ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য একটি বৃহৎ পর্যবেক্ষক দল পাঠানোর পরিকল্পনা করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। গতকাল ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে রাষ্ট্রদূত মিলার এ ঘোষণা দেন।
তিনি জানান, ইইউর এই পর্যবেক্ষক মিশন এখনো চূড়ান্ত হয়নি, তবে এতে ১৫০ থেকে ২০০ জন সদস্য থাকতে পারে। তাদের মধ্যে কিছু সদস্য ভোটের প্রায় ছয় সপ্তাহ আগে এবং বাকিরা ভোটের এক সপ্তাহ আগে পৌঁছাবেন।
মিলার বলেন, ২০০৮ সালের পর এটাই প্রথমবারের মতো ইইউ বাংলাদেশের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল পাঠাতে যাচ্ছে। ভোট চলাকালীন স্থানীয় পর্যবেক্ষক মোতায়েনেও সহায়তা করবে ইইউ।
ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে দুই পক্ষ সুশাসন ও সাংবিধানিক সংস্কার, নির্বাচন প্রস্তুতি, বিচার বিভাগ ও শ্রম আইন সংস্কার, বাংলাদেশ ও ইইউর মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক এবং দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করেন। মিলার জুলাই জাতীয় সনদের প্রশংসা করে একে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি দলিল হিসেবে আখ্যা দেন, যা শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক রূপান্তর নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে। তিনি সম্প্রতি অনুমোদিত শ্রম আইন সংস্কার এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা জোরদারে নেওয়া পদক্ষেপগুলোকেও উল্লেখযোগ্য সাফল্য বলে বর্ণনা করেন।
তিনি বলেন, আসন্ন নির্বাচন বাংলাদেশের ভাবমূর্তি পুনর্গঠনের এক সুযোগ। অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য ভোট আয়োজনের জন্য নির্বাচন কমিশনের প্রচেষ্টায় ইইউর অব্যাহত সমর্থন থাকবে। বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উত্তরণের প্রক্রিয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন সহায়তা অব্যাহত রাখবে। দুই পক্ষ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক আরও গভীর করার উপায় নিয়েও আলোচনা করেন। তারা মানব পাচার ও অবৈধ অভিবাসন মোকাবিলায়ও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার বিষয়ে সম্মত হন।
প্রধান উপদেষ্টা জানান, চট্টগ্রাম বন্দরের লালদিয়া টার্মিনাল উন্নয়ন ও পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ শিগগিরই বৈশ্বিক শিপিং জায়ান্ট এ পি মোলার-মায়ার্স্ক এর সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করবে।
রাষ্ট্রদূত মিলার বলেন, ডেনমার্কভিত্তিক এই কোম্পানি প্রায় ৮০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছে, যাতে লালদিয়াকে অঞ্চলটির অন্যতম আধুনিক টার্মিনাল হিসেবে গড়ে তোলা যায়।