বুধবার, ২৬ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

শান্তিরক্ষা মিশনে কোনো প্রভাব পড়বে না : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

শান্তিরক্ষা মিশনে র‌্যাবকে নিষিদ্ধ করতে ১২টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা জাতিসংঘে চিঠি দিলেও তার কোনো প্রভাব পড়বে না বলে মনে করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। সেই সঙ্গে র‌্যাবের কার্যক্রম নিয়ে সমস্যা থাকলে যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে প্রশিক্ষণ দিয়ে সহযোগিতা করতে পারে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। গতকাল বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ বিষয়ে কথা বলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘ যখন শান্তিরক্ষা মিশনে কোনো দেশ থেকে সদস্য নেয়, তখন তারা খুব ভালোভাবেই যাচাই বাছাই করে নেয়। শান্তি  মিশনে না নেওয়ার জন্য যে ১২টি আন্তর্জাতিক সংস্থা জাতিসংঘে চিঠি দিয়েছেন, এতে কোনো প্রভাব পড়বে না। তিনি বলেন, কিছু লোক দেশের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছেন। তাদের দেশের প্রতি কোনো মমত্ববোধ নেই। দেশীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং তাদের বিদেশি বন্ধু ও লবিস্টদের বাংলাদেশ নিয়ে অনেক দিন ধরে অপপ্রচারের কারণেই এই ১২টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা জাতিসংঘে চিঠি দিয়েছে বলে মনে করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, জাতিসংঘ এটা (চিঠি) নিয়ে কিছু করেনি। চিঠি পেয়েছে, রেখে দিয়েছে। তারা চিঠি পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছে। আমরা দেখি এটা নিয়ে কী করা যায়। অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, প্রবাসে এত অপপ্রচার, কিন্তু তার সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই; এগুলো খুবই দুঃখজনক। দেশে বিভিন্ন দলমত থাকতে পারে। এক দল আরেক দলের নীতি গ্রহণ নাও করতে পারে। কিন্তু সে জন্য দেশের ক্ষতি করতে আমাদের কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান আগাগোড়া লেগে থাকে, এটা খুব দুঃখজনক।

এগুলো করার জন্য বিদেশিদের টাকা দেয়। তাদের বলে, এ দেশে যত ধরনের সাহায্য-সহযোগিতা, তা বন্ধ করে দেন। তবে দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে কোনো লাভ হবে না। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান হলেই যে খুব ভালো প্রতিষ্ঠান, তা নয়। একটি প্রতিষ্ঠান বলেছে, বাংলাদেশে র‌্যাব বহু লোক মেরে ফেলেছে, অমুক-তমুক। তারা একসময় বলেছিল, ইরাকে নিষিদ্ধ অস্ত্র রয়েছে। এটা বলার পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র সরকার মনে করেছে, সত্যি সত্যি আছে। কিন্তু পরের ঘটনা আপনারা জানেন। আমি যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে বলব, তারা আগের কথা স্মরণ করুক। একটি প্রতিষ্ঠান কীভাবে তাদের ভুল পথে নিয়েছে, যার কারণে তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে দুঃখ প্রকাশ করতে হয়েছে।’

র‌্যাবের কার্যক্রম নিয়ে সমস্যা থাকলে যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতা করতে পারে উল্লেখ করে আবদুল মোমেন বলেন, র‌্যাব অত্যন্ত পারদর্শীভাবে ও সততার সঙ্গে কাজ করছে। এ জন্য বাংলাদেশে সবার কাছে র‌্যাব গ্রহণযোগ্য। আমাদেরও কাজ করার আছে। যদি কোথাও আইনের ব্যত্যয় হয়, অবশ্যই আমরা সেখানে অ্যাকশন নেব। দু-একটা কেসে র‌্যাব এবিউজড করেছিল। ইতোমধ্যেই তাদের শাস্তি হয়েছে। নারায়ণগঞ্জের ঘটনা আপনারা জানেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, র‌্যাব কীভাবে অ্যাকশন নেবে, এগুলো আমেরিকানরাই শিখিয়েছে। তাদের এই রুলস অব এনগেজমেন্টে যদি অসুবিধা থাকে, তাহলে আমরা আমেরিকানদের বলব র‌্যাবকে নতুন করে ট্রেনিং দিতে যাতে আর কোনো ধরনের ব্যত্যয় না ঘটে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে গত ১০ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্র ‘গুরুতর’ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র‌্যাবের বর্তমান ও সাবেক সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এর ধারাবাহিকতায় র‌্যাবকে শান্তিরক্ষা মিশনে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়ে ১২টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা জাতিসংঘে চিঠি দেয় গত সপ্তাহে।

 

সর্বশেষ খবর