রবিবার, ২১ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

পতন ঘনিয়ে এসেছে সরকারের

নিজস্ব প্রতিবেদক ও লালমনিরহাট প্রতিনিধি

পতন ঘনিয়ে এসেছে সরকারের

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকারের পতন ঘনিয়ে এসেছে। জনগণ রাজপথে নেমে এসেছে। তিনি বলেন, ১০ দফা নয়, ২০ দফা নয় দাবি একটাই ‘শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগ। দফা এক- শেখ হাসিনার পদত্যাগ’। নিরপেক্ষ তত্তাবধায়ক সরকার ছাড়া দেশে নির্বাচন হবে না। এই দাবি শুধু আমাদের নয়, দেশের জনগণেরও। লুটেরা এই সরকার ক্ষমতায় থাকুক তা এক মুহূর্তও চান না দেশের শান্তিপ্রিয় মানুষ। গতকাল বিকালে লালমনিরহাট কালেক্টরেট মাঠে জেলা বিএনপির বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দেশের মহানগরসহ ১৮টি সাংগঠনিক জেলায় পূর্ব-ঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচির অংশ হিসেবে জেলা বিএনপি এ সমাবেশের আয়োজন করে। নির্দলীয়-নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন, খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ ১০ দফা দাবিতে সারা দেশে এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে বিএনপি। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজধানীতে মতিঝিল পীর জঙ্গী মাজারের সামনে এ জনসমাবেশের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি। এতে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, জনগণের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে, দেশের মানুষ আর এই সরকারকে চায় না। আজকে সারা দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে, তারা এই স্বৈরাচার সরকারের হাত থেকে মুক্তি চায়। যেখানেই আওয়ামী লীগ সেখানেই গণতন্ত্র হরণ হয়েছে। দেশে আজ গণতন্ত্র নেই। গায়ের জোরে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এই সরকার যা খুশি তা করে যাচ্ছে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুর পরিচালনায় ঢাকায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, দলের কেন্দ্রীয় নেতা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, আবদুস সালাম আজাদ, মীর সরাফত আলী সপু, রাকিবুল ইসলাম বকুল, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন আহম্মেদ অসীম, যুবদলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, স্বেচ্ছাসেবক দলের এস এম জিলানী, ইয়াছিন আলী, কৃষকদলের শহীদুল ইসলাম বাবুল, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক খান, জাসাসের হেলাল খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নবী উল্লাহ নবী, আ ন ম সাইফুল ইসলাম, তানভীর আহমেদ রবীন, মহানগর দক্ষিণ শ্রমিক দলের আহ্বায়ক মো. সুমন ভূইয়া ও সদস্য সচিব বদরুল আলম সবুজ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য অ্যাডভোকেট মকবুল হোসেন সরদার, হাজী নাজিম, শ্যামপুর থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলীম আল বারী জুয়েল প্রমুখ। এ ছাড়া গতকাল সকালে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব খুলনা ও নেত্রকোনাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ক্ষমতাসীন দলের হামলা ও পুলিশের গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা জানান। বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও লালমনিরহাট জেলা বিএনপির সভাপতি আসাদুল হাবিব দুলুর সভাপতিত্বে ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান বাবলার পরিচালনায় এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। এ ছাড়া বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার হাসান রাজীব প্রধান, জেলা মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি হাফিজুর রহমান, বিএনপি নেতা এ কে এম মমিনুল হক, রোকন উদ্দিন বাবুল, মোস্তফা সালাউজ্জামান ওপেল, জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। মির্জা ফখরুল বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের পাশাপাশি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। বর্তমান নির্বাচন ঠুঁটো জগন্নাথ। এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো ভোটই সুষ্ঠু হবে না। সরকারের ভয়াবহ দুঃশাসনে নিষ্ঠুরতা, নিপীড়ন, উৎপীড়ন ও সহিংস আক্রমণে বাংলাদেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতাসহ গণতান্ত্রিক অধিকার এখন ক্ষতবিক্ষত। গণতন্ত্রকামী মানুষের বিরুদ্ধে সরকার এখন বন্দুকের ভাষা ব্যবহার করছে। খুলনা জেলা ও মহানগরের শান্তিপূর্ণ জনসমাবেশে পুলিশের ন্যক্কারজনক হামলা, গুলিবর্ষণ এবং নেত্রকোনা জেলায় গ্রেফতারকৃতদের মুক্তি এবং দোষী পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘দেশটাকে এই সরকার কারাগারে পরিণত করেছে। কোথায়ও শান্তি নেই। অশান্তির আগুনে জ্বলছে পুরো দেশ। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে আজ মানুষের নাভিশ্বাস। কাঁচাবাজার থেকে শুরু করে সব জিনিসের দাম হু হু করে বাড়ছে। জনগণের কোনো উন্নয়ন হয়নি। যা হয়েছে সব আওয়ামী লীগের। এখন আমাদের দাবি হচ্ছে অবৈধ ফ্যসিবাদ সরকারের পদত্যাগ। এরপর নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন।

কৃষক আন্দোলনের নেতা নুরল দীনের মতো আবারও আন্দোলনের ডাক এসেছে- কোনটে বাহে জাগো সবায়। আজকে আবার সেই ডাক এসেছে। আজকে আবার কারাগারের অভ্যন্তর থেকে গৃহবন্দি থেকে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে।’

 

 

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর