অধিনায়ক মুমিনুল হকের দশম সেঞ্চুরি, মেহেদী হাসান মিরাজের পুনরায় আগ্রাসন এবং শেষ বিকালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের লড়াইয়ে ফেরার চেষ্টা- একবাক্যে এই ছিল চট্টগ্রাম টেস্টের চতুর্থ দিনের সারসংক্ষেপ। শেষ দিনে জয়ের জন্য বাংলাদেশের দরকার আরও ৭ উইকেট এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের লাগবে ২৮৫ রান।
সাগরিকার স্পিন স্বর্গে টেস্টের পঞ্চম দিনে টাইগারদের জন্য কাজটা যত সহজ, ক্যারিবীয়দের জন্য ততই কঠিন।
সহজভাবে বলতে গেলে, ক্যাপ্টেন মুমিনুলের জাহাজ তীরের এতই নিকটবর্তী যে কেবল নোঙর করার কালক্ষেপণ মাত্র। অন্যদিকে আরেক ক্যাপ্টেন ব্রাথওয়েট এখনো মাঝসাগরে পড়ে আছেন। তবে কাল ৩৯৫ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ঝড়ের কবলে পড়েছিল। সেই পরিচিত ঝড় ‘মেহেদী হাসান মিরাজ’! শেষ বিকালে বাইশগজে ‘বোনার-মায়ার্স’ জুটি ক্যারিশমায় আপাতত রক্ষা। কিন্তু এখনো ক্যারিবীয়দের মনে সাইরেন বাজছে, মহাবিপদসংকেত! দেখা মিলছে না বাতিঘরেরও।বাস্তবতা মানলে আজ জয়ের কথা মাথায় নিয়ে আসার কথা নয় ক্যারিবীয়দের। একে তো স্লো উইকেট। একদিকে ২৮৫ রান করা প্রায় অসম্ভব! তার ওপর পঞ্চম দিনে থাকবে ভয়াবহ টার্ন। এমন পরিস্থিতিতে সফরকারীরা বাংলাদেশের স্পিন-ত্রয়ী মিরাজ-তাইজুল-নাঈমের সামনে কতক্ষণ টিকতে পারে সেটাই দেখার বিষয়! টিম বাংলাদেশের টার্গেটটা খুবই পরিষ্কার, সকালের সেশনে ব্যাটসম্যানরা বাইশগজে সেট হওয়ার আগেই টপাটপ ৭ উইকেট তুলে নেওয়া। অন্যদিকে এই ম্যাচ বাঁচাতে হলে ক্যারিবীয়দের মিরাকলের আশা করা ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই বললেই চলে! কিন্তু অনিশ্চয়তার ক্রিকেটে তো কত অবাস্তব কিছুই না ঘটে যায়! সে যাই হোক, চট্টগ্রামে গতকাল দিনের প্রধান ফোকাসটা নিজের দিকে করে নিয়েছেন ক্যাপ্টেন মুমিনুল। বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে সাদা পোশাকে দশম সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন। খেলেছেন ১১৩ রাসের অসাধারণ এক ইনিংস। সর্বশেষ টেস্টে জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধেও শতক ছিল তার। মজার বিষয় হচ্ছে, টাইগার দলপতির ক্যারিয়ারের এই ১০ সেঞ্চুরির মধ্যে ৭টিই চট্টগ্রামে। মুমিনুলকে নিয়ে তাই উচ্ছ্বসিত কোচ রাসেল ডমিঙ্গো, ‘সত্যিই অসাধারণ ব্যাটিং করেছেন মুমিনুল। টানা দুই সেঞ্চুরি। প্রশংসার যোগ্যই বটে।’ গতকাল দারুণ একটা হাফসেঞ্চুরি করেছেন লিটন কুমার দাসও। প্রথম ইনিংসে ৪৩০ রানের পর মুমিনুল-লিটন জুটির দাপটে কাল ২২৩ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ। জয়ের জন্য ক্যারিবীয়দের টার্গেট হয়ে যায় ৩৯৫ রান! দিন শেষে ক্যারিবীয়রা ৩ উইকেট হারিয়ে ১১০ রান তুলেছে। ৩টিই মিরাজের দখলে। প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি এবং ৪ উইকেট নেওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসেও বল হাতে ক্যারিশমা দেখিয়ে ‘ম্যান অব দ্য ম্যাচ’ পুরস্কারটি যেন বুকিং দিয়ে রেখেছেন। এখন দেখার বিষয়, আজকের দিনটাও মিরাজময় হয় কিনা!