শনিবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখার অঙ্গীকারে বিজয় দিবস উদ্‌যাপিত

নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা, সাভার ও জাবি প্রতিনিধি

পয়লা পৌষের কুয়াশাঢাকা ভোর। সেই কুয়াশা ভেদ করে উদিত হয়েছে নতুন সূর্য। বিজয় দিবসের সেই রক্তিম সূর্যোদয়ের পর থেকেই গতকাল সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে লাখো মানুষের ঢল নামে। যাদের রক্তের বিনিময়ে পাকিস্তানি শাসন-শোষণের অবসান হয়েছিল, বিশ্বের মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটেছিল স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের, সেই বীর সন্তানদের বিজয়ের ৫১তম বার্ষিকীতে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেছে গোটা জাতি। বিজয়ের এই দিনে বীর সন্তানদের শ্রদ্ধা জানাতে আসা মানুষ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। তারা সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে উৎখাত, মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তিসহ সব ‘আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র’ রুখে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে এবং বিদেশে বাংলাদেশের বিভিন্ন দূতাবাসে দিবসটি উদ্যাপিত হয়েছে। কৃতজ্ঞ জাতির সব শ্রেণি-পেশার মানুষ এর আগে সকালে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের বিনম্র শ্রদ্ধা জানানোর জন্য সমবেত হন। শোক আর রক্তের ঋণ শোধ করার গর্ব নিয়ে উজ্জীবিত জাতি দিবসটি উদ্যাপন করে অন্য রকম অনুভূতি নিয়ে। শীতের কুয়াশা ও ঠান্ডা বাতাস উপেক্ষা করে সর্বস্তরের মানুষ ভোর থেকেই সাভারে স্মৃতিসৌধের বাইরে ও আশপাশের মহাসড়ক এলাকায় এবং ধানমন্ডির বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে সমবেত হতে থাকেন। ভোরের সূর্য ওঠার আগেই ফুল, মাথায় বিজয় দিবস লেখা ব্যান্ড, জাতীয় পতাকা নিয়ে স্মৃতিসৌধে নেমেছিল মানুষের ঢল। বিনম্র চিত্তে সমগ্র জাতি ৩০ লাখ শহীদকে আরও একবার জানিয়ে দিল- ‘আমরা তোমাদের ভুলব না’। দিবসটি উপলক্ষে সরকারি-বেসরকারিভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে ভোরে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে বিজয় দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। ভোর সাড়ে ৬টায় সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে স্মৃতিস্তম্ভের বেদিতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে শুরু হয় শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন। এ সময় শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর। পরে শেখ হাসিনা দলীয় প্রধান হিসেবে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের নিয়ে স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, শাজাহান খান, আবদুর রহমান, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাবেক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন এ বি তাজুল ইসলাম, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বি এম মোজাম্মেল হক ও আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, প্রচার সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সবুর, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, আইন সম্পাদক নজিবুল্লাহ হিরু, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, সদস্য আনিসুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী স্মৃতিসৌধস্থল ত্যাগ করার পর তা সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য খুলে দেওয়া হয়। এ সময় সেখানে সাধারণ মানুষের ঢল নামে। জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বীর সন্তানদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান। মহান বিজয় দিবসে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী এবং আপিল বিভাগের বিচারপতিরা সকাল পৌনে ৭টায় সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মো. শামসুল হক টুকু এবং চিফ হুইপ ও হুইপদের পক্ষে জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মুক্তিযুদ্ধে বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান ও রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২-এ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। একে একে বেদিতে শহীদ পরিবারের সন্তান ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা, বিএনপি, গণফোরাম, যুক্তফ্রন্ট, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানায়।

বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, যুগ্ম-মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, মীর সরাফত আলী সপু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। শ্রদ্ধা জানান ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলাম, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুর নেতৃত্বে সংগঠনের নেতারা, জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির নেতারা, বাংলাদেশের জাসদ সভাপতি শরীফ নূরুল আম্বিয়ার নেতৃত্বে সংগঠনের নেতারা। বিএনপির শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় সামনে যাওয়া নিয়ে হট্টগোল পরিলক্ষিত হয়। এ ছাড়া আওয়ামী যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ, কৃষক লীগ, যুব মহিলা লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, তাঁতী লীগ, জাতীয় পার্টি (জেপি), ছাত্র ইউনিয়ন, যুব ইউনিয়ন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলা একাডেমি, শিল্পকলা একাডেমি, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, মুক্তিযুদ্ধ ’৭১, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদসহ বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন হলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও স্মৃতিসৌধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এ ছাড়া বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল (এমএল), জাবি সাংবাদিক সমিতি, জাকের পার্টি, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ লোকপ্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড কর্মচারী ইউনিয়ন, নজরুল ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ, বাংলাদেশ নেভি প্রাক্তন সদস্য কল্যাণ সংস্থা, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি, গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরাম, ছাত্র ঐক্য ফোরাম, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল, ছাত্র পরিষদ, আশুলিয়া প্রেস ক্লাব, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, বিনিয়োগ বোর্ড, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, বাংলা একাডেমি, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠান, বাংলাদেশ গণআজাদী লীগ, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, গণতন্ত্রী পার্টি, বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্র, নাগরিক ঐক্য, সমাজতান্ত্রিক দল (মার্ক্সবাদী), ঐক্যবদ্ধ ছাত্রসমাজ, মানবাধিকার কাউন্সিল, গণমুক্তি ইউনিয়ন, বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদ, আওয়ামী সাংস্কৃতিক ফোরাম, আওয়ামী তৃণমূল লীগ, শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদ, বাংলাদেশ মুহাজির যুব সংগঠন, দরিদ্র ও প্রতিবন্ধী বিমোচন সমাজ কল্যাণ সংস্থা, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল, জাতীয় বিদ্যুৎ শ্রমিক লীগ, লেবার পার্টি, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগ, বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর সমিতি, সাভার উপজেলা ও পৌর আওয়ামী হকার্স লীগ, সাভার উপজেলা ও পৌর ছাত্রলীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম, বাঁধন কেন্দ্রীয় পরিষদ, বাংলাদেশ আশুলিয়া থানা মুক্তিযোদ্ধাগণ, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, পক্ষাঘাতগ্রস্তদের পুনর্বাসন কেন্দ্র (সিআরপি), বঙ্গবন্ধু পেশাজীবী পরিষদ, কৃষক-শ্রমিক জনতা লীগ, জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়, জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর), বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল, গণবিশ্ববিদ্যালয়, জনতা ব্যাংক, গণমুক্তি ইউনিয়ন, জাতীয় পেশাজীবী পরিষদ, বাংলাদেশ বার কাউন্সিল, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ, সড়ক ও জনপথ প্রকৌশলী সমিতি, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, সজাগ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, টেক্সটাইল গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশন, পরমাণু শক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠান, পল্লী দারিদ্র্য বিমোচন ফাউন্ডেশন, প্রশিকা, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, ন্যাপ, জাতীয় গার্মেন্ট শ্রমিক ফেডারেশন, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, কৃষক দল, কৃষক সমিতি, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, বঙ্গবন্ধু সংসদ, জাসাস, মহিলা পরিষদ, মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদ, ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পুষ্পস্তবক অর্পণ করে।

ধানমন্ডিতে মানুষের ঢল : মহান বিজয় দিবসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাতে গতকাল ভোর থেকেই সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামে। সরকারের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান। এরপর তিনি কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। পরে দলীয় সভানেত্রী হিসেবে আওয়ামী লীগ নেতাদের নিয়ে জাতির পিতার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান তিনি। এরপর ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ, বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, মৎস্যজীবী লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, যুব মহিলা লীগ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগসহ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের ব্যক্তিরা জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ ছাড়া বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করা হয়। ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে মানুষের ঢল নামে।

মুক্তিযোদ্ধাদের মিছিল : মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল নির্বাচন প্রস্তুতি কমিটির উদ্যোগে গতকাল বিজয় র‌্যালি বের করা হয়। এর আগে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে এবং পরে ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা অর্পণ করেন তারা। সংগঠনের সাবেক ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা সফিকুল বাহার মজুমদার টিপুর নেতৃত্বে কমান্ডার মোশারফ হোসেন, কমান্ডার আবুল বাসার, মো. শাহজাহান, জামাল খান, ডাক্তার রহিম, ছিদ্দিক, সন্তান সংগঠনের সেক্রেটারি সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম নয়ন, তানিয়া আকতার শোভাসহ নেতারা র‌্যালিতে অংশ নেন। পরে তেজগাঁওয়ে শাহ্ পন্থী শাহ মাজার মসজিদে জুমার নামাজের সময় বঙ্গবন্ধু, বঙ্গবন্ধুর পরিবার-পরিজনের জন্য বিশেষ দোয়ার আয়োজন করা হয়। এতিমদের মধ্যে বিতরণ করা হয় খাবার।

টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতার সমাধিতে শ্রদ্ধা : টুঙ্গিপাড়ায় আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ ও প্রেসিডিয়াম সদস্য কর্নেল (অব.) ফারুক খানের নেতৃত্বে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে দলের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। এ সময় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন, শ্রম সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, কেন্দ্রীয় সদস্য অ্যাডভোকেট রিয়াজুল কবির কাওছার, ইকবাল হোসেন অপু এমপি, সাহাবুদ্দিন ফরাজী, মারুফা আক্তার পপি, মেরিনা জামান কবিতা, পারভীন জামান কল্পনা, সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম, গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহবুব আলী খান, সাধারণ সম্পাদক জি এম শাহাবুদ্দিন আজম, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ আবুল বাশার খায়ের, সহসভাপতি মো. ইলিয়াস হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল শেখ, পৌর মেয়র শেখ তোজাম্মেল হক টুটুল, টুঙ্গিপাড়া পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ সাইফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক ফোরকান বিশ্বাসসহ গোপালগঞ্জ জেলা, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন। পরে পবিত্র ফাতেহা পাঠ করে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী ৩০ লাখ শহীদ ও পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও মোনাজাত করেন তারা। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য, দীর্ঘায়ু ও সাফল্য কামনায় প্রার্থনা করা হয়। বিজয় দিবস উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। বাদ জুমা জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে অনুষ্ঠিত হয় এই দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভা। আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান। সভাপতিত্ব করেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. মুনিম হাসান। দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা মুফতি রুহুল আমীন।

যুদ্ধজয়ের কিশোর নায়ক সিনেমার প্রদর্শনী : বিজয় দিবস উপলক্ষে তরুণ প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানাতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর চিত্তরঞ্জন দাসের উদ্যোগে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের বিশেষ অনুদানে নির্মিত ‘মুক্তিযুদ্ধের কিশোর নায়ক’ সিনেমা প্রদর্শন করা হয়। গতকাল সন্ধ্যায় কদমতলা ব্রিজ-সংলগ্ন প্রিন্স গার্ডেন কনস্ট্রাকশন সাইট প্রাঙ্গণে প্রদর্শন করা হয় সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত এ সিনেমা, যেখানে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে নুরু নামের ১৬ বছরের এক কিশোরের দুঃসাহসিক অভিযাত্রার কথা তুলে ধরা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর