করোনাভাইরাস মোকাবিলায় চীন থেকে মেডিকেল সরঞ্জাম এসেছে। এতে ১০ হাজার টেস্ট কিট, প্রথম সারির চিকিৎসকদের জন্য ১০ হাজার পিপিই এবং এক হাজার থার্মোমিটার রয়েছে। কুনমিং থেকে আসা চীনের একটি কার্গো উড়োজাহাজ গতকাল বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। বিকালে বিমানবন্দরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদের হাতে সরঞ্জামগুলো তুলে দেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং। অধ্যাপক আজাদ জানান, চীন থেকে দ্বিতীয় দফায় আসা এই মেডিকেল সরঞ্জামের মধ্যে ১০ হাজার টেস্ট কিট, চিকিৎসক-নার্সদের জন্য ১০ হাজার পিপিই, ১৫ হাজার এন৯৫ মাস্ক এবং এক হাজার ইনফ্রারেড থার্মোমিটার রয়েছে। চিকিৎসা-সামগ্রী হস্তান্তর অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক বলেন, ‘দুই দেশের বন্ধুত্বের নিদর্শন হিসেবে আমরা এ ধরনের উপহার বিনিময় করেছি। বিপুল পরিমাণ সরঞ্জাম কার্গো বিমানে এসেছে। আমরা সেগুলো গ্রহণ করলাম।’ তিনি বলেন, ‘চিকিৎসক ও নার্সদের সমন্বয়ে একটি বিশেষজ্ঞ দল পাঠানোর অনুরোধ আমরা করেছিলাম। আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি, রাষ্ট্রদূত চীন সরকারের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে প্রস্তুতি গ্রহণ করছেন।’ রাষ্ট্রদূত লি জিমিং সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা এখনো ভাইরাসের সঙ্গে যুদ্ধ করছি। চীন এখন ভালো অবস্থায় আছে। বাংলাদেশও যুদ্ধ করছে। আমি আশা করি, চীন ও অন্য দেশের সহায়তায় বাংলাদেশও এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে জয়ী হবে। সুতরাং আপনারা আত্মবিশ্বাসী হোন।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ ও সরকার এখান থেকে চীনের জনগণের জন্য অনেক সরঞ্জাম পাঠিয়েছিল কিছুদিন আগে। এর প্রতিদান হিসেবে আমরা এই সহায়তা করছি।’ এক প্রশ্নে রাষ্ট্রদূত জিমিং বলেন, ‘আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি। বেইজিং থেকে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেছে। কিন্তু ভাইরাসটি সারা পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় আক্রমণ করেছে। অনেক দেশে পরিস্থিতি খুব মারাত্মক। বাংলাদেশ এখনো সে তুলনায় আক্রান্ত নয়। ওই সব আক্রান্ত দেশের দিকে আমরা এখন বেশি মনোযোগ দিচ্ছি।’ তবে অনলাইনের মাধ্যমে বাংলাদেশের চিকিৎসক ও নার্সরা সে দেশের বিশেষজ্ঞের সহায়তা এখনই নিতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি। এর আগে বাংলাদেশে কভিড-১৯ রোগী পাওয়ার আগেই ফেব্রুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে ৫০০ টেস্ট কিট পাঠিয়েছিল চীন। ওই সময় ‘বন্ধুত্বমূলক সহায়তা’ হিসেবে চীনাদের জন্য ১০ লাখ হ্যান্ড গ্লাভস, পাঁচ লাখ ফেস মাস্ক, দেড় লাখ মাথার ক্যাপ, এক লাখ হ্যান্ড স্যানিটাইজার, ৫০ হাজার শু কাভার এবং ৮ হাজার গাউন পাঠিয়েছিল বাংলাদেশ।
জ্যাক মার উপহার আসছে রবিবার : নভেল করোনাভাইরাস মোকাবিলায় আলিবাবার সহ-প্রতিষ্ঠাতা চীনা ধনকুবের জ্যাক মার পক্ষ থেকে বাংলাদেশের জন্য সুরক্ষা সরঞ্জাম রবিবার আসছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ। ওই দিন রাতে চিকিৎসা সরঞ্জামবাহী বিশেষ ফ্লাইট ঢাকায় পৌঁছার কথা রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পেরেছি ৩০ হাজার টেস্ট কিট এবং ৩ লাখ মাস্ক থাকবে সেই সরঞ্জামের মধ্যে। এর মধ্যে ২ লাখ ৭০ হাজার সার্জিক্যাল এবং ৩০ হাজার এন৯৫ মাস্ক রয়েছে।’ শনিবার এক টুইটে জীবনঘাতী ভাইরাস মোকাবিলায় বাংলাদেশসহ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১০টি দেশকে মাস্ক ও পরীক্ষার কিটসহ সুরক্ষা সরঞ্জাম দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন জ্যাক মা।
