শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

প্রধানমন্ত্রী সব সময়ই অন্যায়ের প্রতিবাদী

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী সব সময়ই অন্যায়ের প্রতিবাদী

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব সময়ই অন্যায়ের প্রতিবাদী ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে। তার কণ্ঠস্বর সব সময়ই অসঙ্গতি, অন্যায়ের বিরুদ্ধে; যারা দুর্নীতিপরায়ণ, যারা জঙ্গি-সন্ত্রাস, মাদক ব্যবসায়ী তাদের বিরুদ্ধে। যে-ই অন্যায় করবে তাকেই আইনের মুখোমুখি হতে হবে, এটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত।

গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মিডিয়া ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড পিস (এমডিপি) ‘নারীর ক্ষমতায়নে শেখ হাসিনা’ শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করে। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। নিউজ টোয়েন্টিফোর টেলিভিশনের প্রধান বার্তা সম্পাদক শাহনাজ মুন্নীসহ অন্যরাও এতে বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শুক্কুর আলী শুভ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন নাগরিক টিভির প্রধান প্রতিবেদক শাহনাজ শারমিন। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডব্লিউএইচও কনসালট্যান্ট মু. রহমত আলী।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী জঙ্গি-সন্ত্রাসের জন্য জিরো টলারেন্সের কথা বলেছেন, মাদক দমনের জন্য জিরো টলারেন্সের কথা বলেছেন। যারা অন্যায় করে, তিনি তাদের বিরুদ্ধে সব সময়ই কথা বলেন এবং তাদের দমনের জন্য সচেষ্ট থাকেন। তিনি কাউকে ছাড় দেন না। এ ব্যাপারে সংসদ সদস্যরাও বাদ যাননি। হোক সে রাজনীতিবিদ, হোক সে নির্বাচিত প্রতিনিধি বা হোক সে সমাজের কোনো নেতা। যারাই ভুল করবেন, দুষ্কর্ম করবেন, জনস্বার্থবিরোধী কাজ করবেন, তাদের আইনের মুখোমুখি হতেই হবে।

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, দেশ স্বাধীনের পর বঙ্গবন্ধু নারীদের স্বাধীনতার জন্য কাজ করেছেন। তারপর অনেকটা সময় নারীর অনুপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। কয়েক বছর ধরে নারীদের এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হিমালয়ের চূড়ায়ও নারীরা সাফল্য দেখিয়েছেন। পুলিশেও নারীরা নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। সব ক্ষেত্রেই নারীদের উপস্থিতি রয়েছে।

অবৈধ ক্যাসিনোতে অভিযানের পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কোনো ক্যাসিনোর পারমিশন দিইনি। যারা এটি করছেন তারা অবৈধ ব্যবসা করছেন। যারা ক্যাসিনো করতে চান, আপনারা পারমিশন নেবেন। কোথায় করবেন জানাবেন। যদি দেওয়ার মতো অবস্থা হয় আমরা পারমিশন দেব। কিন্তু না জানিয়ে অবৈধভাবে লুকোচুরি করে ক্যাসিনো করবেন, সেটা হতে দেওয়া হবে না।’ মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বারের লাইসেন্স দিচ্ছি, বড় বড় হোটেলে এবং বড় বড় ক্লাবে আমরা এটি দিচ্ছি। ক্যাসিনো যদি চালাতে হয় তাহলে তারও একটা নীতিমালা হবে, একটা সিদ্ধান্ত হবে। এরপর আমরা তাদের পারমিশন দেব। কিন্তু আপনারা না জানিয়ে এই অবৈধ ব্যবসায় ঢুকে যাবেন তা হবে না। এই অবৈধ ব্যবসা আমরা কাউকে করতে দেব না। আমরা অনেক দিন ধরেই শুনছিলাম ঢাকা শহরে এই অবৈধ ব্যবসায় অনেকে জড়িয়ে যাচ্ছে। প্রথম যখন শুনেছি, কয়েকটি ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছিল। এরপর এক-দেড় বছরে আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে- এমনটা আমাদের গোয়েন্দারা রিপোর্ট করেছে। প্রধানমন্ত্রী আমাদের স্পষ্ট বলে দিয়েছেন, কেউ কোনো অবৈধ ব্যবসা করতে পারবে না। এরই ফলে এই অভিযান হয়েছে।’

যুবলীগ চেয়ারম্যানের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, ‘তিনি তার নিজস্ব কথা বলেছেন। কিন্তু আমাদের বক্তব্য সুস্পষ্ট। যে আইন মানবে না, যে অন্যায় করবে, তাকে আমরা আইনের মুখোমুখি করব। এটা আমাদের সিদ্ধান্ত।’

প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আগে নারীরা রান্নাঘরে ছিলেন। এখন অনেক পুরুষ বলেন তারাও ভালো রান্না করতে পারেন। এটি নারীদের জন্যই সম্ভব হয়েছে। রান্না এখন একটি শিল্পে পরিণত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নারী-পুরুষ আলাদাভাবে দেখেন না। তিনি বলেন, সভ্যতার সৃষ্টি নদীকে ঘিরে। তাই নদী রক্ষা করতে হবে আমাদের।

বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, ‘এ সরকারের আমলেই নারীর ক্ষমতায়ন ঘটেছে। জাতীয় প্রেস ক্লাবের নারী সাধারণ সম্পাদক এর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এখন গণমাধ্যমগুলোতেও নারী সাংবাদিকের সংখ্যা কম নয়। নারী শ্রমিকরাই গার্মেন্টগুলো চালিয়ে রেখেছেন।’

অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘নারীশিক্ষা বাড়লেই নারীরা এগিয়ে যাবেন। শেখ হাসিনা সরকার নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্যেই কাজ করছেন। নারীদের উপবৃত্তি দেওয়ায় নারীশিক্ষার হার বেড়েছে। নারীশিক্ষার বীজ বপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টির ফলেই এটি সম্ভব হয়েছে।’

সভাপতির বক্তব্যে ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা বিশে^র কাছে বিস্ময়। তিনি সারা বিশে^ মানবতার নেত্রী হিসেবে ভূষিত। সবাই তাকে সম্মানের চোখে দেখেন। বঙ্গবন্ধু দেশকে স্বাধীনতা দিয়েছেন। এখন তার কন্যা সারা বিশে^র বিস্ময়। প্রধানমন্ত্রী সাধারণ মানুষের জন্য ভাবেন এটি বারবার প্রমাণিত হয়েছে। বর্তমান সরকারের আমলেই নারী উপাচার্য, নারী স্পিকার ও নারী বিচারপতি হয়েছেন। আজ নারীরা নৌবাহিনীতেও কাজ করছেন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মেয়েদের সুযোগ দিয়েছেন আর মেয়েরা তার প্রমাণ দিয়েছেন। তিনি বলেন, নারীর ক্ষমতায়নে অনেক দেশকে ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর