রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি। দুই দিনের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির প্রথম দিনে গতকাল ‘ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালিয়ে গণহত্যাকারী খুনি সরকার ও তার দোসরদের বিচারের দাবিতে’ রাজধানীর নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন দলটির নেতা-কর্মীরা। যা পরে সমাবেশে রূপ নেয়। এদিন ঢাকা মহানগরের সব থানা ও ওয়ার্ডেও মিছিল করেন নেতা-কর্মীরা। এমনকি গুরুত্বপূর্ণ সড়কের মোড়ে মোড়েও নেতা-কর্মীদের অবস্থান করতে দেখা যায়। আজ বৃহস্পতিবারও সারা দেশের দলীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি রয়েছে। একই সঙ্গে এ দিনটিকে ঘিরে সারা দেশের নেতা-কর্মীদের সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু জানান, (আজ) বৃহস্পতিবারও সারা দেশে প্রত্যেক জেলা, উপজেলায় এবং ঢাকার ওয়ার্ডগুলোতে অবস্থান কর্মসূচি চলবে। বিকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এ অবস্থান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক বলেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের প্রেতাত্মারা এখন বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় বিরাজমান, তারা যড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। তাদের এ যড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সবাইকে সতর্ক ও সজাগ থাকতে হবে। ঢাকা মহানগরের প্রতি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির আলোকে আমরা শান্তিপূর্ণ মিছিল করব। প্রতিটি ওয়ার্ডের মোড়ে মোড়ে অবস্থান নেবেন নেতা-কর্মীরা। যাতে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা আবারও মাথা চাড়া দিতে না পারে। বাংলাদেশে স্বৈরশাসকের কোনো স্থান নেই। আজ যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষক দল ও ছাত্রদলসহ বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনেরও পৃথকভাবে সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ কর্মসূচি রয়েছে। এ কর্মসূচি সফল করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে সংগঠনগুলো। কেউ যেন অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য পাড়া-মহল্লায় অবস্থান নেবে নেতা-কর্মীরা।
গতকাল নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, শেখ হাসিনার নির্দেশে যারা দেখামাত্র গুলি করে মানুষ হত্যা করেছেন, সেসব পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। তাদের উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে। এই বাংলাদেশ আমাদের, এদেশ সবার।
বরকতউল্লাহ বুলু বলেন, যারা বিএনপির নামে কোথাও কোনো লুট ও লুণ্ঠন করবেন, মানুষের ওপর অত্যাচার করবেন, তারা বিএনপির কেউ নয়। তাদের বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হচ্ছে। এই লুটেরা ব্যক্তিরা কখনো বিএনপি হতে পারে না। আমরা গত ১৭ বছরে মামলা ও হামলা নিয়ে বাড়িতে ঘুমাতে পারিনি। সুতরাং যারা আজকে বিএনপির নামে লুণ্ঠন করে বদনাম দিতে চায়, আজকে যারা নব্য নেতা সেজেছে, তাদের প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি- তারা বিএনপির নয়। তারা বিএনপি বললেই আমরা মার দিয়ে বের করে দেব।
এতে আরও বক্তব্য দেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, আবদুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা প্রমুখ। এ ছাড়া বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের কয়েক হাজার নেতা-কর্মী এতে অংশ নেন। রাজধানী ছাড়াও দেশের সব জেলা, মহানগর, এমনকি থানা-উপজেলাতেও এ কর্মসূচি পালন করা হয়।