকার মানুষ খুব কমই জানে। কারণ আমাদের টিভি চ্যানেল এবং চলচ্চিত্র এখনো সেখানে প্রদর্শন করা সম্ভব হয়নি। অথচ এদেশের মিউজিক, পেইন্টিং, টিভিনাটক, মঞ্চনাটক সম্পর্কে তারা অনেক জানে। কিন্তু তাদের কাছে আমাদের চলচ্চিত্রই অজানা রয়ে গেল। এটি আমাদের বড় ধরনের ব্যর্থতা।
একজন সংস্কৃতিকর্মী ও এফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে এই প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণে আপনার উদ্যোগের কথা জানতে চাই-
আমি তো বরাবরই চাইছি দুই দেশের মধ্যে টিভি চ্যানেল এবং বাংলা চলচ্চিত্রের আদান-প্রদান হোক এবং সেটি সম্মানের সঙ্গে হতে হবে। কিন্তু আমি একা চাইলে তো হবে না। এক্ষেত্রে সবার সহযোগিতা দরকার। সবাই একমত হলে এ সমস্যা অচিরেই মিটে যাবে। এখন উন্মুক্ত বিশ্বায়নের যুগ। এ সময় নিজের ঘরের দরজা-জানালা খোলা রাখতে হবে। এতে বাইরের সুবাতাস আমাদের ঘরে প্রবেশ করবে এবং আমাদের ঘরের আলো বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়বে। কিন্তু দরজা-জানালা বন্ধ করে রাখলে তো নিজেদেরই অন্ধ হয়ে থাকতে হবে।
* শোবিজ প্রতিবেদক