বৃহস্পতিবার, ১৭ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

টাকা পাচার রোধে কঠোর হবেন অর্থমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

টাকা পাচার রোধে কঠোর হবেন অর্থমন্ত্রী

দেশ থেকে অর্থ পাচার নিয়ে সংসদের ভিতর ও বাইরে যখন ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে, তখন পাচার রোধে কঠোর অবস্থানের কথা জানালেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেছেন, দেশে একটি গ্রুপ আছে যারা লোভে পড়ে দেশ থেকে টাকা পাচার করছে। আমরা তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি। এ জন্য বিদ্যমান আইনের কিছু ক্ষেত্রে সংশোধন করা হচ্ছে। কিছু নতুন আইনও করা হচ্ছে। এ উদ্যোগের ফলে পাচারকারীদের ধরা সহজ হবে এবং আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেওয়া যাবে। গতকাল অর্থনৈতিক বিষয়ক ও ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। প্রতিবেশী দেশ শ্রীলঙ্কাকে রিজার্ভ থেকে ঋণ দিয়ে বাড়তি লাভ পাওয়া যাবে বলে অর্থমন্ত্রী মনে করেন। বৈঠকে শেষে সাংবাদিকরা অর্থ পাচার বিষয়ে তার অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, কিছু নতুন আইন করা হবে। আর কিছু সংশোধন করা হবে। অর্থ পাচার নিয়ে আপনাদের (সাংবাদিক) যেমন মনে কষ্ট আছে, আমারও লাগে। এ জন্য আমাদের পদ্ধতির (সিস্টেম) উন্নতি করতে হবে। আমরা সেই চেষ্টাই করছি। তিনি বলেন, দেশ থেকে টাকা পাচারের ঘটনা নতুন নয়। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই প্রবণতা অনেক বেড়েছ। এটা নিয়ে সরকার যেমন উদ্ধিগ্ন, তেমনি বিব্রতও। অর্থমন্ত্রী বলেন, আগে আমাদের বৈদেশিক লেনদেন হতো ম্যানুয়াল পদ্বতিতে। এখন ডিজিটালে হচ্ছে। এসব বিষয় বিবেচনা করে আইন আরও কঠোর করতে হবে।

অর্থমন্ত্রী বিশ্বাস করেন, বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ থাকলে, রিটার্ন ভালো হলে দেশ থেকে টাকা পাচার কমবে। তিনি আরও জানান, দেশের কিছু লোভী লোক আছে। এই গ্রুপটি টাকা পাচার করছে। এদের শনাক্ত করতে হলে আইন-কানুনের সংশোধন দরকার। আমরা সেই উদ্যোগ নিয়ে এগোচ্ছি।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে (জানুয়ারি-মার্চ পর্যন্ত) দেখা গেছে, ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৮ দশমিক ৭ শতাংশ, টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ ৬ হাজার ৩৫১ কোটি টাকা। এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, খেলাপি ঋণ বাড়েনি। বাংলাদেশ ব্যাংক কীভাবে এই হিসাব করেছে তাদের থেকে তথ্য নিয়ে আমি দেখব। তারপর এর জবাব দেব।

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংককে ২০ কোটি ডলার ধার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ। এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মুস্তফা কামাল বলেন, ‘আমরা যদি কাউকে ঋণ দিই, সারা দেশের মানুষ সেটা জানতে পারবে। আমরা যেমন নিতে পারি তেমন দিতেও পারি। আমি বলেছিলাম, আমরা যেহেতু ঋণ নিয়েছি, আমরা ঋণ দেব। আমাদের সক্ষমতা যা আছে, তার মধ্য থেকে আমরা যদি ঋণ দিতে পারি তবে দেবে। এই টাকা দিয়ে যদি বাড়তি কোনো লাভ পাই এবং প্রতিবেশী দেশকে সহযোগিতা করতে পারি, সেটা ভালো। তিনি আরও বলেন, ঋণ দেওয়ার মূল কারণ হলো, তাদের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করা এবং যে টাকা ঋণ দিচ্ছি তার চেয়ে ভালো রিটার্ন আমরা পাব।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর