রবিবার, ১৪ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা
দক্ষিণ এশিয়া

খেলাপি ঋণে শ্রীলঙ্কার পরেই বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে খেলাপি ঋণের হারে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। এ ঋণের পরিমাণ প্রায় ৯ শতাংশ। প্রথম অবস্থানে রয়েছে শ্রীলঙ্কা। দেশটির খেলাপি ঋণ প্রায় ১১ শতাংশ। ২ শতাংশ খেলাপি ঋণ নিয়ে সবার নিচে অবস্থান করছে নেপাল। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের খেলাপি ঋণ বাড়ছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো নিয়ে বিশ্বব্যাংকের আঞ্চলিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর মধ্যে ভারতের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ ৫ শতাংশ, মালদ্বীপের ৬ শতাংশের কম, পাকিস্তান ও ভুটানের ৮ শতাংশের কম। প্রতিবেদনে বলা হয়, অধিক আমদানি ব্যয়, গ্রহীতারা নিয়মিত ঋণ পরিশোধ না করা ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার দুর্বল তদারকির কারণে বাংলাদেশে খেলাপি ঋণ বাড়ছে। ঋণের ৯ শতাংশ সুদের সীমা ও কম সুদের বাংলাদেশ ব্যাংকের পুনরর্থায়ন তহবিলের কারণে ব্যাংক ঋণ বাড়ছে। অন্যদিকে গত বছরের শেষ প্রান্তিকে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ও আগের প্রান্তিকের চেয়ে আমানতের প্রবৃদ্ধি কমে গেছে। বাংলাদেশের মতো ভুটানের অবস্থাও একই ছিল। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত ও পাকিস্তানের আমানতের প্রবৃদ্ধির চেয়ে ঋণের প্রবৃদ্ধি বেশি ছিল। আর নেপাল ও শ্রীলঙ্কায় আমানতের প্রবৃদ্ধির চেয়ে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি কম ছিল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী গত বছরের অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার ৬৫৭ হাজার কোটি টাকা। আগের বছরের অর্থাৎ ২০২১ সালের অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে ব্যাংক খাতে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৩ হাজার ২৭৪ কোটি টাকা। সে হিসেবে অবশ্য এক বছরে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১৭ হাজার ৩৮৩ হাজার কোটি টাকা বেড়েছে। এটা অবশ্য শুধু খেলাপি ঋণের হিসাব। পুনঃতফসিল ও পুনর্গঠন করা ঋণ, আদালতের স্থগিতাদেশের কারণে খেলাপি দেখানো যাচ্ছে না এমন ঋণ ও বিশেষ নির্দেশিত হিসাবের ঋণকে খেলাপি হিসেবে দেখানোর পক্ষে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। আইএমএফের হিসাব অনুসরণ করলে খেলাপি ঋণ দাঁড়ায় প্রায় ৩ লাখ কোটি টাকা। চলতি বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশের ৪৫০ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন করেছে আইএমএফ। আইএমএফ ঋণের শর্ত দিয়েছিল, ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের হার কমাতে হবে, যাতে দেশের ব্যাংক খাত বড় ধরনের কোনো ঝুঁকিতে না পড়ে। সংস্কারের এ উদ্যোগ নেওয়ার মধ্যেই ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ যাতে অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে না যায় সেজন্য গত ডিসেম্বরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রজ্ঞাপন জারি করে বিশেষ ছাড় দেয়। শিথিল করে ঋণখেলাপি হওয়ার নীতিমালা।

সর্বশেষ খবর