রবিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

এলেন দেখলেন জয় করলেন

নিজস্ব প্রতিবেদক

এলেন দেখলেন জয় করলেন

বিমানবন্দরে শি জিনপিংকে বিদায় জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

তিনি এলেন, দেখলেন, জয় করলেন। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সফর মূল্যায়ন করতে গিয়ে এমনটাই বলেছেন বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, এ সফরে বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। দুই দেশের সম্পর্ক জোরদারের পাশাপাশি চীনা প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি এসেছে বড় প্রকল্পে সহায়তা বাড়ানোর। একই সঙ্গে চীনের প্রেসিডেন্টের উদ্যোগ এক অঞ্চল, এক পথে যুক্ত হওয়াটা বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত সহায়ক হবে। ২০১৭ সালকে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে ‘বন্ধুত্ব ও আদান-প্রদানের বছর’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এ সফরে ২৭টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে দুই দেশের মধ্যে। উদ্বোধন করা হয়েছে ছয় প্রকল্পের। এ ছাড়া এদিকে দুই দেশের কর্মকর্তাদের তথ্যানুযায়ী চীন বাংলাদেশকে প্রায় ২৪ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের অর্থায়ন করতে সম্মত হয়েছে। চীনা প্রেসিডেন্টের সফরে এ বিপুল বিনিয়োগকে রেকর্ড বলেছেন অর্থনীতিবিদরা। শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে ঢাকায় পৌঁছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। পরে ২২ ঘণ্টার এই ঝটিকা সফর শেষে গতকাল সকাল সোয়া ১০টার দিকে ভারতের উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। এ ছাড়া শুক্রবার চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এসব চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এর আগে দুই নেতা একান্ত বৈঠক করেন এবং দুই দেশের প্রতিনিধি দল দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নেয়। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সহযোগিতা এগিয়ে নিতে তাদের মধ্য ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। শি জিনপিং বলেন, ‘আমরা চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ককে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা ও অংশীদারিত্বের জায়গা থেকে কৌশলগত সহযোগিতা ও অংশীদারিত্বের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে একমত হয়েছি।’ ‘ওয়ান বেল্ট, ওয়ান রোড’ নীতি ধরে এগিয়ে যাওয়া চীনের সহযোগিতা সম্প্রসারণের অংশ হিসেবে শি জিনপিংয়ের এই ঢাকা সফর। ১৯৮৬ সালে লি শিয়ানইয়ানের পর বাংলাদেশে আসা প্রথম চীনা রাষ্ট্রপ্রধান তিনি। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীনের রাষ্ট্রপ্রধানের সফরকে সম্পর্কের ‘নতুন যুগের সূচনা’ বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

২৭ চুক্তি ও সমঝোতা : উপকূলীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, কর্ণফুলী টানেল নির্মাণসহ অবকাঠামো উন্নয়ন ও সহযোগিতার বিভিন্ন ক্ষেত্রে ২৭টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকে সই করেছে বাংলাদেশ ও চীন। এর মধ্যে ১২টি ঋণ ও দ্বিপক্ষীয় চুক্তি এবং দুই দেশের সরকারের মধ্যে ১৫টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক বলে পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক জানান। ঋণচুক্তির সুনির্দিষ্ট আর্থিক পরিমাণ জানতে কয়েক দিন লাগবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব। জানা গেছে, যেসব চুক্তি সই হয়েছে তার মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের ১০টি রয়েছে। এর মধ্যে ৪টি এমওইউ, ২টি ফ্রেমওয়ার্ক অ্যাগ্রিমেন্ট ও বাকি ৪টি ঋণচুক্তি। অন্যান্যের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ, বিদ্যুৎ-জ্বালানি, যোগাযোগ, টেলিকমিউনিকেশন মন্ত্রণালয়ের পৃথক চুক্তি রয়েছে।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ২৭টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকে প্রতিশ্রুত অর্থের পরিমাণ প্রায় ২ হাজার ৪০০ কোটি ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ৭৯ টাকা ধরে) প্রায় ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। আগামী পাঁচ বছরে এ আর্থিক সহায়তা দেবে চীন। প্রাথমিকভাবে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, ২৭টি চুক্তি ও সমঝোতার মধ্যে রয়েছে : বিনিয়োগ ও উৎপাদনসক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতা চুক্তি, যার আওতায় ২৮টি উন্নয়ন প্রকল্পে ২১.৫ বিলিয়ন ডলারের বিদেশি সাহায্যের কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া ৮ কোটি ৩০ লাখ ডলার অনুদানের জন্য অর্থনৈতিক ও কারিগরি সহযোগিতা চুক্তি, কর্ণফুলী টানেল নির্মাণে ৭০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি, দাশেরকান্দি পয়ঃনিষ্কাশন ট্রিটমেন্ট প্লান্ট প্রকল্পের জন্য ২৮ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি ও ৬টি জাহাজ সম্পর্কিত মোট ৪টি ঋণচুক্তি। কর্ণফুলী টানেল নির্মাণ ও দাশেরকান্দিতে ট্রিটমেন্ট প্লান্ট নির্মাণে ২টি কাঠামো চুক্তি হয়েছে দুই দেশের মধ্যে। এ ছাড়া চীনের ‘ওয়ান বেল্ট, ওয়ান রোড’ উদ্যোগে সহযোগিতা, মেরিটাইম কো-অপারেশন, মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল গঠনের সম্ভাব্যতা যাচাই, আইসিটিতে নতুন ফ্রেমওয়ার্ক, সন্ত্রাস দমনে সহযোগিতা, ক্যাপাসিটি বিল্ডিং ও তথ্য আদান-প্রদান, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলা, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সহযোগিতার লক্ষ্যে সমঝোতা স্মারক হয়েছে। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগ বাড়াতে চায় চীন। এ লক্ষ্যে ‘স্ট্রেনদেনিং ইনভেস্টমেন্ট ও প্রোডাকশন ক্যাপাসিটি কো-অপারেশনের’ আওতায় বাংলাদেশের ২৮ প্রকল্পে অর্থায়ন করবে দেশটি। অবকাঠামো খাতের উন্নয়নে নেওয়া এসব প্রকল্পে প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ২০০ কোটি ডলার (২২ বিলিয়ন ডলার)। উল্লেখযোগ্য প্রকল্পগুলো হলো : পদ্মা সেতুতে রেলব্রিজ ৫৩০ কোটি ডলার, ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ১৩৯ কোটি ডলার, ঢাকা-সিলেট চার লেন ১৬০ কোটি ডলার, বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে পাওয়ার সিস্টেম নেটওয়ার্ক কর্মসূচি ১০৪ কোটি ডলার, আখাউড়া থেকে সিলেট পর্যন্ত ডুয়েল গেজ রেললাইন নির্মাণ ১৭৬ কোটি ডলার ইত্যাদি। শুক্রবার আরও যেসব চুক্তি সই হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে : কর্ণফুলী টানেল, দাশেরকান্দি স্যুয়ারেজ প্লান্ট ও ৬টি জাহাজ ক্রয়সংক্রান্ত। এসব প্রকল্পে মোট ১১৬ কোটি ডলার দেবে চীন। এ ছাড়া দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মোকাবিলা ও ৩টি সেতু নির্মাণে ৫০ কোটি ডলার দেবে চীন। পায়রা সমুদ্রবন্দরের কাছে ১৯০ কোটি ডলার ব্যয়ে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে অর্থায়ন করতে সম্মত হয়েছে চীন। এ ছাড়া তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদে নেওয়া কর্মসূচিতে অর্থায়ন করবে চীন। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের অবকাঠামো খাত উন্নয়নে ২৪ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দেবে চীন। এ ছাড়া চীনা ব্যবসায়ীদের ৮৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলও ঢাকায় এসেছিল। হোটেল সোনারগাঁওয়ে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে তাদের বৈঠকে ১৩ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারের ১৯টি চুক্তি হয়েছে। এ চুক্তির সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে এফবিসিসিআই সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ জানিয়েছেন।

৬ প্রকল্প : ৬টি প্রকল্পের ফলক উন্মোচন করেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। এগুলো হলো : চট্টগ্রামের কর্ণফুলী মাল্টিলেইন টানেল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট, গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বাংলাদেশ ফোর টায়ার ন্যাশনাল ডেটা সেন্টার, ফেঞ্চুগঞ্জে শাহজালাল ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড, পটুয়াখালীর পায়রায় ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ও চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র। এ সফরের বিষয়ে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেছেন, চীনের এসব ঋণ একটু যাচাই-বাছাই করে কাজে লাগাতে হবে। তাদের ঋণে গ্রেস পিরিয়ড ও সুদের হার কেমন তাও দেখতে হবে। তবে চীনা প্রেসিডেন্টের এ সফর বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক। চীন যেসব প্রকল্পে অর্থায়ন করছে তার বেশির ভাগই ভৌত অবকাঠামো খাতের, ফলে এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের ওপর নির্ভর করছে ভালো-মন্দ। আর দেশটির সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে হলে সেখানে রপ্তানি কীভাবে বাড়ানো যায় সেদিকে নজর দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদেরই বেশি দায়িত্ব নিতে হবে বলে মনে করেন তিনি। আরেক বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, চীনা প্রেসিডেন্টের ঢাকা সফর, ঋণ ও সমঝোতা স্মারক চুক্তি এক বিষয় আর বাণিজ্য ঘাটতি অন্য বিষয়। কেননা চুক্তিগুলোর বেশির ভাগই অবকাঠামো খাতের। ফলে এখানে বাণিজ্য ঘাটতির বিষয়টা তেমন বিবেচ্য হবে না। কিন্তু চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর জন্য সরকারের উচিত হবে সেখানে রপ্তানি বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া।

চীনের ‘ওয়ান বেল্ট, ওয়ান রোডে’ বাংলাদেশ : চীনের ‘ওয়ান বেল্ট, ওয়ান রোড’ উদ্যোগে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দিল বাংলাদেশ, যা ছিল প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের ঢাকা সফরের মনোযোগের কেন্দ্র। শুক্রবার চীনের প্রেসিডেন্ট ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বৈঠকের পর স্বাক্ষরিত চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকগুলোর মধ্যে চীনের এ উদ্যোগ নিয়ে একটি সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার কথা বলা হয়েছে ওই বৈঠকের পর আসা যুক্ত বিবৃতিতে। এ ছাড়া ২০১৭ সালকে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে ‘বন্ধুত্ব ও আদান-প্রদানের বছর’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ ও এর উন্নয়নে একযোগে কাজ করতেও সম্মত হয়েছে দুই পক্ষ। ড্রেজিং, ভূমি পুনরুদ্ধারসহ নদী ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতা চালিয়ে যাওয়ার বিষয়েও একমত হন তারা। এ ছাড়া চীন-বাংলাদেশ মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল প্রতিষ্ঠার সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শুরু করবে উভয় পক্ষ। বাংলাদেশে অর্থনৈতিক জোন ও শিল্পাঞ্চল প্রতিষ্ঠায় বিনিয়োগে দক্ষ চীনা উদ্যোক্তাদের উৎসাহ ও সহযোগিতা দেবে চীন। চীনা উদ্যোক্তারা যাতে বাংলাদেশে ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারেন সেজন্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে ঢাকা। চীন-বাংলাদেশের ‘সর্বাত্মক অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতা’র সম্পর্ককে ‘কৌশলগত অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতার’ জায়গায় নিয়ে যেতেও সম্মত হয়েছেন তারা। আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়েও সহযোগিতার মতৈক্য হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চীনের ‘ওয়ান বেল্ট, ওয়ান রোড’ উদ্যোগকে ইতিবাচকভাবে দেখছে বাংলাদেশ। ২০২১ সালের মধ্যে মধ্য আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত দেশের কাতারে পৌঁছানোর যে লক্ষ্য বাংলাদেশের রয়েছে তা অর্জনে এটা ‘গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ’ নিয়ে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। ২০১৩ সালে চীনের ‘ওয়ান বেল্ট, ওয়ান রোড’ উদ্যোগ তুলে ধরেন চীনের প্রেসিডেন্ট। এর পর থেকে এ উদ্যোগ ঘিরেই চলছে দেশটির অর্থনৈতিক কূটনীতি। এ উদ্যোগ শুরুর পর থেকে বিদেশে অবকাঠামো প্রকল্পে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করে আসছে চীন। সব ধরনের সন্ত্রাসবাদের নিন্দা জানিয়েছে উভয় দেশ। সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশের পদক্ষেপ এবং জাতীয় নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় সরকারের উদ্যোগে সমর্থন জানিয়েছে চীন। এ ক্ষেত্রে তথ্যবিনিময়, সক্ষমতা বৃদ্ধি ও বাংলাদেশিদের প্রশিক্ষণে সহযোগিতায় প্রস্তুত বলে জানিয়েছে চীন। সন্ত্রাস দমন নিয়ে সংলাপ অনুষ্ঠানের সম্ভাব্যতা খতিয়ে দেখতে উভয় পক্ষ সম্মত হয়েছে, বলা হয়েছে যুক্ত বিবৃতিতে। দুই দেশের জনগণের কল্যাণে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির অভিন্ন লক্ষ্য অর্জনে একসঙ্গে কাজ করতে রাজি হয়েছে চীন ও বাংলাদেশ। এ অঞ্চলের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতেও কাজ করবে দুই দেশ। অভিন্ন আকাঙ্ক্ষা ও দুই দেশের মধ্যকার সহযোগিতার উজ্জ্বল ভবিষ্যতের ওপর ভিত্তি করে উভয় পক্ষ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে কৌশলগত অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতায় উন্নীতে সম্মত হয়েছে, বলা হয়েছে দুই নেতার যুক্ত বিবৃতিতে। এদিকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সমতা ও উভয় পক্ষের স্বার্থ রক্ষার ভিত্তিতে বিদ্যুৎ, আইসিটি, নদী ব্যবস্থাপনা, অবকাঠামোসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের ২২টি প্রকল্পে সহযোগিতার প্রস্তাবের বিষয়ে বিবেচনা ও চীনা উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করতে রাজি হয়েছে চীন। উৎপাদনসক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতা বাড়াতে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি হওয়ায় দুই পক্ষই সন্তোষ প্রকাশ করেছে। সমুদ্র সম্পর্কিত বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার ব্যাপক ক্ষেত্র রয়েছে বলে দুই পক্ষই মনে করে; এ লক্ষ্যে সমুদ্র সম্পর্কিত বিষয়ে সহযোগিতার কৌশল নির্ধারণে সংলাপের বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছে দুই দেশ। জনপ্রশাসন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, কৃষি, স্বাস্থ্যসেবা, শিল্পকলার বিভিন্ন বিষয়সহ নানা ক্ষেত্রের বাংলাদেশি পেশাজীবীদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া এবং পেশাজীবীরা যাতে বাংলাদেশেও এ ধরনের প্রশিক্ষণ নিতে পারেন সে বিষয়ে সহযোগিতা করতে রাজি হয়েছে চীন। বাংলাদেশের জন?্য চীনাভাষী ৫০০ শিক্ষককে প্রশিক্ষণের পাশাপাশি ১০০ বাংলাদেশি সাংস্কৃতিক কর্মীকে প্রশিক্ষণ দেবে বেইজিং। এ ছাড়া ২০১৬ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ৬০০ বাংলাদেশি ছাত্রকে তাদের দেশ সফরের আমন্ত্রণ জানাবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর