রাজশাহীতে সড়ক প্রশস্ত করতে কাটা হলো আড়াই শতাধিক গাছ। পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ও দরপত্র আহ্বান ছাড়াই এসব গাছ কাটা হয়েছে। বন বিভাগ ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) একে অপরের ওপর দায় চাপালেও গাছ কাটা বন্ধে নেয়নি কোনো উদ্যোগ। চারঘাট উপজেলা প্রকৌশলী রতন কুমার বলেন, হাবিবপুর থেকে বাসুদেবপুর সড়কটি দুই পাশে চার ফুট করে আট ফুট প্রশস্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গাছগুলো বন বিভাগের লাগানো। গাছগুলো অপসারণের বিষয়ে বন বিভাগের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। গাছের ব্যাপারে তারা সিদ্ধান্ত নেবে। সড়কের যে অংশে ফাঁকা পাওয়া গেছে ঠিকাদার সেখানে কাজ শুরু করেছেন। তবে উপজেলা বন কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, গাছগুলো আমাদের নয় এলজিইডির লাগানো। এ বিষয়ে চিঠি পেলেও সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগেই যার যার খেয়াল খুশিমতো কাটা শুরু করেছেন। যারা সড়কের কাজ করবেন তারা কাটতে বলেছে বলে শুনেছি। আড়াই শতাধিক গাছ কেটে নেওয়া হয়েছে। অনেক চেষ্টা করেও বাঁচাতে পারিনি।
উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা যায়, হাবিবপুর থেকে মৌলভাগ বাসুদেবপুর এলাকা পর্যন্ত আঞ্চলিক সড়কটি আগে ছিল ১০ ফুট। সম্প্রতি ১৮ ফুট প্রশস্ত করে নতুন করে কার্পেটিং করার জন্য দরপত্র আহ্বান করে এলজিইডি। সড়ক প্রশস্ত করার জন্য কোনো ধরনের গাছ কাটার অনুমোদন না থাকলেও সড়কের দুই পাশের বড় বড় মেহগনি, কড়ই, আকাশমণিসহ কাঠজাতীয় বিভিন্ন গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। ১৫ এপ্রিল থেকে সড়কের পাশের জমির মালিক ও স্থানীয় প্রভাবশালীরা গাছগুলো কাটা শুরু করেন। গত দুই সপ্তাহে আড়াই শতাধিক গাছ কাটা হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, আড়াই শতাধিক গাছের মধ্যে কিছু গাছের বয়স ছিল ২০ বছরের বেশি। এলজিইডি ও বন বিভাগের দুটি প্রকল্প থেকে গাছগুলো রোপণ করা হয়েছিল। প্রতিটি গাছের বর্তমান বাজার দর ১৫-৩৫ হাজার টাকা। প্রায় অর্ধ কোটি টাকার গাছ কেটে নেওয়া হয়েছে। চারঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, সড়কের গাছের বিষয়ে বন বিভাগের কাছে করা আবেদনের অনুলিপির কপি পেয়েছিলাম। উপজেলা বন বিভাগকে এ বিষয়ে তদন্ত করতে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কাউকে মৌখিক কিংবা লিখিতভাবে গাছ কাটতে অনুমতি দেওয়া হয়নি কিংবা দরপত্রও হয়নি। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।