রবিবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

পাহারা জোরদারের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক

পাহারা জোরদারের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

মার্কেটগুলোতে পাহারা জোরদার এবং নিজস্ব আগুন নেভানোর ব্যবস্থা রাখার আহ্বান জানিয়ে দোকান মালিকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রত্যেকটি মার্কেটে যারা দোকান মালিক এবং মালিক সমিতি আছেন, তাদের আমি বলব- একটা সময় আগুন লাগছে। ওই সময়টা তাদের পাহারার ব্যবস্থা করা উচিত। তাদের প্রত্যেকের দোকানে তাদের নিজস্ব লোক রাখা দরকার, তাদের সতর্ক থাকা দরকার। আগুন লাগলে সঙ্গে সঙ্গে আগুন নেভানোর জন্য ফায়ার সার্ভিস যায়, তবে তাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনাও থাকতে হবে। গতকাল গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের সভায় তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বিএনপি-জামায়াত চক্রের অগ্নি সন্ত্রাসের কথা ভুলে না যেতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, কারণ তারা অন্য কোনো রূপে এর পুনরাবৃত্তি ঘটাতে পারে। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোটের অগ্নি সন্ত্রাসের কথা ভুলে যাবেন না। তাদের অগ্নি সন্ত্রাস অন্য কোনো উপায়ে আছে কি-না বা তারা বিভিন্ন উপায়ে তা ঘটিয়েছে কি না- সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। অর্থনীতিকে পঙ্গু করে সরকার উৎখাত করতে বিএনপি-জামায়াত ভিন্নরূপে বিভিন্ন মার্কেটে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটাচ্ছে কি না তা খতিয়ে দেখতে হবে। তিনি বলেন, সেই অগ্নি সন্ত্রাসীরা এখন কি ভিন্ন পথ ধরল কি না এটাই আমাদের দেখতে হবে। আগে তারা সাধারণ মানুষ পুড়িয়েছে, এখন তারা অর্থনীতিকে পঙ্গু করার পথে পা দিচ্ছে কি না এর রহস্যটা বের করতে হবে। শেখ হাসিনা বলেন, কিছু রাজনৈতিক দল ঈদের পর আন্দোলন করবে, অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দেবে। অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দিয়ে সরকারকে উৎখাত করবে। কিন্তু এ সাধারণ মানুষগুলো কী অপরাধ করল? সাধারণ ব্যবসায়ীরা কী অপরাধ করল? সাধারণ ক্রেতারা কী অপরাধ করল? তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ যেখানে কেনাবেচা করেন সেই জায়গাগুলো পুড়িয়ে দেওয়া, সাধারণ মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করা ঠিক নয়। আর ব্যবসায়ীরা সারা বছর আকাক্সক্ষা করে বসে থাকেন এ সময় একটা ব্যবসা করবেন। এগুলো আমার মনে হয় সহজে ছেড়ে দেওয়া উচিত নয়। বিএনপি-জামায়াতের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, অগ্নিসন্ত্রাস, বিএনপির সেই একটানা অগ্নিসন্ত্রাস-প্রায় সাড়ে তিন হাজার গাড়ি, ২৯টি ট্রেন, প্রায় আট-নয়টি লঞ্চ, ৫০০টি স্কুল, ৭০টি সরকারি অফিস, ছয়টি ভূমি অফিস সেগুলো তো তারা পুড়িয়ে দিয়েছিল। ৩ হাজার ২০০ মানুষকে তারা পুড়িয়েছে, পাঁচ শ’র ওপরে মৃত্যুবরণ করেছে, এখনো সেই পোড়া মানুষগুলো মানবেতর জীবনযাপন করছে। পরপর আগুন লাগা সন্দেহের কারণ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঠিক ৬টার পর আগুনটা লেগেছে। এটার ওপর নজরদারি বাড়াতে হবে। অন্যান্য মার্কেটগুলোকে সতর্ক থাকতে হবে।

যদিও ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে প্রত্যেকটি মার্কেটকে বারবার সতর্ক করা হচ্ছে। তাদের মার্কেটের যে অবস্থা সেখানে যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। কিন্তু এরপর চারটি দুর্ঘটনাকে যদি আমরা দেখি তাহলে এটা কি আদতেই আসলেই কোনো দুর্ঘটনা! না কি এর পেছনে কোনো কারসাজি আছে? সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আগামীতে কেউ যাতে এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে না পারে, আমি শুধু ঢাকা শহরে না সারা দেশের সবাইকে সতর্ক করছি, সবাই যেন সতর্ক থাকেন। কোথাও আগুন লাগলে সেখানে অহেতুক ভিড় করে কাজে বাধা সৃষ্টি না করার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আগুন লাগলে দেখার জন্য মানুষের ভিড় কমাতে হবে। দাঁড়িয়ে না দেখে সবাই যদি এক বালতি করে পানি নিয়ে আসে তাও তো আগুনটা নেভাতে সাহায্য হয়। সেটা না করে সবাই দেখতে আসে, সেলফি তোলে, ফটো তোলে, এটা কী ধরনের কাজ! যারা কাজে বাধা দেয় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখানে যারা কাজ করবে, কাজে যেন কেউ বাধা দিতে না পারে। আর যারা বাধা দেবে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। ফায়ার সার্ভিসের কাজে যারা বাধা সৃষ্টি করে তাদের সতর্ক করে শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবাজারের অগ্নিকান্ডের পর যারা ফায়ার সার্ভিস ভেঙেছে, বঙ্গবাজারে যারা বাধা দিয়েছে, ভিডিও ফুটেজ দেখে তাদের শনাক্ত করা হচ্ছে, গ্রেফতার করা হচ্ছে, তাদের শাস্তি দেওয়া হবে। বৈঠকে দলের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ, ওবায়দুল কাদের, কাজী জাফরউল্লাহ, ড. আবদুর রাজ্জাক, রমেশ চন্দ্র সেন, রশিদুল আলম, লে. কর্নেল (অব.) মুহম্মদ ফারুক খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, মাহবুব-উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ডা. দীপু মনি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া দলের প্রচার সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দফতর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ বৈঠকে অংশ নেন।

সর্বশেষ খবর