শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

দূষিত বাতাসে ফের শীর্ষে ঢাকা

শুষ্ক মৌসুমে দূষণ ভয়াবহ, হৃদযন্ত্র ফুসফুসে জটিল স্বাস্থ্যঝুঁকি

নিজস্ব প্রতিবেদক

দূষিত বাতাসে ফের শীর্ষে ঢাকা

দূষণের কারণে বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় শীর্ষস্থানে উঠে এসেছে। সকাল ৯টা ৩৮ মিনিটে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সে (একিউআই) ঢাকার স্কোর ছিল ৪০৮, যার মানে হলো শহরের বাতাসের মান স্বাস্থ্যের জন্য ‘ঝুঁকিপূর্ণ’। মঙ্গোলিয়ার উলানবাটর ও মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন যথাক্রমে ২৫৮ এবং ২২৭ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান দখল করেছে। প্রতিদিনের বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা একিউআই সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটুকু নির্মল বা দূষিত সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় এবং তাদের জন্য কোনো ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে তা জানায়। একিউআই মান ২০১ থেকে ৩০০ হলে স্বাস্থ্য সতর্কতাসহ তা জরুরি অবস্থা হিসেবে বিবেচিত হয়। যার কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়তে পারে নগরবাসী। এ অবস্থায় শিশু, প্রবীণ এবং অসুস্থ রোগীদের বাড়ির ভিতরে এবং অন্যদের বাড়ির বাইরের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। আর একিউআই মান ৩০০ ছাড়িয়ে যাওয়ার অর্থ হচ্ছে শহরের বাতাসের মান মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ‘ঝুঁকিপূর্ণ’। একিউআই সূচকে ৫১ থেকে ১০০ স্কোর পাওয়ার মানে হলো বাতাসের মান গ্রহণযোগ্য। ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর পাওয়ার অর্থ হচ্ছে বাতাসের মান অস্বাস্থ্যকর। এ সূচকে ৫০-এর নিচে স্কোর পাওয়ার মানে হলো বাতাসের মান ভালো। ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই দূষিত বাতাস নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে। গ্রীষ্মকালে শহরটিতে বায়ুদূষণ চরমে উঠলেও বর্ষায় অবস্থার উন্নতি দেখা যায়।

শুষ্ক মৌসুমে ভয়াবহ দূষিত থাকে ঢাকার বাতাস : শুষ্ক মৌসুমে ভয়াবহ দূষণের কবলে পড়েন ঢাকার বাসিন্দারা। এ সময় নগরীর বাতাসে পিএম (পার্টিকুলেট ম্যাটার বা কণাদূষণ) এর মান সাধারণ মাত্রার চেয়ে অনেক বেড়ে যায়। ফলে মানুষ হৃদযন্ত্র ও ফুসফুস সংক্রমণসহ নানা ধরনের জটিল স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে।

গতকাল ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) আয়োজনে ‘ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন চলাচলের কারণে সৃষ্ট পরিবেশ দূষণ রোধে করণীয়’ শীর্ষক এক কর্মশালায় বক্তারা এ কথা বলেন। সড়ক বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদ, পরিবেশবিদ, ঢাকা পরিবহন মালিক সমিতি, সাংবাদিক, সরকারি বিভিন্ন সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বিশিষ্ট নাগরিকরা এতে অংশ নেন। ডিটিসিএ সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক খন্দকার রাকিবুর রহমানের সভাপতিত্বে কি-নোট পেপার উপস্থাপন করেন পরিবেশ অধিদফতরের সিনিয়র রসায়নবিদ ড. মো. আবদুল মোতালেব। তিনি পরিবেশ দূষণের কারণ হিসেবে যানবাহনে জ্বালানি তেলের ব্যবহারে মান বজায় না রাখা, ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল, ইটভাটা থেকে নির্গত ধোঁয়া, নির্মাণকাজ, বর্জ্য পোড়ানোর ফলে নির্গত ধোঁয়াসহ বেশকিছু কারণ চিহ্নিত করেন। ডিটিসিএর অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন মজুমদারের সঞ্চালনায় উপস্থাপিত বিষয়ের ওপর উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন বিশিষ্ট কলামিস্ট ও গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ, বুয়েটের অধ্যাপক ড. রওশন মমতাজ, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নীলিমা আখতার, পরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. এস এম সালেহউদ্দিন, বিআরটিএর পরিচালক লোকমান হোসেন মোল্লা, ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি আজমল উদ্দিন আহমদ, ডিএমপির জয়েন্ট কমিশনার (ট্রাফিক) বাসুদেব বণিক প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর