সর্দি-জ্বরে সারা দেশে আরও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এসব মৃত্যু নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। কোনো কোনো এলাকায় আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী লকডাউনের ঘোষণা দেয়। চাঁদপুর, শরীয়তপুর, মৌলভীবাজার, ঝিনাইদহে এসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের মুন্সিরকান্দি গ্রামে জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে জুলেখা বেগম (৫৫) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় গতকাল শনিবার সকাল থেকে চারটি বাড়ি লকডাউন করেছে প্রশাসন।
চাঁদপুর প্রতিনিধি জানান, জুলেখা বেগম তিন দিন আগে নারায়ণগঞ্জ থেকে বাড়িতে আসেন। তিনি জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। অসুস্থ হলেও আগের দিন তিনি এলাকায় ঘোরাফেরা করেন। কিন্তু শুক্রবার রাতের কোনো এক সময় ঘরের ভিতরে তার মৃত্যু হয়। আশপাশের লোকজন আজ ভোরে বিষয়টি টের পান। তারা পুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশের সহায়তায় লাশ উদ্ধার করা হয়। চাঁদপুর জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমান খান বলেন, ‘আমরা ওই নারীর মৃত্যুর খবর পেয়েছি। লাশটি আমরা নিয়ম অনুযায়ী পিপিই (ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী) পরে দাফনের ব্যবস্থা করতে বলেছি। উপজেলা প্রশাসন সেভাবেই লাশটি দাফনের ব্যবস্থা করেছে। শরীয়তপুর প্রতিনিধি জানান, জ্বর ও মাথাব্যথায় আক্রান্ত এক গৃহবধূ শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার এক ঘণ্টা পর মারা গেছেন। গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তিনি মারা যান। তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন কি না, তা পরীক্ষা করার জন্য চিকিৎসকরা নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে গেছেন। এ ঘটনায় ওই গৃহবধূর পরিবারসহ কয়েকটি পরিবারকে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। সদর হাসপাতাল সূত্রে আরও জানা যায়, ওই গৃহবধূর লাশ নিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়ার পর মুনির আহমেদ স্থানীয় প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানান। তখন জেলা প্রশাসক কাজী আবু তাহের ওই নারীর নমুনা সংগ্রহের জন্য সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পালং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে ওই নারীর বাড়িতে পাঠান। তারা ওই বাড়িতে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে আসেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিধি মেনে ওই নারীর দাফন করবে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। ওই নারীর নমুনা পরীক্ষার জন্য সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর) পাঠানো হবে। মৌলভীবাজারের রাজনগরের টেংরা ইউনিয়নে জ্বর ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়ে গতকাল সকালে এক গ্রামীণ ব্যবসায়ী (৪৫) মারা গেছেন। স্বাস্থ্যবিভাগ পরীক্ষার জন্য তার নমুনা সংগ্রহ করেছে। মৃত ব্যক্তির পরিবারকে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে এনামুল হক সুজা (৫৯) নামে এক ব্যক্তি শ্বাসকষ্ট, কাশি ও সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত হয়ে শনিবার ভোরে মারা গেছেন। এ কারণে তিনি কয়েক দিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। নিহত সুজা পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত একজন কনস্টেবল ছিলেন। খবর পেয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আ. রশীদের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল টিম নিহতের নমুনা সংগ্রহ করেছে। নিহতের বাড়ি লকডাউনের আওতায় আনা হয়েছে।