বুধবার, ১৭ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

নির্যাতিত নারীর জবানবন্দি নেবেন শুধু নারী হাকিম

নিজস্ব প্রতিবেদক

সংঘটিত অপরাধের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের স্বার্থে ধর্ষণ, যৌন নির্যাতনের শিকার নারী বা শিশুদের জবানবন্দি নেওয়ার দায়িত্ব নারী ম্যাজিস্ট্রেটকে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। গতকাল প্রধান বিচারপতির নির্দেশে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. জাকির হোসেন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটদের প্রতি এ নির্দেশনা পাঠান। সুপ্রিম কোর্টের হাই কোর্ট বিভাগের স্পেশাল অফিসার ব্যারিস্টার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের হাই কোর্ট বিভাগের বিশেষ কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল কমিটি ফর জুডিশিয়াল রিফর্মস সভার সিদ্ধান্ত মাননীয় প্রধান বিচারপতির কাছে উপস্থাপন করলে প্রধান বিচারপতি সেটি অনুমোদন করার পর সোমবার সার্কুলার হিসেবে জারি করেছেন সুপ্রিম কোর্টের মাননীয় রেজিস্ট্রার জেনারেল।’

সার্কুলারে বলা হয়েছে, ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০-এ বর্ণিত অপরাধ সংঘটনে ওয়াকিবহাল ব্যক্তির জবানবন্দি উক্ত আইনের ২২ ধারা অনুযায়ী লিপিবদ্ধ করা হয়। অপরাধের তদন্ত ও বিচারের স্বার্থে লিপিবদ্ধকৃত উক্ত জবানবন্দি অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে। বর্তমানে বেশ কিছু ক্ষেত্রে ধর্ষণ বা যৌন নির্যাতনের শিকার নারী বা শিশুদের জবানবন্দি পুরুষ ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক নেওয়ার বিষয়টি ‘‘স্পেশাল কমিটি ফর জুডিশিয়াল রিফর্মস’’ জানতে পেরেছে বলে সার্কুলারে বলা হয়।’ সার্কুলারে আরও বলা হয়, ‘একজন পুরুষ ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট নারী বা শিশু ভিকটিম ধর্ষণ বা যৌন নির্যাতনের বর্ণনা দিতে সংকোচ বোধ করেন। ফলে এরূপ নির্যাতনের শিকার শিশু বা নারী ঘটনার প্রকৃত বিবরণ দিতে অনেক সময় ইতস্তত বোধ করেন। এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য ধর্ষণ বা যৌন নির্যাতনের শিকার নারী বা শিশুদের জবানবন্দি একজন নারী ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক লিপিবদ্ধ করা আবশ্যক। এ অবস্থায় সংঘটিত অপরাধের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের স্বার্থে ধর্ষণ, যৌন নির্যাতনের শিকার নারী বা শিশুদের জবানবন্দি নেওয়ার দায়িত্ব নারী ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট অর্পণের জন্য চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট/চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটগণকে বিশেষভাবে অনুরোধ করা গেল।’ সংশ্লিষ্ট জেলায় বা মহানগরীতে নারী ম্যাজিস্ট্রেট না থাকলে অন্য কোনো যোগ্য ম্যাজিস্ট্রেটকে এ দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে বলেও সার্কুলারে উল্লেখ করা হয়েছে। এ নির্দেশনা অনুসরণের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা বা অসুবিধা দেখা দিলে তা সুপ্রিম কোর্টের নজরে আনতেও অনুরোধ করা হয়েছে সার্কুলারে।

সর্বশেষ খবর