দেশে ডেঙ্গুজ্বরে মৃত্যু সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। এরই মধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন ৫৯৭ জন। গতকাল চারজনের মৃত্যু হয়েছে, আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৫৩৪ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ২৫ হাজার ৩৪২ জন।
স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, গতকাল আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫৮৯ জন। আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি ৯৪৫ জন। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মোট ৮ হাজার ৩৪৮ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন আছেন। ঢাকার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ৩ হাজার ৮১৮ জন এবং অন্যান্য বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ৪ হাজার ৫৩০ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন। চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ২৫ হাজার ৩৪২ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ৫৮ হাজার ৬১০ জন এবং ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নিয়েছেন ৬৬ হাজার ৭৩২ জন। আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ লাখ ১৬ হাজার ৩৯৭ জন। ঢাকায় ৫৪ হাজার ৩৫৩ এবং ঢাকার বাইরে ৬২ হাজার ৪৪ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত ৫৯৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে ২০২২ সালে ডেঙ্গুতে ২৮১ জন মারা যান। ওই বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে ডেঙ্গুতে ২৭ জনের মৃত্যু হয়। একই সঙ্গে আলোচ্য বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৬২ হাজার ৩৮২ জন। ২০২০ সালে করোনা মহামারিকালে ডেঙ্গু সংক্রমণ তেমন একটা দেখা না গেলেও ২০২১ সালে সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হন ২৮ হাজার ৪২৯ জন। একই বছর দেশব্যাপী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন এইচএসসি পরীক্ষার্থী নিশাত আরা আলভিদা। গত বৃহস্পতিবার তিনি মারা যান (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। জানা গেছে, চার দিন আগে হঠাৎই জ্বরে আক্রান্ত হন ১৯ বছরের নিশাত। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় চিকিৎসক হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। তার প্লাটিলেট কমতে থাকে। অবশ্য একদিনের মাথায় প্লাটিলেট আবার বাড়তে থাকে। কিছুটা সুস্থ বোধ করায় বাসায় চলে আসেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় নিশাত বাসাতেই মারা যান। গতকাল নিশাতের মৃতদেহ নাটোরে নিয়ে যাওয়া হয়। নাটোর হাফরাস্তা এলাকায় তারা থাকতেন। সেখানেই একটি কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে। নিশাতের বেড়ে ওঠা নাটোরে। সেখান থেকে এসএসসি পাস করেন। নাটোরেই একটি কলেজে ভর্তি হয়ে পরে তিনি ঢাকায় চলে আসেন। থাকতেন মায়ের সঙ্গে। এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন নিশাত। সর্বশেষ তিনি অ্যাকাউন্টিং পরীক্ষা দিয়েছেন। এরপর আর কোনো পরীক্ষা দিতে পারলেন না।