মঙ্গলবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

বিনিয়োগ পাঠাতে হবে ঢাকার বাইরে

আদিল মুহাম্মদ খান

বিনিয়োগ পাঠাতে হবে ঢাকার বাইরে

নগর পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেছেন, জনসংখ্যার চাপে ঢাকা ভেঙে পড়ার অবস্থা। ঢাকামুখী জনস্রোতের মূল কারণ হলো কর্মসংস্থানের অধিকাংশই ঢাকামুখী। এই স্রোত কমাতে ঢাকাকেন্দ্রিক বিনিয়োগ বন্ধ করতে হবে। প্রণোদনা দিয়ে হলেও ব্যবসায়ীদের ঢাকার বাইরে বিনিয়োগে উৎসাহিত করতে হবে। একই সঙ্গে সরকারের বিভিন্ন দফতর বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সরকারের যতগুলো পলিসি, সবখানে বিকেন্দ্রীকরণের কথা স্পষ্ট বলা আছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, সরকার তার নিজের মন্ত্রণালয় ও দফতর পর্যন্ত বিকেন্দ্রীকরণে আগ্রহী নয়। হাওর উন্নয়ন বোর্ড, চা বোর্ড এগুলোর হেড অফিস ঢাকায় থাকবে কেন? আমাদের আমলাতন্ত্র, প্রশাসনযন্ত্র ঢাকাকেন্দ্রিকতায় আবদ্ধ। সরকারি দফতরগুলো বিকেন্দ্রীকরণ করতে না পারায় বেসরকারি খাতকেও বাইরে নিতে পারছে না। বেসরকারি খাতকে বিকেন্দ্রীকরণ করতে প্রয়োজন ছিল পলিসি ইনসেন্টিভ দেওয়া। ঢাকা ছেড়ে অন্য এলাকায় গেলে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেওয়া। চাইলেই ঢাকায় নিয়মবহির্ভূতভাবে ব্যবসা করা যায়, জলাভূমি ভরাট করে কারখানা গড়ে তোলা যায়। আইনকানুনকে পাশ কাটিয়ে যা খুশি তা করার এমন উর্বর ক্ষেত্র থাকলে মানুষ তো সেখানে আসবেই। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) ফেলো আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, আয়ের উৎস হিসেবে সেকেন্ড প্রায়োরিটি সিটি চট্টগ্রামের পরে অন্য সিটিগুলো একেবারে নাজুক অবস্থায় আছে। রংপুর, রাজশাহী, খুলনা, বরিশালের মতো প্রান্তিক শহরগুলোতে কর্মসংস্থানের সুযোগ খুব কম তৈরি হচ্ছে। সাতক্ষীরার একজন মানুষ কাজের জন্য খুলনায় যাওয়ার কথা। তিনি ছুটছেন ঢাকায়। এই আকর্ষণ বন্ধ করতে না পারলে ঢাকামুখী জনস্রোত কমানো যাবে না। সরকার যদিও ঢাকার বাইরে কর্মসংস্থান তৈরি করতে বিভিন্ন এলাকায় ইকোনমিক জোন তৈরি করছে, যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন করছে। এখন ব্যবসায়ীদের বার্তা দিতে হবে ঢাকার বাইরে যেতে। প্রণোদনা দিয়ে হলেও বাধ্য করতে হবে। একই সঙ্গে ঢাকায় বিনিয়োগ কঠিন করে ফেলতে হবে। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু হচ্ছে। এখন পদ্মা সেতু থেকে ঢাকা পর্যন্ত ভূমির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে সরকারের দৃশ্যমান পলিসি নেই। মনে হচ্ছে এখানেও শিল্পকারখানা গড়ে উঠবে। অর্থনৈতিক তৎপরতা বাড়বে। তখন আরও মানুষ আসবে। অথচ সরকারের উচিত পদ্মার ওপারে শিল্প স্থাপনে উৎসাহিত করা।

ঢাকায় মেট্রোরেল, সাবওয়ের মতো বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। লক্ষ-কোটি টাকা খরচ হচ্ছে যানজট কমাতে। অথচ ঢাকার বিভিন্ন সুবিধা ও কর্মসংস্থান বিকেন্দ্রীকরণ করলে এমনিতেই মানুষ কমে যেত। যানজটসহ নানা সমস্যা আপনা-আপনি সমাধান হতো।

সর্বশেষ খবর