শুক্রবার, ২০ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

গড়তে হবে শিল্পবিপ্লব উপযোগী মানবসম্পদ : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

গড়তে হবে শিল্পবিপ্লব উপযোগী মানবসম্পদ : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা চতুর্থ শিল্পবিপ্লব সামনে রেখে আমাদের মানবসম্পদকে দক্ষ করে গড়ে তোলার পদক্ষেপ নিয়েছি। চতুর্থ শিল্পবিপ্লব আগমনের যে বার্তা আমরা পাচ্ছি, এখন থেকে যদি সেভাবে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে না পারি, তাহলে ওই জায়গাটা আমরা ধরতে পারব না। কাজেই শিল্পবিপ্লবের উপযোগী মানবসম্পদ গড়ে তুলতে হবে।

গতকাল বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সমন্বয়ে গঠিত বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের অর্থনীতি কৃষিভিত্তিক। সঙ্গে সঙ্গে শিল্পায়নেও যেতে হয়। আমরা শিল্পায়নে যাচ্ছি, কিন্তু একটা পরিকল্পিতভাবে যদি না যাই, আমার ছোট জায়গায় লোকসংখ্যা বেশি সেটা মাথায় রেখেই আমরা ১০০ শিল্পাঞ্চল গড়ে তুলেছি। এর বাইরে কেউ শিল্পাঞ্চল করতে পারবে না। এসব অঞ্চলে  পরিবেশ রক্ষা থেকে শুরু করে সব ধরনের সুবিধা আমরা করে দিচ্ছি। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ যেন হয়, যাতে আমাদের কৃষিজমি বেঁচে যায়। সেদিকে লক্ষ রেখেই কাজ করে যাচ্ছি। শেখ হাসিনা বলেন, বিভিন্ন অঞ্চলভিত্তিক যে বিশ্ববিদ্যালয় করে দিয়েছি, সেখানে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি যারা আছেন, ব্যবসায়ী সম্প্রদায় যারা আছেন, সবাইকে যদি একটু সম্পৃক্ত করে রাখা যায়, তারা সেখানে সহযোগিতা করতে পারেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে যদি একটা উদ্যোগ নেওয়া হয়, তাহলে আমার বিশ্ববিদ্যালয় চালানোর জন্য আমি একটা ফান্ড তৈরি করব। সেভাবে আমরা কিছু কাজ করব। সেটা করতে পারলে বিশ্ববিদ্যালয় অনেকটাই নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে। শিক্ষার্থীদের দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে উপাচার্যদের সরকারপ্রধান বলেন, পড়ালেখার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের দেশের উন্নয়নকাজের উপযোগী করে গড়ে তুলতে হবে। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা অত্যন্ত মেধাবী, তাদের একটু সুযোগ করে দিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ালেখা শেষ করে বিদেশ থেকেও তারা উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে আসতে পারে। ছাত্রছাত্রীদের উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের আরও দায়িত্বশীল ও মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন পূরণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় সোনার ছেলে গড়ে তুলতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যেন সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ থেকে দূরে থাকে সে লক্ষ্যে পড়ালেখার পাশাপাশি খেলাধুলা, সংস্কৃতিচর্চা ও সৃজনশীল কাজের মধ্যে তাদের যুক্ত রাখতে হবে। এ লক্ষ্যে আন্তবিশ্ববিদ্যালয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আবার চালুর উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।

 তিনি বলেন, একসময় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় অস্ত্রের ঝনঝনানি ছিল। তবে আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর অস্ত্রের ঝনঝনানি নেই এবং দেশে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদকে কঠোর হস্তে দমন করা হয়েছে। সরকার তরুণদের দক্ষতা উন্নয়নে গুরুত্ব দিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুবকরা পড়ালেখা করে চাকরির পেছনে না ছুটে নিজেরাই যেন উদ্যোক্তা হয়ে অন্যদের চাকরি দিতে পারে সে লক্ষ্যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে তখন দেশে শিক্ষার হার ও মান বাড়ে। এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, তার সরকার শিক্ষার উন্নয়ন, গবেষণা, উৎপাদন ও উৎকর্ষতার পাশাপাশি দক্ষতা উন্নয়নে গুরুত্ব দিয়েছে। একই সঙ্গে পরিকল্পিতভাবে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রেখে সরকার ধীরে ধীরে দেশকে শিল্পায়নের দিকে এগিয়ে নিচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। এ সময় শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছে। উন্নয়নের এ ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ২০৪১ সালে উন্নত-সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা তাঁদের নিজ নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরলে প্রধানমন্ত্রী এসব সমস্যা পর্যায়ক্রমে সমাধানের আশ্বাস দেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল ও কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের ৪৮টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

সর্বশেষ খবর