ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেছেন, ইসলামী আন্দোলন আর ছোট দল নয়, এখন ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেওয়ার যোগ্যতা রাখে। যখন ইসলামবিদ্বেষী কোনো দল মাথা উঁচু করে, তখন তাদের দাঁতভাঙা জবাব দেওয়ার জন্য মাঠে থাকে। গতকাল বিকালে ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবে সংঘটিত গণহত্যার বিচার, দুর্নীতিবাজদের গ্রেপ্তার, অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও তাদেরকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করাসহ ইসলামী সমাজভিত্তিক কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে ময়মনসিংহে গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। নগরীর রেলওয়ে কৃষ্ণচূড়া চত্বরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ময়মনসিংহ জেলা উত্তর, দক্ষিণ ও মহানগর শাখা এই সমাবেশের আয়োজন করে। পরে তিনি গাজীপুর জেলা কমিটির সমাবেশে বক্তৃতা দেন।
এ সময় তিনি আরও বলেন, বিগত দিনে দেখেছি ইসলামের নামে কিছু দল তাদের স্বার্থের জন্য রাজনীতি করে। আমরা সব ইসলামী দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছি। দেশের জন্য এবং মানবতার কল্যাণের জন্য আমরা সবাই একসঙ্গে মিলে কাজ করার অঙ্গীকার করছি। সমাবেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর ময়মনসিংহ মহানগর সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে সমাবেশে সংগঠনের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মাও. লোকমান হোসেন জাফরী, ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জি এম রুহুল আমীন, ময়মনসিংহ উত্তর জেলা সভাপতি আলহাজ হাদীউল ইসলামসহ স্থানীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন। মানুষের জানমাল ও ইজ্জত রক্ষার্থে ইসলামী আন্দোলন সংখ্যালঘুদের মন্দির পাহারায় নেমেছিল উল্লেখ করে সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ৫ আগস্ট যখন দেশ বিভিন্ন প্রশাসনিকভাবে ভেঙে পড়ে তখন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কর্মীরা সংখ্যালঘুদের মন্দির পাহারায় নেমেছিল। মানুষের জানমাল ও ইজ্জত রক্ষার্থে দায়িত্ব পালন করেছে। রাস্তায় মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে তারা ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করেছে। আর ওই সময় কিছু স্বার্থন্বেষী মহল, চাঁদাবাজিতে লিপ্ত, জমি দখলে লিপ্ত, সন্ত্রাসীতে লিপ্ত, বিভিন্ন স্বার্থ উদ্ধারে লিপ্ত। আমরা তাদেরকে ধিক্কার জানাই। তাদেরকে আমরা ঘৃণা জানাই। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির হজরত মাওলানা মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম গাজীপুরে বলেছেন, স্বাধীনতার ৫৩ বছরে এদেশে বারবার শুধু ক্ষমতার পালা বদল হয়েছে। নেতার পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু নীতি ছিল একটিই। আর তাহলো মানব রচিত আইন ও শাসন ব্যবস্থা। এই কারণে শাসক গোষ্ঠী হয়েছে স্বৈরাচার ও দুর্নীতিবাজ। স্বাধীনতার স্বাদ থেকে জনগণ হয়েছে বঞ্চিত। আর জনগণকে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন করতে হয়েছে বারবার। সম্প্রতি জুলাই বিপ্লবও হয়েছে শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে। শত শত ছাত্র-জনতার জীবন উৎসর্গ এবং পঙ্গুত্ববরণ করার মাধ্যমে সফল হয়েছে এ আন্দোলন। বিদায় হয়েছে রক্তচোষা মানবতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার। যারা সৃষ্টি করেছিল গুম, খুন, গায়েবি মামলা ও রাতের ভোটের রাজনীতি। আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে স্বাধীনতার স্বাদ নেওয়ার পথকে সুগম করেছেন। এই সুযোগকে কাজে লাগাতে না পারলে জাতি হিসেবে আমাদের চরম খেসারত দিতে হবে। ভবিষ্যতেও স্বৈরাচারী শাসকের আগমন হবে। দুর্নীতি-দুঃশাসন শুরু হবে। দেশ অকার্যকর হবে। জনগণের জানমালের নিরাপত্তায় বিঘ্নতা সৃষ্টি হবে। আমরা এমনটি হতে দিতে পারি না। এই বিপ্লবকে অবশ্যই কাজে লাগাতে হবে। ইসলামী সমাজভিত্তিক কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এটাই চায়। ইসলামকে ক্ষমতায় নিতে চায়। প্রধান অতিথি জাতি, ধর্ম ও দলমত নির্বিশেষে সর্বস্তরের নগরবাসীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর ব্যানারে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার উদাত্ত আহ্বান জানান।