বুধবার, ১৭ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

ভোগের নয় ত্যাগের রাজনীতি শিখেছি : রাষ্ট্রপতি

পাবনা প্রতিনিধি

ভোগের নয় ত্যাগের রাজনীতি শিখেছি : রাষ্ট্রপতি

‘বিশিষ্ট বাম নেতা আমিনুল ইসলাম বাদশা, কমরেড প্রসাদ রায়, অমূল্য লাহেড়ীসহ বিভিন্ন নেতার সঙ্গে কারাগারে থেকেছি। রাতের পর রাত তাদের থেকে কখনো ভোগের রাজনীতি শিখিনি, ত্যাগের রাজনীতি শিখেছি। তাই তো আজ আল্লাহ আমাকে এ চেয়ারে বসিয়েছেন। ৭৫ থেকে ৮০ জনকে বিভিন্ন সময়ে চাকরি দিয়েছি, কখনোই কারও কাছ থেকে একটি পয়সাও নিইনি। পয়সা তো দূরের কথা কখনো একটা লাউ কদুও নিইনি।’ নিজ জেলা পাবনায় চার দিনের সফরের দ্বিতীয় দিন গতকাল সকালে পাবনা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ মন্তব্য করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। বেলা সোয়া ১১টার দিকে রাষ্ট্রপতি পাবনা প্রেস ক্লাবে পৌঁছলে তাঁকে স্বাগত জানান প্রেস ক্লাবের সাবেক ও বর্তমান নেতারা। পরে ক্লাবের ভিআইপি মিলনায়তনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি।

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন প্রেস ক্লাবে তাঁর নানা স্মৃতিময় দিনগুলোর কথা তুলে ধরেন। নষ্টালজিয়ায় রাষ্ট্রপতি তাঁর ছাত্রজীবনের রাজনীতি ও সাংবাদিকতার স্মৃতিচারণা করেন। সাংবাদিকতা জীবন শুরু করেন বাংলার বাণী পত্রিকায় জেলা প্রতিনিধি হিসেবে। সে সূত্রেই পাবনা প্রেস ক্লাবের ২২তম সদস্য হন। আবার দেশেরও ২২তম রাষ্ট্রপতি। প্রেস ক্লাবের খোলা ছাদে বসে সহকর্মীদের সঙ্গে আড্ডা দিতেন। ছাত্র রাজনীতি করতে গিয়ে জেলে কাটানো দিনগুলোর কথাও উল্লেখ করেন রাষ্ট্রপতি। প্রেস ক্লাবের সভাপতি এ বি এম ফজলুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সম্পাদক সৈকত আফরোজ আসাদের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মাছারাঙা টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও পাবনা প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু, সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রবিউল ইসলাম রবি, শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ শিবজিত নাগ। সকাল ১০টায় রাষ্ট্রপতি পাবনা বিসিক শিল্পনগরীতে স্কয়ার সায়েন্স অ্যান্ড লাইফ প্ল্যান্ট উদ্বোধন করেন। বিকালে সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ মাঠে নাগরিক সংবর্ধনায় যোগ দেন।

 

ভেসে নয়, রাজপথ থেকেই আন্দোলন-সংগ্রাম করে বঙ্গভবনে গিয়েছি -রাষ্ট্রপতি

দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন জানিয়েছেন, তিনি ভেসে আসেননি, দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে পাবনার রাজপথ থেকে বঙ্গভবনে গিয়েছেন। গতকাল বিকালে পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ মাঠে আয়োজিত নাগরিক কমিটির সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে রাষ্ট্রপতি এ কথা বলেন।

রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদে নির্বাচিত হওয়া প্রসঙ্গে মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘আমি ভেসে আসিনি, একেবারে রাজপথ থেকেই বঙ্গভবনে গিয়েছি। পাবনার রাজপথ থেকে বঙ্গভবনে গিয়েছি’। রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমি বঙ্গবন্ধুর সারাসরি ছয়বার দেখা বা ছোঁয়া পেয়েছি। কারাগারে কারাবরণ করতে হয়েছে, চরম অত্যাচারিত হয়েছি। রাতের আঁধারে তুলে নেওয়া হয়েছে। হাতকড়া পরানো হয়েছে, ডান্ডাবেড়ি পরানো হয়েছে’। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে পাবনার সংসদ সদস্যরা রাষ্ট্রপতির কাছে স্থানীয় বিভিন্ন দাবি-দাওয়া তুলে ধরেন। রাষ্ট্রপতি তাদের দাবিগুলো শোনেন এবং তা পূরণের আশ্বাস দেন। আগামী সেপ্টেম্বরে পাবনা থেকে ঢাকা সরাসরি ট্রেন চালুর ঘোষণা দেন রাষ্ট্রপ্রতি। অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা বেবী ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন ডেপুটি স্পিকার ও পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য শামসুল হক টুকু, পাবনা-৫ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্স, পাবনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য নরুজ্জামান বিশ্বাস, পাবনা-৩ আসনের সংসদ সদস্য মকবুল হোসেন, পাবনা-২ আসনের সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবির, নারী সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য নাদিরা ইয়াসমিন জলি, পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল রহিম লাল, নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক অঞ্জন চৌধুরী, সদস্য সচিব অধ্যাপক শিবজিত নাগ ও আবদুল মতীন খান এবং পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাফিজা খাতুন।

 

 

সর্বশেষ খবর