সোমবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা
বিজিবি-বিজিপি বৈঠক

গোলা ও আকাশসীমা লঙ্ঘনে দুঃখ প্রকাশ মিয়ানমারের

কক্সবাজার ও টেকনাফ প্রতিনিধি

সীমান্তে উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে মিয়ানমারের গোলা বাংলাদেশে এসে পড়া এবং আকাশসীমা লঙ্ঘনের ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা ঘটবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি)। গতকাল কক্সবাজারের টেকনাফে শাহপরীর দ্বীপ জেটি ঘাট সংলগ্ন বিজিবির সাউদার্ন রেস্ট হাউসে বিজিবি-বিজিপি পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। টানা ৫ ঘণ্টার বৈঠকটি শেষ হয় বিকাল ৩টায়। বৈঠকে যোগ দিতে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল দুটি স্পিড বোটে সকাল ১০টায় শাহপরীর দ্বীপ আসে। বিজিবির আট সদস্যের প্রতিনিধি দল পতাকা বৈঠকে অংশ নেয়। বৈঠকে বিজিবির পক্ষে নেতৃত্ব দেন টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার এবং বিজিপির পক্ষে নেতৃত্ব দিয়েছেন মিয়ানমারের পিউন ফিউর ১ নম্বর বর্ডার গার্ড পুলিশের অধিনায়ক তৃর্ণল ইয়ে ওয়াই শো।

বৈঠক শেষে বিজিবি-২ ব্যাটালিয়নে অনুষ্ঠিত প্রেসব্রিফিংয়ে লে. কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার বলেন, বৈঠকে একাধিকবার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে গোলা পড়া ও হেলিকপ্টার আকাশসীমা লঙ্ঘনের ঘটনা নিয়ে বিজিবি তীব্র প্রতিবাদ জানালে বিজিপির পক্ষে দুঃখ প্রকাশ করে এমন ঘটনা আর ঘটবে না বলে প্রতিশ্রুত দেওয়া হয়। এ ছাড়া সীমান্তের পরিস্থিতি নিয়ে বিজিবি-বিজিপি একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছে। বৈঠকে অনুপ্রেবশ রোধ, মাদক চোরাচালান বন্ধ করতে কাজ করার নানা আলোচনা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বৈঠকে বিজিপির পক্ষে বলা হয়েছে মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে সীমান্তে নানা অপরাধ করছে। বিজিবির পক্ষ থেকে এ ঘটনা অস্বীকার করে জানানো হয়, কখনো বাংলাদেশের ভূখ  কোনো সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করতে দেওয়া হয়নি। সন্ত্রাসীদের বাংলাদেশ কোনো প্রকার সহায়তা করে না। ভবিষ্যতেও সন্ত্রাসীদের রোধে বাংলাদেশ কঠোর অবস্থানে থাকবে। সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধে উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী মিলেমিশে কাজ করবে বলে মতৈক্য প্রকাশ করা হয়েছে। প্রেসব্রিফিংয়ে বিজিবির রামু সেক্টরের কমান্ডার কর্নেল মোহাম্মদ আজিজুর রউফ বলেন, পতাকা বৈঠক আন্তরিক পরিবেশে শেষ হয়েছে। এটি ছিল নিয়মমাপিক বৈঠকের একটি অংশ। গত তিন মাস ধরে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান গোলাগুলিকে কেন্দ্র করে সীমান্তে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এ পরিস্থিতিতে বৈঠক করতে কিছুটা দেরি হয়েছে।  সীমান্ত পরিস্থিতিতে সীমান্তের বাসিন্দারা আতঙ্কিত হন। এ পরিস্থিতি নিয়ে শুরু থেকে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে নানা পর্যায়ে যোগাযোগ চলছিল। এ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিজিবির পক্ষ থেকে বিজিপির কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিজিপি বৈঠকে বসতে রাজি হয়।

সর্বশেষ খবর