শুক্রবার, ২ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

পুরস্কার ঘোষিত দুই শীর্ষ জঙ্গি পাঁচ বছরেও অধরা

মাহবুব মমতাজী

পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে পুরস্কার-ঘোষিত দুই শীর্ষ জঙ্গির খোঁজ মিলছে না। তারা কোথায় সে তথ্যও নেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে। অথচ তাদেরসহ ছয় শীর্ষ জঙ্গিকে ধরিয়ে দিতে ২ থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত পুরস্কার ঘোষণা করেছিল ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। তারা ব্লগার, প্রগতিশীল লেখক ও প্রকাশক হত্যাকান্ডে জড়িত।

পুরস্কার-ঘোষিত আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) শীর্ষ জঙ্গিরা হলেন শরিফুল ওরফে সাকিব ওরফে শরিফ ওরফে সালেহ ওরফে আরিফ ওরফে হাদী-১, সেলিম ওরফে ইকবাল ওরফে মামুন ওরফে হাদী-২, সিফাত ওরফে সামির ওরফে ইমরান, আবদুস সামাদ ওরফে সুজন ওরফে রাজু ওরফে সালমান ওরফে সাদ, শিহাব ওরফে সুমন ওরফে সাইফুল এবং সাজ্জাদ ওরফে সজীব ওরফে সিয়াম ওরফে শামস। এদের বিষয়ে জানতে চাইলে গতকাল ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘শীর্ষ এ জঙ্গির অধিকাংশ সদস্যকে আমরা গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। দু-এক জন বাকি আছে তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’ জানা গেছে, শরিফুল ওরফে সাকিব ওরফে শরিফ ওরফে হাদী-১ ২০১৬ সালের ১৯ জুন ডিবি পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। তার আগে একই বছরের ১৫ জুন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকা থেকে শিহাব ওরফে সুমন ওরফে সাইফুলকে গ্রেফতার করা হয়। একই বছরের ২৩ আগস্ট রাতে গাজীপুরের টঙ্গীর চেরাগ আলী মার্কেটে অভিযান চালিয়ে সিফাত ওরফে সামির ওরফে ইমরানকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ। ওই বছরের ৩ সেপ্টেম্বর রাতে টঙ্গী স্টেশন থেকে আবদুস সামাদ ওরফে সুজন ওরফে রাজু ওরফে সালমান ওরফে সাদকে গ্রেফতার করা হয়। তবে সেলিম ওরফে ইকবাল ওরফে মামুন ওরফে হাদী-২ এবং সাজ্জাদ ওরফে সজীব ওরফে সিয়াম ওরফে শামসের খোঁজ এখনো মেলেনি। সিটিটিসি কর্মকর্তারা বলছেন, এ দুজনের নাম-ঠিকানা পাওয়া যায়নি। তাই তাদের গ্রেফতারও করা যায়নি। ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) সূত্র জানান, ২০১৬ সালের ১৯ মে শীর্ষ ছয় জঙ্গিকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করে ডিএমপি। দুজন বাদে যে চারজন এখনো অধরা তারা হলেন সেলিম ওরফে ইকবাল ওরফে মামুন ওরফে হাদী-২। তার বাড়ি উত্তরবঙ্গে। ফয়সাল আরেফিন দীপন হত্যা, ওয়াশিকুর বাবু হত্যা, নীলাদ্রি নিলয় হত্যা, মিরপুরের স্কুলশিক্ষক হত্যাচেষ্টা মামলার তদন্তে তার নাম পাওয়া যায়। এ ছাড়া ব্লগার নাজিমউদ্দিন সামাদ, জুলহাজ মান্নান ও তনয় হত্যাকান্ডেও তার সরাসরি উপস্থিতি তদন্তে জানা যায়। জঙ্গি সিফাত ওরফে সামির ওরফে ইমরানের বাড়ি সিলেট অঞ্চলে। আজিজ সুপার মার্কেটে দীপন হত্যাকান্ডের মামলার তদন্তে পাওয়া যায় যে ওই হত্যাকান্ডে তিনি সমন্বয়কারী ও হত্যাকান্ডে অংশগ্রহণকারীদের প্রশিক্ষণ দেয়। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রিয়াদ মোর্শেদ বাবু হত্যাকান্ডে তার সরাসরি অংশগ্রহণের বিষয়টি জানা যায়। আবদুস সামাদ ওরফে সুজন ওরফে রাজু ওরফে সালমান ওরফে সাদের বাড়ি কুমিল্লায়। তিনি এবিটির সামরিক শাখার অন্যতম সদস্য। প্রকাশক আহম্মেদ রশীদ টুটুল হত্যাচেষ্টা মামলার তদন্তে পাওয়া যায় যে ওই হত্যাচেষ্টায় অংশগ্রহণকারীদের প্রশিক্ষক ছিলেন তিনি। এ ছাড়া তিনি এবিটি সদস্যদের জিহাদে উদ্বুদ্ধকরণের বিষয়ে বয়ান দিতেন। সাজ্জাদ ওরফে সজীব ওরফে সিয়াম ওরফে শামসের বাড়ি ঢাকার পার্শ্ববর্তী কোনো জেলায়। তিনি সংগঠনের সামরিক শাখার একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর