শুক্রবার, ২ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

ডেঙ্গু মোকাবিলায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

ডেঙ্গুর বিস্তার রোধে সবাইকে যার যার ঘরবাড়ি পরিচ্ছন্ন রাখার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ডেঙ্গু মোকাবিলায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

গতকাল বিকালে রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে শোকের মাসে কৃষক লীগ আয়োজিত রক্তদান ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধনকালে লন্ডন থেকে মোবাইল ফোনে তিনি এ আহ্বান জানান।

রক্তদান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি অনুষ্ঠানস্থল থেকে লন্ডনে চিকিৎসার জন্য অবস্থানরত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মোবাইলে সংযুক্ত করেন। তার ফোনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য দেন, যা মাইক দিয়ে শোনানো হয়।

এ সময় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে জাতির পিতা রক্ত দিয়েছেন। তার রক্ত ঋণ আমাদের শোধ করতে হবে বাংলার মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে। জাতির পিতার মহান ত্যাগ বৃথা যেতে পারে না। একসময় বিভিন্ন স্মৃতিচারণ ও পিতার স্বপ্ন পূরণের অঙ্গীকারের কথা বলত বলতে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন শেখ হাসিনা। ডেঙ্গু প্রতিরোধে নেতা-কর্মীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ইদানীং আমাদের দেশে কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। ডেঙ্গুর প্রভাব। ডেঙ্গুর প্রভাব থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ইতিমধ্যে আমি কতগুলো নির্দেশনা দিয়েছি। আমাদের পার্টির প্রত্যেক নেতা-কর্মী নিজ নিজ এলাকাকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার জন্য এবং নিজেকে ও পরিবারকে নিরাপদ রাখতে কাজ করবে। তিনি বলেন, দেশ আজকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের লক্ষ্য, জাতির পিতার স্বপ্ন ক্ষুধামুক্ত দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলা। আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। প্রবৃদ্ধি অর্জনে বিশ্বে অন্যতম অবস্থান। আমাদের  মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের শ্রমিক অর্থনীতি অত্যন্ত শক্তিশালী।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা রক্ত দিয়ে গেছেন। তিনি বলেছিলেন, প্রয়োজনে জীবনে রক্ত দেব, তিনি ঠিকই রক্ত দিয়ে গেছেন। তার রক্ত ঋণ আমাদের শোধ করতে হবে বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের মাধ্যমে। তিনি বলেন, আমরা প্রতিবছর ১৫ আগস্ট উপলক্ষে রক্তদান কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছি। রক্ত মানুষের জীবন বাঁচাতে সহযোগিতা করে। রক্ত দিলে কিন্তু রক্ত কমে না, রক্ত বাড়ে। আর একজন মুমূর্ষু রোগীর জীবন রক্ষা পাওয়ার জন্য একটু ত্যাগ স্বীকার যে কোনো মানুষের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটা মানবতার জন্য দরকার। দলের সব নেতা-কর্মীকে দেশ ও দেশের মানুষের জন্য আন্তরিকভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে প্রতিটি নেতা-কর্মীকে আর্তমানবতার সেবায় কাজ করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর আত্মত্যাগ বৃথা যেতে দেব না। দেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাব। এ সময় প্রত্যেক নাগরিককে তিনটি করে গাছ লাগানোর আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, দুর্যোগ, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বৃক্ষরোপণ করা দরকার। আমি প্রত্যেককে তিনটি করে গাছ লাগানোর আহ্বান জানাচ্ছি। এতে একটি পরিবারের আয়ের উৎসও তৈরি হয়। জলোচ্ছ্বাস, দুর্যোগ থেকে রক্ষা পেতে উপকূলে সবুজ বেষ্টনী একান্ত দরকার। সরকারপ্রধান বলেন, বাংলাদেশ উন্নতি করছে। আমাদের সরকার তৃণমূলের স্বাস্থ্যসেবা, উচ্চশিক্ষা, গবেষণা, খাদ্য নিরাপত্তার সুযোগ করে দিয়েছে। দেশ সার্বিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে ‘কৃষকের কণ্ঠ’ শীর্ষক একটি গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। এরপর রক্তদান কর্মসূচি শুরু হয়। এ সময় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী, কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, কৃষিবিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলীসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা।

কৃষক লীগের সভাপতি মোতাহার হোসেন মোল্লা সভাপতিত্ব করেন এবং সভা পরিচালনা করেন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সমীর চন্দ দে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর