বুধবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

এনজিওর বেশি সুদ আদায় অন্যায়

নিজস্ব প্রতিবেদক

এনজিওর বেশি সুদ আদায় অন্যায়

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার বলেছেন, সবচেয়ে গরিব মানুষের কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি সুদ নিচ্ছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এনজিও খাত।

এটি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। গতকাল মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির (এমআরএ) ই-সেবা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। গভর্নর বলেন, ‘ক্ষুদ্রঋণে নগদ টাকার বিনিময় কমিয়ে আনলে স্বচ্ছতা বাড়বে। সেবা করার জন্য এনজিও প্রতিষ্ঠানের সৃষ্টি, তবে কেন এত উচ্চ চার্জ নেওয়া হয়? ক্ষুদ্রঋণে নগদ অর্থের ব্যবহার কমাতে হবে। লাভের সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, সুদহার কমানোর বিকল্প নেই। তিনি বলেন, সারা দেশে এমআরএ নিবন্ধিত প্রায় ৮৮১টি ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে ৭৪৭টি প্রতিষ্ঠান প্রায় ২২ হাজার শাখার মাধ্যমে ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা বা এনজিওগুলোর ঋণ আদায়ের হার ৯৮ ভাগের বেশি। গভর্নর বলেন, দেশের ৩ কোটি ৫২ লাখের বেশি পরিবার ক্ষুদ্রঋণ পরিষেবার আওতায় রয়েছে। পরিবারপ্রতি গড়ে চারজন ধরা হলে প্রায় ১৪ কোটি মানুষ, অর্থাৎ দেশের প্রায় ৭৫ শতাংশ মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ক্ষুদ্রঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এনজিওগুলোর জোট ক্রেডিট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ফোরামের (সিডিএফ) তথ্যমতে, গ্রামীণ অর্থায়নের প্রায় ৭৩ শতাংশ জোগান আসে ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে। বিতরণকৃত ঋণের প্রায় ৪০ শতাংশ কৃষি এবং ৩১ শতাংশ বিনিয়োগ হয় ক্ষুদ্র উদ্যোগ খাতে। জিডিপিতে ক্ষুদ্রঋণের অবদান ১৪ দশমিক ৩৭ শতাংশ।

ব্যাংকগুলোকে সতর্কবার্তা দিলেন গভর্নর : ব্যাংকগুলো পণ্যের প্রকৃত বাজারমূল্য যাচাই করতে ব্যর্থ হওয়ায় আমদানিতে ওভার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা পাচার হচ্ছে। আবার অনেক ক্ষেত্রে আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের কারণে সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অবৈধ হুন্ডি ব্যবসার ফলে দেশে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হচ্ছে না। অর্থ পাচার রোধে ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহী (সিইও) ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) কড়া সতর্কবার্তা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ক্রেডিট গ্যারান্টি ডিপার্টমেন্ট, বাংলাদেশ ব্যাংক ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স কর্পোরেশনের (আইএফসি) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে গভর্নর এ সতর্কবার্তা দেন। অনুষ্ঠানে চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটে দেশের অর্থনীতিকে গতিশীল রাখতে ব্যাংকগুলোর সিইওদের উদ্দেশে গুরুত্বপূর্ণ দিক-নির্দেশনা দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর। এলসি খোলার ক্ষেত্রে যেন কোনো ধরনের ওভার ইনভয়েসিং এবং আন্ডার ইনভয়েসিং না হয় সে বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনের জন্য ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের নির্দেশনা দেন।

সর্বশেষ খবর