রবিবার, ৫ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা
কাল ১৮ উপজেলায় ভোট

লড়বে আওয়ামী লীগ বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগামীকাল ১৮ উপজেলায় ভোট। এবার প্রথম উপজেলা পরিষদের সব পদে দলীয় প্রতীকে ভোট হচ্ছে। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ অন্যান্য দলের প্রার্থী। তবে এ নির্বাচনে দেশের দুটি বড় দলের প্রতীক নৌকা ও ধানের শীষের প্রার্থীর মধ্যে চূড়ান্ত লড়াই হবে বলে মনে করছেন নির্বাচন বিশ্লেষকরা।

এদিকে উপজেলা নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গতকাল মধ্য রাতে শেষ হয়েছে নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা। আজ কঠোর নিরাপত্তার মাধ্যমে ভোটকেন্দ্রে ব্যালট পেপারসহ নির্বাচনী মালামাল পাঠানো হবে। কাল সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণ চলবে।  নির্বাচনী এলাকায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে ভোটের দুই দিন আগে তথা গতকাল থেকে মাঠে নামছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তারা ভোটের পরের দিন পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় মাঠে থাকবে। এ ছাড়া সুষ্ঠু ভোটগ্রহণের নির্দেশনা দিতে সিইসিসহ অন্য নির্বাচন কমিশনাররা বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকায় সফরও করেছেন। ইসি সচিবালয় জানিয়েছে, চার দিনের জন্য মাঠে নেমেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। নির্বাচনী এলাকায় টহল শুরু করেছে বিজিবি ও র‌্যাব সদস্যরা। এ ছাড়া নির্বাচন মনিটরিংয়ের জন্য আইনশৃঙ্খলা সমন্বয় সেল গঠন করেছে ইসি। ভোটের দিন ইসি সচিবালয়ে এই টিম কাজ করবে। তারা নির্বাচন কমিশনকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করবে। ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছে, যে সব উপজেলায় উপনির্বাচন আছে, সেগুলোতে দুজন এক্সিকিউটিভ ও একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে। এ ছাড়া তিন উপজেলার সাধারণ নির্বাচনে প্রত্যেক উপজেলার জন্য চারজন এক্সিকিউটিভ ও একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে। অন্যদিকে সাধারণ ভোটকেন্দ্রের জন্য ১৫ জন এবং গুরুত্বপূর্ণ ভোটকেন্দ্রের জন্য ১৬ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত থাকবে। দল ভিত্তিক এ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ অন্যান্য দলের প্রার্থীরা অংশ নিচ্ছেন। গতকাল শেষ নির্বাচনী প্রচারণা ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন প্রার্থীরা। উপজেলা পরিষদের তিন পদে দলীয় নির্বাচন হওয়ায় নিজ নিজ দলের বিজয়ী নিশ্চিত করতে ঘাম ঝরাতে হচ্ছে প্রার্থীদের। নতুন নির্বাচন কমিশন নিয়ে সমালোচনা করলেও দলভিত্তিক প্রথম উপজেলা নির্বাচনে নিয়েছে বিএনপি। এতে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বটাও যেন বেড়ে গেছে। নিজেদের নিরপেক্ষতা প্রমাণ করতে নির্বাচনে বাড়তি নজর দিতে হচ্ছে নতুন ইসিকে। নির্বাচন বিশ্লেষকরা বলছেন, নতুন ইসির অধীনে দলীয় এ নির্বাচন কতটা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয় তাও নির্ভর করছে ইসির কঠোর অবস্থানের ওপরে। তারা বলছেন—বিগত ইসির সময় অনুষ্ঠিত উপজেলা-পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে নানা বিতর্ক থাকায় সাধারণ মানুষের মধ্যে ভোট নিয়ে হতাশা সৃষ্টি হয়েছে। তাই বিগত ইসির দুর্নাম ঘুচিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান নতুন ইসির জন্য চ্যালেঞ্জ। তাই এটা তাদের সামনে নির্বাচনী পরীক্ষা। দলীয় উপজেলা নির্বাচনে নিজেদের নিরপেক্ষতা রাখাতেও পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হবে তাদের। তবে নতুন ইসি কেমন হবে আগামী ৬ মার্চের উপজেলা নির্বাচনের পরেই বোঝা যাবে। ইসি সচিবালয় জানিয়েছে, কে এম নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন ইসির অধীনে কাল ৬ মার্চ ভোট হবে ১৮ উপজেলায়। এ ছাড়া চার পৌরসভায় উপনির্বাচন রয়েছে। এ উপজেলার ভোটে চেয়ারম্যান, ভাইস  চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদেই দলীয় প্রতীকে ভোট হবে। ইসির কর্মকর্তারা বলেছেন, দলীয় এ উপজেলা নির্বাচনে তিনটি পদেই আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ অন্যান্য দলের প্রার্থী রয়েছেন। স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনে তিনটি পদেই দলীয় থাকছে। এ কারণে প্রতিদ্বন্দ্বীপূর্ণ নির্বাচন হবে। সুষ্ঠু ভোটের লক্ষ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি চলছে। ইসি সচিবালয় জানিয়েছে, সিলেটের ওসমানী নগর, খাগড়াছড়ির গুইমারা ও সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় তিন পদে (সাধারণ নির্বাচন) ভোট হচ্ছে। এ ছাড়া চেয়ারম্যান পদে ভোট হচ্ছে কুড়িগ্রাম সদর, পাবনার সুজানগর, বরিশালের বানারীপাড়া, গৌরনদী, ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া, পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী, কুমিল্লার আদর্শ সদর, নাটোরের বড়াইগ্রাম, কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে। এ ছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম, নীলফামারীর জলঢাকা, সাতক্ষীরার কলারোয়া ও বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে পাবনার ঈশ্বরদী, কুমিল্লার সদর দক্ষিণে ভোট হবে। একই দিনে গলাচিপা পৌরসভায় (পটুয়াখালী) মেয়র পদে উপনির্বাচন ও তিন পৌরসভার তিন ওয়ার্ডে কাউন্সিলর উপনির্বাচন হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর