রবিবার, ৫ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা
সাবেক সিইসির বোধোদয়

শতভাগ ভোট নিয়ে অস্বস্তিতে ছিলাম

নিজস্ব প্রতিবেদক

সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালনকালে আমার ওপর কোনো অদৃশ্য শক্তির চাপ ছিল না। তবে বেশ কিছু কেন্দ্রে শতভাগ ভোট প্রদান ছিল অস্বস্তিকর। গতকাল এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্র্যাসি আয়োজিত এক ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্র্যাসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। সাবেক এ সিইসি বলেন, বন্দুক ও লাঠি ব্যবহার করে নির্বাচন করা যায় না। বাংলাদেশ ছাড়া পৃথিবীর কোথাও নির্বাচনে বন্দুক ও লাঠির ব্যবহার হয় না। নির্বাচনকালে যুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি করা ঠিক নয়। নির্বাচনকে অবশ্যই প্রতিযোগিতামূলক হতে হবে। আর রাজনৈতিক সমঝোতা ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। বিএনপি একটি বড় রাজনৈতিক দল। তাই বিএনপিকে বাদ দিয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন করা হলে সে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। তিনি বলেন, নির্বাচন একটি স্পর্শকাতর ও চ্যালেঞ্জিং বিষয়। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন আরও চ্যালেঞ্জিং। রাজনৈতিক দল ও প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সার্বিক সহযোগিতা ব্যতীত শুধু নির্বাচন কমিশনের পক্ষে সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব নয়। স্বচ্ছ নির্বাচনের জন্য জেলা প্রশাসকদের পরিবর্তে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি। ডিবেট ফর ডেমোক্র্যাসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ক্ষমতার পালাবদলের একমাত্র পথ সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। নানা কারণে বাংলাদেশে রাজনৈতিক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনগুলো গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। এখানে শতভাগের অধিক ভোট পেয়ে নির্বাচিত হওয়ার উদাহরণ রয়েছে। মৃত ব্যক্তিদেরও ভোট প্রদানের ঘটনা ঘটেছে। এ ধরনের ঘটনায় নির্বাচন বাতিল করার ক্ষমতা থাকলেও নির্বাচন কমিশন তা করেনি। এসব কারণে নির্বাচনব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা কমেছে। তবে ঝিনাইদহ পৌরসভা নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে সরকারি দলের প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করায় বর্তমান নির্বাচন কমিশনের প্রতি জনগণের আস্থা বাড়বে। দুই প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে রাজনৈতিক সমঝোতার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পথ তৈরি করলে দেশ, দেশের মানুষ ও রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য কল্যাণকর হবে। প্রতিযোগিতায় কুমিল্লা ইউনিভার্সিটিকে পরাজিত করে ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ-এর বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়। ছায়া সংসদের বিষয় ছিল- ‘বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন সম্ভব।’ বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মোহাম্মদ রইস, ড. এস এম মোর্শেদ, সাংবাদিক তানিয়া রহমান ও সাংবাদিক একরামুল হক সায়েম।

সর্বশেষ খবর