ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনের দাবিতে অনশন অব্যাহত রেখেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গতকাল অনশনে অংশ নেওয়া অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীর মধ্যে নয়জন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। এর মধ্যে দুজন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
এদিকে, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা। এ ছাড়া বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকেও সংহতি জানানো হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আমরণ অনশনে বসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ওইদিন সন্ধ্যায় অনশনকারীর সংখ্যা অর্ধশতাধিক পেরিয়ে যায়। শুক্রবার অনশনে অংশ নেওয়া জগন্নাথ হলের ভিপি উৎপল বিশ্বাস, জিএস কাজল দাসসহ নয়জন অসুস্থ হয়ে পড়েন। এর মধ্যে অর্ক সাহা ও অপূর্ব চক্রবর্তী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ শেষে আবার অনশনে যোগ দেন। বিকালে অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন উপাচার্য ড. মো. আখতারুজ্জামান। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মিহির লাল সাহা ও সাবেক প্রাধ্যক্ষ অসীম সরকার, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আ ক ম জামাল উদ্দীন, ডাকসুর জিএস গোলাম রাব্বানী, এজিএস সাদ্দাম হোসেন। পরে উপাচার্য সাংবাদিকদের বলেন, ‘তারিখ ঠিক করার আগে নির্বাচন কমিশনকে ভালোভাবে ভাবা উচিত ছিল যে এদিন কোনো মূল্যবোধ, চেতনার পরিপন্থী হয় কিনা। ৩০ তারিখে সিটি নির্বাচন হতেই হবে এটি কোনো পবিত্র ধর্মগ্রন্থের লিপিবদ্ধ বিষয় নয়। কোনো আইনি জটিলতা যদি না থাকে তাহলে নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন থাকবে বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে সম্মান করে এটা নিয়ে ভাবা এবং অবিলম্বে তারিখ পরিবর্তন করা।’ সন্ধ্যায় অনশনকারীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য নিমচন্দ্র ভৌমিক বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন বারবার বলছে, তারা ক্যালেন্ডার সামনে রেখে তারিখ নির্ধারণ করেছে। কিন্তু জনগণের মধ্য থেকে কোনো দাবি উঠলে বিবেচনায় নেওয়া উচিত।’
সরস্বতী পূজার দিন সিটি ভোট মানবে না ঐক্য পরিষদ : সরস্বতী পূজার দিন ঢাকা সিটি নির্বাচন তারিখ নির্ধারণ করায় দেশব্যাপী আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ওই দিন ভোট মানবে না বলে জানিয়েছে তারা। গতকাল রাজধানীর পল্টন টাওয়ারের ইকোনমিক রিপোর্টাস ফোরাম মিলনায়তনে ঐক্য পরিষদের বর্ধিত সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিদ্ধান্ত বিষয়ে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রাণা দাশগুপ্ত জানান, আগামী সোমবার সংখ্যালঘু মোর্চাভুক্ত সব সংগঠনকে নিয়ে রাজধানীসহ সারা দেশে বিকাল ৪টা-৫টা পর্যন্ত মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচির ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া নির্বাচন কমিশন সচিবের ‘এক কক্ষে ভোট, আরেক কক্ষে নির্বাচন’ এই বক্তব্যকে অবান্তর আখ্যা দিয়ে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। এ ছাড়া ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল, অবস্থান ধর্মঘট, প্রতীকী অনশন ও অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
