মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

ভাগ্য নির্ধারণ ২৬ লাখ তরুণ ভোটারে

প্রথমবারের মতো ভোট দেবেন ১২ লাখ

গোলাম রাব্বানী

ভাগ্য নির্ধারণ ২৬ লাখ তরুণ ভোটারে

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটিতে মেয়র হিসেবে কাকে বেছে নেবেন ভোটাররা- এ প্রশ্নই এখন সবার মুখে মুখে। চায়ের দোকান, রাস্তাঘাট, বাসাবাড়ি ও রাজনীতির অন্দরমহলেও চলছে একই আলোচনা। তবে নির্বাচন বিশ্লেষকদের মতে, মেয়রদের ভাগ্য নির্ধারণে ভূমিকা বেশি রাখবেন তরুণ ভোটাররাই। ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২৬ লাখ তরুণ ভোটার নির্ধারণ করবেন, কারা হবেন ঢাকার দুই সিটির মেয়র। তরুণরাই এ নির্বাচনে জয়-পরাজয় নির্ধারণে বড় ভূমিকা রাখতে যাচ্ছেন। ১৯ থেকে ৩৬ বছর বয়সী এসব ভোটারের সমর্থনেই ঠিক হবে ঢাকার দুই সিটির নগরপিতা কারা হচ্ছেন। তরুণ এসব ভোটারের চাওয়া-পাওয়ার হিসাব-নিকাশ যে ভোটের ক্ষেত্রে বড় প্রভাব রাখবে, তা আমলে নিয়ে প্রচারে নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের মেয়র প্রার্থীরা। তরুণদের প্রত্যাশাগুলো স্থান পেয়েছে দুই সিটির মেয়র প্রার্থীদের ইশতেহারেও। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এবং বিএনপির মেয়র প্রার্থীরা নানা পরিকল্পনার মাধ্যমে তরুণদের আকৃষ্ট করার চেষ্টায় রয়েছেন। নতুন ভোটারদের কাছে টানতে ডিজিটাল চমক দেখানোর কাজও করছে দুই দল। শিক্ষিত তরুণ যুবকদের কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি নিয়ে ভোটারদের কাছে যাচ্ছেন প্রার্থীরা।

ইসি সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ ২০০২ সালে অনুষ্ঠিত অবিভক্ত ঢাকা সিটির নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ছিল প্রায় ২৮ লাখ। কিন্তু এবারের নির্বাচনে দুই সিটিতে মোট ভোটার ৫৪ লাখ ৬৩ হাজার ৪৬৭ জন। এর মধ্যে তরুণ ভোটারের সংখ্যা প্রায় ২৬ লাখ তথা ২৫ লাখ ৯৪ হাজার ৪৩৯ জন, যাদের বয়স ১৯ থেকে ৩৬ বছরের মধ্যে। এর মধ্যে ১৯ থেকে ২৩ বছর বয়সী ভোটার রয়েছেন ১১ লাখ ৪৩ হাজার ৭৯১ জন। আর ২৪ থেকে ৩৬ বছর বয়সী ভোটার ১৩ লাখ ৫০ হাজার ৬৪৮ জন। আবার তাদের মধ্যে দুই সিটির সাধারণ নির্বাচনে প্রথম ভোট দেবেন ১২ লাখ ৪৩ হাজার ৭৯১ জন। যদিও উত্তর সিটির নতুন ভোটাররা গত বছর উপনির্বাচনে ভোট দিয়েছেন। বিশ্লেষকদের মতে, ২০১৫ সালে ঢাকা উত্তরে টেবিলঘড়ি প্রতীকের প্রয়াত আনিসুল হক পেয়েছিলেন ৪ লাখ ৬০ হাজার ১১৭ ভোট এবং নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বাস প্রতীকে তাবিথ আউয়াল পেয়েছিলেন ৩ লাখ ২৫ হাজার ৮০ ভোট। ঢাকা দক্ষিণে ইলিশ মাছ প্রতীকে সাঈদ খোকন পেয়েছিলেন ৫ লাখ ৫৩ হাজার ২৯৬ ভোট এবং মগ প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বী মির্জা আব্বাস পেয়েছিলেন ২ লাখ ৯৪ হাজার ২৯১ ভোট। তাই ওই নির্বাচনে দুই সিটিতে মোট ১০ লাখ ১৩ হাজার ৪১৩ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন আনিসুল হক ও সাঈদ খোকন। আর এবারে দুই সিটিতে মোট তরুণ ভোটার প্রায় ২৬ লাখ। সেই হিসাবে বলাই যায়, তরুণরাই এবারের মেয়র নির্বাচনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখবেন। নির্বাচন বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এ নির্বাচনে ২৬ লাখ তরুণ ভোটারই হবেন দুই সিটির মেয়র নির্বাচনের ফ্যাক্টর। তারা যাকে চাইবেন তিনিই মেয়র হবেন। অন্যদিকে এসব তরুণ ভোটারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে দুই সিটির মেয়র প্রার্থীরা নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। অনেক প্রার্থী তরুণদের নিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন নির্বাচনী প্রচারণা। তরুণদের চিন্তা-চেতনাকে গুরুত্ব দিয়ে প্রার্থীরা নিজ নিজ সিটির নির্বাচনী ইশতেহারও ঘোষণা করেছেন। ইসি সূত্র জানিয়েছে, এবারে উত্তর সিটি করপোরেশনের ৫৪টি ওয়ার্ডে ভোটার ৩০ লাখ ৩৫ হাজার ৬২১ জন। দক্ষিণ সিটির ৭৫টি ওয়ার্ডে ভোটার ২৩ লাখ ৬৭ হাজার ৪৮৮ জন। ঢাকা সিটি বিভক্ত হওয়ার পর ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রথম ভোটে ভোটার সংখ্যা ছিল ২৩ লাখ ৪৯ হাজার ৩১৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১২ লাখ ২৭ হাজার ৫৭১ আর নারী ভোটার ১১ লাখ ২১ হাজার ৭৪২ জন। দক্ষিণের প্রথম ভোটে ভোটার সংখ্যা ছিল ১৮ লাখ ৭০ হাজার ৩৬৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১০ লাখ ৯ হাজার ৭০ আর নারী ভোটার ৮ লাখ ৬১ হাজার ২৯৩ জন। দুই সিটি প্রথম ভোটে নতুন ভোটার হয়েছিলেন প্রায় ১৪ লাখ তরুণ-তরুণী।

সর্বশেষ খবর