সম্প্রতি হিমালয় পর্বতমালার একটা ছোট পর্বত চূড়ার নাম দেয়া হয়েছে ‘হাউলি শৃঙ্গ’। হিমালয়ে পর্বতারোহণ নিয়ে কাজ করা মার্কিন বংশোদ্ভূত সাংবাদিক এলিজাবেথ হাউলির কাজের প্রতি সম্মান দেখাতেই এ সিদ্ধান্ত নেয় নেপাল সরকার।
১৯৬০ সালে প্রখ্যাত টাইমস সাময়িকীর সাংবাদিকের চাকরি নিয়ে নেপাল সফর করে এলিজাবেথ হাউলি। সেই সুবাদে কাঠমান্ডুতে বসবাস শুরুর পর থেকেই বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টসহ হিমালয়ের অন্যান্য শৃঙ্গে পর্বতারোহণের নানা খুঁটিনাটি নথিভুক্ত করতে শুরু করেন এই মার্কিন নারী। প্রথমদিকে কেবলই ভালো লাগা থেকে কাজ শুরু করলেও ধীরে ধীরে গুরুত্ব বাড়তে থাকে তাঁর কাজের।
কয়েক দশকের অধ্যবসায়ে গড়ে ওঠা হাউলির নথিপত্র এখন নেপালসহ বহির্বিশ্বের অনেকের কাছেই ‘হিমালয় ডেটাবেজ’ বা ‘হিমালয় তথ্যভান্ডার’ হিসেবে পরিচিত। এই তথ্যভান্ডারের কোনো আনুষ্ঠানিক সরকারি স্বীকৃতি না থাকলেও বিশ্বজুড়ে পর্বতারোহীরা হাউলির তথ্যভান্ডারের সহায়তা নিয়ে থাকেন। পর্বতারোহীসহ সংশ্লিষ্ট সবার কাছে এই কাজের জন্য প্রশংসিত এবং অত্যন্ত শ্রদ্ধাভাজন হিসেবে পরিচিত এলিজাবেথ হাউলি।
নেপাল মাউন্টেনিয়ারিং অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট আং শেরিং শেরপা এ প্রসঙ্গে বলেন, তিব্বত সীমান্তের কাছে নেপালের হুমলা জেলায় অবস্থিত ২০ হাজার ৩২৮ ফুট উচ্চতার শৃঙ্গটির নাম ‘হাউলি শৃঙ্গ’ করা হয়েছে। পাশাপাশি এখন থেকে স্থানীয়দের পাশাপাশি বিদেশিরাও ওই শৃঙ্গে পর্বতারোহণ করতে পারবেন বলেও জানান তিনি।
নেপালের পর্যটন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা দীপেন্দ্র পোড়েল বলেছেন, ‘নেপালে পর্বতারোহণের কর্মকাণ্ডে তাঁর (এলিজাবেথ হাউলির) অবদানের স্বীকৃতি দিয়ে তাঁকে সম্মান দেখাতেই এই নামকরণ করেছি আমরা।’
কিন্তু এই সিদ্ধান্তে অভিভূত হননি মার্কিন নাগরিক এলিজাবেথ হাউলি। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় রয়টার্সকে তিনি বলেছেন, ‘আমি মনে করি ব্যক্তির নামে পর্বতের নামকরণ করা ঠিক নয়। ওদের স্থানীয় নামই থাকা উচিত।’
এ বছরের শুরুর দিকে এভারেস্ট অঞ্চলের দুটো পর্বতশৃঙ্গেরও নতুন নামকরণ করে নেপাল। ১৯৫৩ সালে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ বিজয়ী নিউজিল্যান্ডের স্যার এডমুন্ড হিলারি এবং নেপালের তেনজিং নরগে শেরপার নামে ওই দুটো পর্বতশৃঙ্গের নাম রাখা হয়। নেপালে বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টসহ ১ হাজার ৩০০টিরও বেশি পর্বতশৃঙ্গ রয়েছে। এর মধ্যে ৪১৪টি শৃঙ্গে পর্বতারোহণের সুযোগ পান আরোহীরা।