সোমবার, ৬ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

ভূমিকম্প ভেবেছিলেন অনেকেই

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভূমিকম্প ভেবে দৌড় দিয়েছিলেন সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকার বিভিন্ন ভবনের অনেক বাসিন্দা। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার হওয়া তুরস্ক এবং সিরিয়ায় প্রলয়ঙ্করী ভূমিকম্প মনে করে তারা দ্রুত ভবন থেকে বের হয়ে আসছিলেন। বাইরে এসে অনেকেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন। অন্যের কাছে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় তারা বলেন, এ যাত্রায় হয়তো প্রাণে বেঁচে গেছি! গতকাল বেলা পৌনে ১১টার দিকে সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় শিরিন ভবনে ঘটে যাওয়া ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণকে শুরুতে ভূমিকম্প ভেবেছিলেন আশপাশের বাসিন্দারা। সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে কর্মরত প্রকৌশলী শামসুল আলম খোকন বলেন, বিস্ফোরণের শব্দ এত বিকট ছিল যে ঘটনাস্থল থেকে ৪০০ মিটার দূরে থাকা আমার অফিসের দরজার গ্লাস ভেঙে গেছে। আমি মনে করেছিলাম, আমার অফিসেই কোথাও বিস্ফোরণ হয়েছে। পরে গিয়ে দেখি ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ প্রিয়াঙ্গন শপিং সেন্টারের পাশে। মিরপুর রোডের প্রিয়াঙ্গন শপিং সেন্টারে বেলা পৌনে ১১টার দিকে সবে নিজের টেইলারিং শপে গিয়ে বসেন মাহবুব। কয়েক মিনিট না যেতেই হঠাৎ বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে গোটা ভবন। আতঙ্কে দ্বিতীয় তলা থেকে তিনি দৌড়ে নিচে নেমে আসেন। শুরুতে তিনিও ভেবেছিলেন ভূমিকম্প হয়েছে। তবে নেমে দেখতে পান, পাশের একটি ভবন ছেয়ে গেছে কালো ধোঁয়ায়। ভয়ে বেশ হকচকিয়ে যাওয়া মাহবুব ততক্ষণে বুঝতে পারেন তাদের মার্কেটে নয়, পাশের সেই ভবনেই ঘটেছে ভয়ানক কিছু। তিনি বলেন, সবে দোকানে গিয়ে বসেছি। তখনই শুনতে পাই হঠাৎ বিকট শব্দের বিস্ফোরণ। রীতিমতো পুরো ভবন কেঁপে ওঠে। মনে করেছিলাম ভূমিকম্প। তুরস্ক এবং সিরিয়ায় ঘটে যাওয়া ভূমিকম্পের দৃশ্য তো টিভিতে আমরা দেখেছি! ওই দৃশ্যগুলো আমাদের চোখে গেঁথে আছে। পরে দৌড়ে নিচে নেমে দেখি পাশের ভবনে ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ। প্রিয়াঙ্গন শপিং সেন্টারের তৃতীয় তলায় একটি টেইলার্সের মালিক মিনার হোসেন বলেন, বিস্ফোরণের সঙ্গে সঙ্গে একটি বস্তু উড়ে এসে আমাদের দোকানের গ্লাসে লাগে। গ্লাস ভেঙে দোকানে থাকা নান্নু ও মো. হোসেন নামে দুই কর্মচারী আহত হয়েছেন। এ ছাড়া পাশের দোকানের জিল্লুর নামে এক কর্মচারী আহত হন। আমরাও প্রথমে মনে করেছিলাম ভূমিকম্প।

পড়ে আছে পেঁপে, নেই দোকানদার : শিরিন ভবনের পশ্চিম-উত্তর কোণে নিচে একটি টুকড়িতে পেঁপে নিয়ে বসেছিলেন এক ব্যক্তি। বিস্ফোরণের পর অনেক সময় গড়ালেও তার খোঁজ মেলেনি, স্যান্ডেল আর পেঁপেসহ টুকড়ি পড়েছিল সড়কেই। ঘটনাস্থলে দেখা যায়, ৩০টির মতো পেঁপে আছে টুকড়িতে। একটি পেঁপে পলিথিনে ভরা। স্থানীয় দোকানিদের ধারণা, বিস্ফোরণের সময় তার কাছে ক্রেতাও ছিল, দাঁড়িপাল্লা পড়ে আছে উপুড় হয়ে। আশপাশের দোকানিরাও তার খোঁজ দিতে পারেনি। প্রত্যক্ষদর্শী সানা উল্লাহ বলেন, ঘটনার পর অনেককে রাস্তায় আহত হয়ে পড়ে থাকতে দেখেছেন। বিস্ফোরণ হওয়া ভবনের তৃতীয় তলা থেকে একজন লাফ দিতে চেয়েছিলেন। চিৎকার করে তিনি রশি চাচ্ছিলেন। রশি দিতে পারিনি। তবে অভয় দিয়েছি যে, আগুন নেই, আপনি সিঁড়ি দিয়ে নেমে যান। পরে ওই ব্যক্তি সিঁড়ি দিয়েই নামেন।

সর্বশেষ খবর