সোমবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

উত্তাল শারজাহ হতাশ বাংলাদেশ

উত্তাল শারজাহ হতাশ বাংলাদেশ

লাউড স্পিকারে বাজছে বাংলা গান। গ্যালারি ছেয়ে  গেছে লাল-সবুজ রঙে। সাকিব-মুস্তাফিজদের এক একটি শট কিংবা ডেলিভারিতে গর্জে উঠছিল গ্যালারি। গতকাল সংযুক্ত আরব আমিরাতের ঐতিহাসিক শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়াম ছিল লাল-সবুজে উত্তাল। মরুভূমির প্রান্তরে স্বাগতিকের সুবাস গায়ে মেখেও সুপার টুয়েলভের প্রথম ম্যাচ জিততে পারল না বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে গেল ৫ উইকেটে। প্রথমে ব্যাট করে মুশফিকুর রহিম ও মোহাম্মদ নাঈমের হাফ সেঞ্চুরিতে ৪ উইকেটে ১৭১ রান করেছিল বাংলাদেশ। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৭ বল হাতে রেখেই জিতে যায় লঙ্কানরা। কাল ব্যাটিংয়ের শুরু থেকেই ছিল দ্বীপ রাষ্ট্রটির দাপট। ৮ ওভারে শ্রীলঙ্কার স্কোর ছিল ৭১/১। ওভারপ্রতি রান সাড়ে ৮। এরপর সাকিব আল হাসান এসে ম্যাচের গতি পাল্টে দেন। নবম ওভারে মাত্র এক রান দিয়ে দুই উইকেট নেন। পরের ওভারে সাইফুদ্দিন এসে আরও একটি উইকেট নেন। মাত্র ৮ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে শ্রীলঙ্কা। আশালঙ্কা ও রাজাপক্ষে ৮৬ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশকে ম্যাচ থেকেই ছিটকে দেন। মাত্র ৪৯ বলে ৮০ রানের ক্যারিশম্যাটিক ইনিংস খেলে ম্যাচসেরা হয়েছে আশালঙ্কা। ছয় নম্বরে ব্যাট করতে নামা ভানুকা রাজাপক্ষে ৩১ বলে খেলেছেন ৫৩ রানের ইনিংস। গতকাল শ্রীলঙ্কার ব্যাটিংয়ের ১৫তম ওভার পর্যন্ত ম্যাচটি বাংলাদেশের হাতেই ছিল। কিন্তু ১৬তম ওভারেই বদলে যায় চিত্রনাট্য। বল হাতে ২২ রান দিয়ে সাইফুদ্দিন যেন ম্যাচটি উপহার দেন লঙ্কানদের। কালকের ম্যাচের পোর্টমর্টেম করলে দেখা যাবে, লিটন দাসের দুটি ক্যাচ মিসেই চরম মূল্য দিতে হয়েছে। বার বার নতুন জীবন পাওয়া আশালঙ্কাই তো বাংলাদেশকে হারিয়ে দিল। লাল-সবুজরা হারলেও কালকের ম্যাচ দিয়ে ফর্মে ফিরেছেন মুশফিকুর রহিম। করেছেন দারুণ এক হাফ সেঞ্চুরি। লঙ্কান ভয়ংকর লেগ স্পিনার হাসারাঙ্গার ওভারে স্লগসুইপ করে ডিপ মিডউইকেট দিয়ে মুশফিক পাঠিয়ে দিলেন গ্যালারিতে। ইনিংসের ১১তম ওভারে সেটিই ছিল বাংলাদেশের প্রথম ছক্কা। প্রতিপক্ষের সেরা স্পিনারকে হতাশ করেই যেন নিজের সৌভাগ্যের দরজটা নিজেই খুলে নিলেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল। ঠিক এর দুই ওভার পরেই  পেসার ফার্নান্দোর বলে স্কোয়ার লেগ দিয়ে যে ছক্কাটি হাঁকালেন তা শারজাহর গ্যালারি অতিক্রম করেই যেতে ধরছিল। গতকাল মুশফিক হাফসেঞ্চুরি পূরণ করেছিলেন মাত্র ৩২ বলে দুই ছক্কা এবং চার বাউন্ডারিতে। তবে নিজের সেরা দিনেও বার বার পছন্দের সুইপ শট  খেলতে গিয়ে ব্যর্থ হচ্ছিলেন মুশফিক। কিন্তু শেষ বলে ঠিকই সফল হলেন। সেই সুইপ শটে বাউন্ডারি হাঁকিয়েই ড্রেসিংরুমে ফেরেন। শেষ পর্যন্ত ৩৭ বলে ৫৭ রানের হার না মানা ইনিংস খেলে বাইশগজ ছাড়েন বাংলাদেশের এই সুপারস্টার। কাল মুশফিকের স্ট্রাইকরেট ছিল ১৫৪.০৫। কিন্তু দল হারায় দিন শেষে তার ক্যারিশম্যাটিক ইনিংসটি বৃথাই গেল। কাল দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন ওপেনার মোহাম্মদ নাঈমও। লাহিরু কুমারার ১৪৮ কিলোমিটার গতির বল লং অন দিয়ে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেন। ৪৪ বলে ফিফটি। এই বিশ্বকাপে টাইগার ওপেনারের দ্বিতীয় অর্ধশতক এটি। এর আগে স্বাগতিক ওমানের বিরুদ্ধেও তার ৬৪ রানের ক্যারিশম্যাটিক আরেকটি ইনিংস ছিল। গতকাল আউট হওয়ার আগে ৫২ বলে খেলেছেন ৬২ রানের ইনিংস। লাহিরু কুমারার ১৪৮ কিলোমিটার গতির বল লং অন দিয়ে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেন। ৪৪ বলে ফিফটি। এই বিশ্বকাপে টাইগার ওপেনারের দ্বিতীয় অর্ধশতক এটি। এর আগে স্বাগতিক ওমানের বিরুদ্ধেও তার ৬৪ রানের ক্যারিশম্যাটিক আরেকটি ইনিংস ছিল। গতকাল আউট হওয়ার আগে ৫২ বলে  খেলেছেন ৬২ রানের ইনিংস। দল হারায় তার ইনিংসটাও যেন ম্লান হয়ে গেল। টি-২০ ক্রিকেট এমনই। যেখানে একটি ভুলই হারের কারণ হয়ে দাঁড়ায় সেখানে ভুলের সমাহার ঘটিয়ে কি আর জয়লাভ করা যায়!

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর