৩ জুন, ২০২১ ১৩:১১

ওয়াইল্ডলাইফ ওয়াচ : বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে আধুনিক প্রযুক্তি

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

ওয়াইল্ডলাইফ ওয়াচ : বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে আধুনিক প্রযুক্তি

দিগন্ত বিস্তৃত সবুজ অরণ্য আর প্রাণের অস্তিত্ব আমাদের পৃথিবীকে মহাবিশ্বের অন্য গ্রহ থেকে আলাদা করেছে। সৃষ্টির সূচনালগ্ন থেকেই প্রাণী আর অরণ্যের মাঝে রয়েছে এক নিবিড় ও অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক। বন্যপ্রাণীর উপস্থিতি ছাড়া আমাদের বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য রক্ষা কখনই সম্ভব নয়। বণ্য প্রাণীদের অস্তিত্ব রক্ষায় ও তাদের বিকাশে যথার্থ বনের পরিবেশ বা বিচরণক্ষেত্র প্রয়োজন। নানা রকম সচেতনতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণের পরেও দেখা যায় যে, কিছু বিবেকহীন মানুষ নিজের সামান্য স্বার্থসিদ্ধির জন্য বন্য প্রাণী হত্যা এবং বন উচ্ছেদের নেশায় মেতে উঠে। বৈশ্বিক মহামারির ফলে ভ্রমণপিয়াসুদের আনাগোনা কমে যাওয়ায় এসব অবৈধ শিকারিরা এই সুযোগে তাদের স্বার্থ হাসিল করছে। 

পৃথিবীর বুকে সভ্যতা ও প্রযুক্তির ক্রমবিকাশের সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে সবুজ প্রকৃতি ও বন্য প্রাণীর অস্তিত্ব সঙ্কট। কিন্তু এই প্রযুক্তি দিয়েই যে বন্য প্রাণী সংরক্ষণ সম্ভব, তা সবার সামনে তুলে ধরেছে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান স্যামসাং। 

ওয়াইল্ডলাইফ ওয়াচ স্যামসাংয়ের নতুন পরীক্ষামূলক প্রকল্প, যেখানে অবৈধ শিকারিদের হাত থেকে বন্য প্রাণীদের জীবন বাঁচাতে ব্যবহার করা হয় আধুনিক প্রযুক্তি। এর মাধ্যমে যে কেউ পৃথিবীর যেকোন প্রান্ত থেকে ভার্চুয়াল রেঞ্জার হয়ে লাইভে বন্যপ্রাণীদের ওপর নজর রাখতে পারবে। 

বন্যপ্রাণীর অস্তিত্ব রক্ষার্থে আফ্রিকার অন্যতম প্রতিষ্ঠান আফ্রিকামের সাথে যুক্ত হয়েছে স্যামসাং। ওয়াইল্ডলাইফ ওয়াচে স্যামসাং গ্যালাক্সি এস২০ ফ্যান এডিশন (এফই) হ্যান্ডসেটের প্রো-গ্রেড ক্যামেরা ‘সার্ভেলিয়েন্স সিস্টেম’ তৈরি করতে ব্যবহার করা হয়। দক্ষিণ আফ্রিকার গ্রেটার ক্রুগার ন্যাশনাল পার্কের অংশ বালিউল নেচার রিজার্ভ থেকে হ্যান্ডসেটের মাধ্যমে ধারণ করা লাইভ ২৪/৭ স্ট্রিম করা হয়। সারা বিশ্বকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল ঘরে বসে বিপন্ন প্রাণীদের তাদের প্রাকৃতিক আবাসস্থলে পর্যবেক্ষণ করার মাধ্যমে তাদের নিরাপত্তা রক্ষায় ভূমিকা পালনের জন্য। এসব প্রাণীর মধ্যে ছিল সিংহ, হাতি, জিরাফ, হায়েনা আর জলহস্তী। দুই মাস যাবত চলা লাইভটি প্রায় ২০০ দেশের ১৯০,০০০ এর বেশি ভার্চুয়াল রেঞ্জার ১২০ ঘণ্টারও বেশি সময় দেখে। 

লাইভ ধারণের জন্য ক্যামেরা হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল চারটি স্যামসাং গ্যালাক্সি এস২০ এফই হ্যান্ডসেট, যার একটি ক্যামোফ্লাজ জিপের সাথে সংযুক্ত ছিল এবং এখনো রেঞ্জাররা তাদের নজরদারি কাজে ব্যবহার করছে। ওয়াইল্ডলাইফ ওয়াচ দ্য ব্ল্যাক মাম্বাস অ্যান্টি-পোচিং ইউনিটের কাজে সহযোগিতা করেছিল। নারীর সমন্বয়ে গঠিত এই ইউনিটটি চোরাশিকারি প্রতিরোধে অহিংস পদ্ধতি ব্যবহার করে। লাইভ স্ট্রিম দেখার সময় ভার্চুয়াল রেঞ্জাররা যদি কোন প্রাণীকে বিপদে বা চোরাশিকারির কবলে পড়তে দেখে, তবে তারা ব্ল্যাক মাম্বাসকে সতর্ক করতে সক্ষম হয়েছিল। যেমন, একবার ভার্চুয়াল রেঞ্জারদের থেকে এমন খবর পেয়ে কুয়োয় পড়ে যাওয়া এক ইম্পালাকে উদ্ধার করা হয়েছিল। 

সামাজিক ও পরিবেশগত যেকোন সমস্যা সমাধানে সরকারের পাশাপাশি এগিয়ে আসতে হবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকেও। এক্ষেত্রেও ভূমিকা রাখছে দক্ষিণ কোরীয় প্রতিষ্ঠান স্যামসাং। স্যামসাংয়ের গ্যালাক্সি আপসাইক্লিং প্রোগ্রামের লক্ষ্য সামাজিক সমস্যাগুলোর সমাধান করা, দীর্ঘস্থায়ী পণ্য তৈরি এবং তাদের হ্যান্ডসেটগুলোকে নতুনভাবে কাজে লাগিয়ে পরিবেশ দূষণ রোধে বর্জ্য হ্রাস করা। বর্জ্য হ্রাসের সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হচ্ছে বিদ্যমান পণ্যগুলোকে ভিন্ন আঙ্গিকে ব্যবহার করে নতুন পণ্য তৈরির প্রয়োজনীয়তা ও এ সংশ্লিষ্ট দূষণ রোধ করা। ওয়াইল্ডলাইফ ওয়াচে লাইভ স্ট্রিম ধারণের পাশাপাশি স্যামসাংয়ের হ্যান্ডসেটগুলো সিসিটিভি ক্যামেরা হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে রেঞ্জারদের মূল্যবান সহায়তা প্রদান করেছিল এবং রেঞ্জারদের প্রতিদিনের কাজে এই সহায়তা অব্যাহত রাখে। 

যেকোন সেটিংয়ে ঝকঝকে ছবি তোলার জন্য জুড়ি নেই স্যামসাং গ্যালাক্সি এস২০ এফই হ্যান্ডসেটটির। এর উচ্চ পিক্সেল, ৩০ গুণ স্পেস জুম ও ৩ গুণ অপটিক্যাল জুমবিশিষ্ট এআই ক্যামেরা ঝোপের কম আলোতেও ব্ল্যাক মাম্বাসকে বেআইনি কার্যকলাপের তদন্তের প্রমাণ হিসেবে উন্নতমানের ছবি তুলতে সহায়তা করেছে। এতে তারা দ্রুত যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পেরেছে। 

২০১৮ সালের এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, গত ৪০ বছরে আমরা ৬০ শতাংশ জীবকুলকে চিরতরে হারিয়ে ফেলেছি। প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার্থে ও ধরিত্রীকে বাঁচাতে সকলের অগ্রণী ভূমিকা পালন করা প্রয়োজন। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায়ও এ বিষয়ে বিশেষ জোর দেয়া হয়েছে। ওয়াইল্ডলাইফ ওয়াচ প্রযুক্তি ব্যবহার করে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বিশ্বাসী এবং সদা তৎপর। 

বিডি প্রতিদিন/ মজুমদার 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর