বৃহস্পতিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা
সংসদে প্রধানমন্ত্রী

১২ বছরের শিক্ষার্থীদের টিকার ব্যবস্থা হচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

১২ বছরের শিক্ষার্থীদের টিকার ব্যবস্থা হচ্ছে

প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে জানিয়েছেন, দেশে ১৮ বছরের ওপরের সব নাগরিককে কভিড-১৯-এর টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। পাশাপাশি টিকা প্রদানের বয়সসীমা ক্রমান্বয়ে কমিয়ে আনা হচ্ছে। ১২ বছর ও তদূর্ধ্ব ছাত্রছাত্রীদের টিকার আওতায় নিয়ে আসার ব্যবস্থা হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতিবন্ধীদের কার্ডের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করে ও শ্রমিকদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা প্রদানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

গতকাল সংসদের বৈঠকে প্রশ্নোত্তর পর্বে জাতীয় পার্টির সদস্য ডা. রুস্তম আলী ফরাজীর লিখিত প্রশ্নের লিখিত জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব তথ্য জানান। প্রশ্ন জিজ্ঞাসা ও উত্তর টেবিলে উত্থাপন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ক্রমান্বয়ে দেশের ৮০ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে টিকার আওতায় আনার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে এবং ডিসেম্বরের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রার ৫০ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে টিকার আওতায় আনতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুসরণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, করোনার সংক্রমণ এখনো চলমান। আশা করি সবার সহযোগিতায় চলমান এ বৈশ্বিক মহামারী সফলভাবে মোকাবিলা করতে সক্ষম হব। পরিস্থিতি আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে। এজন্য টিকা গ্রহণের পাশাপাশি সবাইকে নির্ধারিত স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে টিকা প্রদান করা সম্ভব হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী জানান, সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের সব শিক্ষার্থীকে টিকার আওতায় আনার লক্ষ্যে বয়সসীমা ১৮ পর্যন্ত কমানো হয়েছে। ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২৪ কোটি ৬৫ লাখ ১৩ হাজার ৬৬০ ডোজ টিকা সংগ্রহের ব্যবস্থা করা হয়। এর মধ্যে দ্বিপক্ষীয় চুক্তির আওতায় ৪ কোটি ৪৪ লাখ ৩১ হাজার ৮৮০ ডোজ টিকা পাওয়া যায়। প্রতি মাসে যাতে ১ কোটি ডোজ বা তার বেশি টিকা পাওয়া যায় সে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অক্টোবর থেকে প্রতি মাসে ২ কোটি হিসাবে ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ৬ কোটি সিনোফার্ম টিকা পাওয়া যাবে।

তিনি জানান, এ পর্যন্ত ২ কোটি ৯ লাখ ২২ হাজার ৭১৫ জনকে প্রথম ডোজ এবং ১ কোটি ৩৮ লাখ ৫৫ হাজার ৪৬ জনকে দ্বিতীয় ডোজ- সর্বমোট ৩ কোটি ৪৭ লাখ ৭৭ হাজার ৭৬১ ডোজ টিকা প্রদান করা হয়েছে।

মানব টিস্যু ব্যাংক স্থাপনের উদ্যোগ : সরকারদলীয় সদস্য আনোয়ার হোসেনের প্রশ্নের লিখিত জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, টিস্যু ব্যাংকিং সেবা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছে দিতে বর্তমান সরকার দেশে একটি পূর্ণাঙ্গ মানব টিস্যু বা কোষ ব্যাংক স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। এ লক্ষ্যে একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে টিস্যু ব্যাংকিং কার্যক্রম সম্প্রসারিত হবে। বিভিন্ন জটিল ও দুরারোগ্য রোগ, পঙ্গুত্ব, পুড়ে যাওয়া আহতদের জন্য বায়োমেটেরিয়াল তৈরি ও ব্যবহারের উদ্দেশ্যে গবেষণা পরিচালনাসহ দুরারোগ্য রোগের চিকিৎসায় টিস্যু ও সেল থেরাপিভিত্তিক চিকিৎসাসেবার সুযোগ সৃষ্টি হবে।

শ্রমিকদের কল্যাণে বিভিন্ন পদক্ষেপ : সরকারি দলের সদস্য আছলাম হোসেন সওদাগরের লিখিত প্রশ্নের জবাবে সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার দেশে ও প্রবাসে বিভিন্ন পেশার শ্রমিকদের সার্বিক কল্যাণে অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ৪২টি শিল্প সেক্টরে কর্মরত শ্রমজীবী মানুষের জন্য ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করেছে। দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পকারখানাসমূহে কর্মরত শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি (স্কেলভিত্তিক) ৪ হাজার ১৫০ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৮ হাজার ৩০০ টাকায় নির্ধারণ করা হয়েছে। তৈরি পোশাকশিল্প কারখানাসমূহে কর্মরত শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি (স্কেলভিত্তিক) ১ হাজার ৬৬২ টাকা থেকে পর্যায়ক্রমে বৃদ্ধি করে ৮ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর