রাজধানীর নিউমার্কেট সংলগ্ন ঢাকা নিউ সুপার মার্কেটে আগুন নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি মালামাল উদ্ধারেও তৎপর ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সেখানে আগুন নিয়ন্ত্রণে ব্যস্ত ছিল ফায়ার সার্ভিস। ব্যবসায়ীদের মালামাল উদ্ধারে অনন্য দৃষ্টান্ত রেখেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি), সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, বিজিবি, র্যাব, আনসার ও স্বেচ্ছাসেবীরা। আগুন নিয়ন্ত্রণ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি সব বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ্য ছিল ব্যবসায়ীদের মালামাল রক্ষা করা। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে পাঠাতেও দেখা গেছে। জানা গেছে, গতকাল ভোর ৫টা ৪০ মিনিটে নিউ সুপার মার্কেটে আগুন লাগে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের ২৮টি ইউনিট কাজ করে। যানজট নিয়ন্ত্রণে কাজ করে ট্রাফিক পুলিশ। উৎসুক জনতা যেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি করতে না পারে সে দায়িত্ব পালন করে ডিএমপি। ব্যবসায়ীরা তাদের দোকানের মালামাল বাঁচাতে চেষ্টা চালান। অনেকে চোখের সামনে সব পুড়ে যেতে দেখে করেছেন আর্তনাদ। এরই মধ্যে এক ব্যক্তিকে দেখা যায় ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে উঠে আগুনের দিকে মুখ করে মোনাজাত করছেন, যাতে দ্রুত তা নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুন নেভাতে এবং মালামাল উদ্ধারে এগিয়ে আসে সেনা-নৌ-বিমান বাহিনীর অগ্নিনির্বাপণ সাহায্যকারী দল। এ ছাড়া র?্যাবও আগুন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করেছে। ফায়ার সার্ভিসকে সহায়তা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিজিবি মোতায়েন করা হয়। প্রস্তুত ছিল বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টার। মোতায়েন করা হয় আনসার। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এসব কর্মকা- সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে ও প্রশংসা পায় সাধারণ মানুষের। সরেজমিনে দেখা গেছে, ইউনিফর্ম পরিহিত ভেজা শরীরে একের পর এক কাপড়ের বস্তা নামিয়ে আনছে পুলিশ। শান্ত, গৌতম, নেহাদ, পরান, উজ্জ্বল, সাকিব, গোপাল, হাবিব, রাকিবসহ একাধিক পুলিশ সদস্য মার্কেট থেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিজেদের কাঁধে করে কাপড়ের বস্তা নামিয়ে আনেন। তারা একদিকে বাঁশিতে ফুঁ দিয়ে জনতাকে সরিয়ে দিচ্ছেন, অন্যদিকে ব্যবসায়ীদের মালামাল নিরাপদে পৌঁছে দিচ্ছেন। এ ছাড়া বিজিবি, র্যাব, আনসার বাহিনীকেও বস্তায় করে মালামাল উদ্ধার করতে দেখা গেছে। বাহিনীর সদস্যদের মনোবল চাঙা রাখতে ও প্রেরণা দিতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন সংশ্লিষ্ট বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) ড. খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, ঘটনার শুরু থেকেই পুলিশ অগ্নিনির্বাপণে সহায়তা করেছে। এছাড়াও যে সম্পদের ক্ষতি হতে থাকে সেসব সম্পদ রক্ষায় পুলিশ আন্তরিকভাবে সহায়তা করেছে। র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, র্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতা করেন। পাশাপাশি মাইকিং করে উৎসুক জনতাকে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সার্বক্ষণিক কাজ করেন। দোকান থেকে মালামাল বের করে দোকান মালিকদের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে সহযোগিতা করে র্যাব। বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সহকারী পরিচালক মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ও সময় ৯ প্লাটুন আনসার মোতায়েন করা হয়। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আনসার সদস্যরা মার্কেটের ভিতরে ঢুকে মালামাল বের করতে এবং সেগুলো নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে ব্যবসায়ীদের সহায়তা করেন। অগ্নিনির্বাপণের সময় ৫ জন আনসার সদস্য আহত হন।