বুধবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

ব্যবহার অনুপযোগী ২৮ হাজার ইভিএম, নষ্টের মুখে ৪৫ হাজার

সংরক্ষণ নিয়ে সংকটে ইসি

গোলাম রাব্বানী

ব্যবহার অনুপযোগী ২৮ হাজার ইভিএম, নষ্টের মুখে ৪৫ হাজার

নির্বাচন কমিশনের হাতে থাকা দেড় লাখ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) প্রায় অর্ধেক নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে। অব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণের অভাবে ২৮ হাজার ইভিএম ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া কাগজের বাক্সে রাখা ৪৫ হাজার ৫০০ ইভিএম ড্যামেজ হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। ইসির হিসাব অনুযায়ী দেড় লাখ ইভিএমের মধ্যে ৯৩ হাজার রয়েছে ১০ আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসে; ৫৪ হাজার ৫০০ গাজীপুর বিএমটিএফে; ২ হাজার ৫০০ আগারগাঁও নির্বাচন ভবনের বেসমেন্ট-১-এ। হিসাবে দেখা গেছে, মাঠ পর্যায়ে থাকা ৯৩ হাজার ইভিএমের মধ্যে প্লাস্টিক হার্ড বাক্সে রয়েছে ৪৭ হাজার ৫০০ ও কাগজের বাক্সে ৪৫ হাজার ৫০০। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ তথা প্রায় ২৮ হাজার ইভিএম ব্যবহার অনুপযোগী। আর কাগজের বাক্সে রাখা ৪৫ হাজার ৫০০ ইভিএম ড্যামেজ হওয়ার শঙ্কায় রয়েছে। ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, ইসির মাঠ পর্যায়ে থাকা ইভিএমের ৩০ ভাগ এ মুহূর্তে অকেজো (ব্যবহার অনুপযোগী)। এসব ইভিএমের বেশির ভাগেরই হার্ডওয়্যার-সংক্রান্ত সমস্যা রয়েছে। অনেকটির যন্ত্রাংশ হারিয়েছে। এ ছাড়া ইভিএমের হিসাবেও গরমিল দেখা দিয়েছে। ইসির ইভিএম প্রকল্পের এক কার্যপত্রে বলা হয়েছে, ইসির অঞ্চল থেকে প্রাপ্ত তথ্যের সংখ্যাগত অসামঞ্জস্যতা রয়েছে। বলা হয়েছে, প্রকল্প থেকে মাঠে ইভিএম কন্ট্রোল ইউনিট পাঠানো হয়েছে ৯৩ হাজার ৪১০টি। অঞ্চল থেকে প্রাপ্ত সংখ্যা ৮০ হাজার ১৭০। এ ছাড়া ৯৩ হাজার ৪১০টি কন্ট্রোল ইউনিটের ব্যাটারি পাঠানো হয়েছে। কিন্তু অঞ্চল থেকে প্রাপ্ত সংখ্যা হচ্ছে ৮৬ হাজার ৮৩। সে হিসাবে ৯৩ হাজার ৪১০ কন্ট্রোল ইউনিটের মধ্যে বাকি ১৩ হাজার ২৪০টি কন্ট্রোল ইউনিটের হদিস নেই। আর ৭ হাজার ৩২৭টি কন্ট্রোল ইউনিটের ব্যাটারিরও হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। এ বিষয়ে ইভিএম প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) কর্নেল সৈয়দ রাকিবুল হাসান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘দেড় লাখ মেশিন ২ লাখ ৭ হাজার ৪০৪ বার ব্যবহার রয়েছে। ৩০ শতাংশ ইভিএম ব্যবহার অনুপযোগী তবে সেগুলো সংস্কারযোগ্য। ইতোমধ্যে ১০ হাজার মেশিন সংস্কারের জন্য বিএমটিএফে পাঠানো হয়েছে। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে আরও পাঠানো হবে।’ ইসির এক কর্মশালায় জানানো হয়, নির্বাচন কমিশন এ পর্যন্ত ৮৫৯টি জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করেছে। চলতি ২০২২ সালে ইভিএমে ৪৭২টিতে ভোট গ্রহণ করা হয়েছে। কর্মশালায় বলা হয়, ইভিএমে ইন্টারনেট সংযোগ না থাকায় এটি হ্যাক করা সম্ভব নয়। বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশন ও ভোটার উপস্থিতি বাধ্যতামূলক বিধায় ভোট কেন্দ্র দখল করে ভোট দেওয়া সম্ভব নয়। ইসির কর্মকর্তারা ইভিএমে দুই ধরনের সমস্যার কথা বলছেন।

এক. ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত ও দুই. নির্বাচনে ব্যবহারসংক্রান্ত। তাঁরা বলছেন, যথাযথ সংরক্ষণের অভাবে ইভিএমের আয়ুষ্কাল কমে যাচ্ছে। উল্লেখযোগ্য মেশিন ইতোমধ্যে বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বা যন্ত্রাংশ হারিয়েছে। ৩০ শতাংশ ইভিএম এ মুহূর্তে ব্যবহারের অনুপযোগী। বিদ্যমান ইভিএম সংরক্ষণে ৩০ জেলায় গোডাউন ও বাসা ভাড়া করা হয়েছে। ওইসব স্থানে ইভিএম স্থানান্তর ও সংরক্ষণ করা হয়েছে। বাকি জেলাগুলোয় ভাড়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

 

সর্বশেষ খবর