দেখতে দেখতে বাংলাভিশন ১০ বছরে পদার্পণ করল। চ্যানেলটি সবার নজরও কেড়েছে। যখন শুরু করেছিলেন, তখন স্বপ্নটা কেমন ছিল?
১০ বছর আমাদের জন্য অনেক সময়। আবার এও মনে হয়, দেখতে দেখতে সময়টা চলে গেল। আসলে কোনো প্রতিষ্ঠান বড় হবে কি না, সফল হবে কি না তা নির্ভর করে শুরুটা কীভাবে হচ্ছে তার ওপর। বাংলাভিশনের শুরুটা বেশ জোরেশোরে হয়েছিল। একটা বড় স্বপ্ন থেকে হয়েছিল। আমাদের স্লোগান- দৃষ্টিজুড়ে দেশ। দৃষ্টিজুড়ে একটা সমৃদ্ধ দেশ দেখার স্বপ্ন নিয়ে বাংলাভিশনের যাত্রা শুরু।
আপনি তো মাঝখানে বাংলাভিশন ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। আবার যুক্ত হয়েছেন পাঁচ বছর হয়ে গেল। এখন আপনার লক্ষ্য কী?
সত্যি বলতে কি, আমরা এমন একটা চ্যানেলের স্বপ্ন দেখি যে চ্যানেলটি তরুণদের স্বপ্ন দেখাবে, সুন্দর একটা দেশ গড়ার কথা বলবে। সবার উদ্যোগে একটা সমাজ সুন্দর হয়ে উঠবে। অনেকেই এ লক্ষ্যে কাজ করছেন। লক্ষ্যপানে এগিয়ে যাওয়াই এখন আমাদের লক্ষ্য।
কয়েক বছর ধরে বাংলাভিশন দর্শক জরিপে শীর্ষের দিকে রয়েছে। এর কারণ কী? মূল শক্তিটা কী ছিল?
আমাদের দেশটা ছোট হলেও অনেক মেধাবী মানুষকে আমরা পেয়েছি। আমরা প্রায় সবাইকে বাংলাভিশনের সঙ্গে যুক্ত করতে পেরেছি। আমাদের শক্তি ছিল কয়েকটি নাটক, কয়েকটি অনুষ্ঠান এবং সংবাদ। নাটকের মধ্যে আরমান ভাই, সিকান্দার বক্স, লংমার্চ, রেড সিগন্যাল, ফরমালিন, হাড়কিপটে, অ-এর গল্প, হল্লাবাজি উল্লেখযোগ্য। আর অনুষ্ঠানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য মুনমুনের উপস্থাপনায় 'আমার আমি', সারা যাকের-মেহতাব খানমের উপস্থাপনায় 'আমি এখন কী করব?', আফসানা মিমির উপস্থাপনায় 'মনের কথা', বিপাশা হায়াতের উপস্থাপনায় 'বিপাশার অতিথি', শফিক রেহমানের উপস্থাপনায় 'লাল গোলাপ', মতিউর রহমান চৌধুরীর উপস্থাপনায় 'ফ্রন্ট লাইন', মোস্তফা ফিরোজের উপস্থাপনায় 'গণতন্ত্র এখন', 'প্রবাসী মুখ'। আসলে এ অনুষ্ঠানগুলোই আমাদের শক্তি।
সামনে আর কী কী পরিকল্পনা আছে?
এতদিন আমরা বাংলাভিশনকে প্রয়োজনের চ্যানেল হিসেবে দাঁড় করানোর চেষ্টা করেছি। সামনের সময়টাতে বাংলাভিশনের পর্দায় পরিবারের গুরুত্বটা তুলে ধরার চেষ্টা করব। পরিবার আমাদের জন্য কতটা জরুরি, পরিবারের বন্ধনগুলো কেমন হওয়া উচিত- এর ওপর ভিত্তি করে অনুষ্ঠান সাজানো হবে। পাশাপাশি অন্য আয়োজনগুলো থাকবেই।
এবার আপনার ব্যক্তিগত দিকে আসি। আপনি দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন সহযোগী অধ্যাপক, ইউনিসেফ মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডের একজন জাজ ছিলেন। এদিকে অভিনয়, উপস্থাপনা এবং অনুষ্ঠান পরিচালনাও করছেন নিয়মিত। অনুষ্ঠান-প্রধানের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি এগুলো করা কষ্টকর। এগুলো কি শুধুই ভালোলাগার জায়গা থেকে করছেন?
আমি মনে করি অনুষ্ঠান-প্রধান হিসেবে বাংলাভিশনে আমি যে কাজ করছি তা আমার কোনো কাজে আসবে না। কেউ মনে রাখবে না। বরং শিক্ষকতা, অভিনয় করা, নির্দেশনা দেওয়া কিংবা উপস্থাপনা ভালো হলে এগুলোই মানুষ মনে রাখবে। আর এগুলো করতে আমার ভালোও লাগে।
'অ-এর গল্প' নামে একটি নাটকের উপস্থাপনাও করছেন। এখানে সমাজের ঘটে যাওয়া চিত্র তুলে ধরা হচ্ছে। বেশ জনপ্রিয়ও হয়েছে। এটা কতদিন চলবে?
আমরা বাংলাভিশনকে দর্শকের প্রয়োজনের চ্যানেল হিসেবে দাঁড় করাতে চেয়েছি। তার একটি পদক্ষেপ হিসেবেই 'অ-এর গল্প' করা। আমরা বেশ ভাগ্যবান। আমাদের প্রায় সব এঙ্পেরিমেন্টই দর্শক গ্রহণ করেছেন। দর্শকের প্রতি আমাদের আন্তরিক কৃতজ্ঞতা রইল। 'অ-এর গল্প' আর মাস দুয়েক চলবে।
শোবিজ প্রতিবেদক