রবিবার, ৫ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

আঁই এহন হন্ডে যাইয়ুম

ইমরান এমি, চট্টগ্রাম

পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ফরিদ এখন আর নেই। এটা বিশ্বাসই করতে পারছেন না তার সহধর্মিণী রাশেদা আক্তার। সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী থেকে তিনি ছুটে এসেছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। হাসপাতালের বাতাসে তখনই শুরু হয়েছে স্বজনদের আহাজারি। চোখের কোণের নোনা জ্বলে বন্যা বয়ে চলছে রাশেদা আক্তারের। মুহূর্তেই নীরবতা ভেঙে হাউমাউ করে কাঁদতে লাগলেন, ‘আঁই এহন হন্ডে যাইয়ুম, হন্ডে থাইক্কম তিন্ন মেয়ে লই। এ আল্লাহ কি দোষ গরগি আঁর জামাইরে লই গেইয়ু গু, আঁর অবুঝ পোয়াছা চাইবু হনে’ (আমি এখন কোথায় যাব, কোথায় থাকব তিন মেয়ে নিয়ে। ও আল্লাহ কি অপরাধ করছি আমার স্বামীকে নিয়ে গেলেন আমাদের কাছ থেকে, আমার অবুঝ সন্তানদের এখন কে দেখাশোনা করবে)। গতকাল সীতাকুণ্ড উপজেলার কদমরসুল এলাকায় সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে বোতল বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন কারখানার বাসের হেলপার মো. ফরিদ। তিনি উপজেলার ফৌজদারহাট বাংলাবাজার এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। রাশেদা আক্তারের ভাষ্য অনুযায়ী তাদের ৩ কন্যা সন্তান রয়েছে। ফরিদই তাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী। বাংলাবাজার এলাকায় তারা একটি ভাড়া বাসায় থাকেন। এখন ৩ সন্তানকে নিয়ে কীভাবে জীবন যুদ্ধে টিকে থাকবেন- তা ভেবে চোখে অন্ধকার দেখছেন ফরিদ পত্নী রাশেদা আক্তার। এদিকে সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে বোতল বিস্ফোরণ গিয়ে পড়েছে ঘটনাস্থল থেকে এক কিলোমিটার দূরের কদমরসুল বাজারের একটি দোকানে। বিস্ফোরিত একটি অংশ পড়ে নিহত হয়েছেন শামসুল আলম (৬৫) নামে একজন। শামসুল আলমের মেয়ের জামাই মো. সালাউদ্দিন জানান, শামসুল আলম জায়গা জমির ব্রোকার ছিলেন। প্রতিদিন আছরের সময়ে তার বন্ধুর দোকানে গিয়ে তিনি পত্রিকা পড়তেন এবং বন্ধুর সঙ্গে আড্ডা দিতেন। তিনি বলেন, ‘বাসায় থাকার সময় বিস্ফোরণের শব্দ শুনি। দরজায় গিয়ে দেখি দরজার হুক ভেঙে সব এলোমেলো হয়ে গেছে। এ সময় বাজার থেকে কল আসে- বিস্ফোরণে আমার শ্বশুর আহত হয়েছেন। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করি এবং তিনি ঘটনাস্থলে মৃত্যুবরণ করেছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘শামসুল আলম তিন মেয়ে ও এক ছেলের জনক।’ তিন মেয়ে বিবাহিত ও ছেলে মতিউর রহমান রাসেল এমবিএ অধ্যায়নরত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর