ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলার ঘটনায় মামলায় গ্রেপ্তার সুনামগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন আদালত। গতকাল সকালে সুনামগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে আদালত এ নির্দেশ দেন। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টায় জেলার শান্তিগঞ্জ উপজেলা সদরের নিজ বাসা থেকে এম এ মান্নানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আদালতসূত্র জানান, গতকাল সকাল ১০টায় এম এ মান্নানকে আদালতে উপস্থাপন করে পুলিশ। এ সময় তাঁর আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করেন। কিন্তু ছুটির দিনে সংশ্লিষ্ট আদালত (দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল) বন্ধ থাকায় জামিন শুনানি না করে মান্নানকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ফারহান সাদিক। রবিবার নির্ধারিত আদালতে জামিন শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। এদিকে সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতা-কর্মীরা। গতকাল সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত সিলেট-সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান তারা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অবরোধে অংশগ্রহণকারীরা শান্তিগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মী এবং এম এ মান্নান, হাসনাত ও নূর হোসেনের আত্মীয়স্বজন। তাদের বেশির ভাগের বাড়ি মান্নানের নিজ গ্রাম ডুংরিয়া ও আশপাশ এলাকায়। এদিকে অবরোধ চলাকালে সড়কের দুই পাশে যানজট সৃষ্টি হয়। প্রচ গরমে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীসাধারণ।
শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোক্তাদির হোসেন জানান, সড়ক অবরোধের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে অবরোধ তুলে নেয়। পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। উল্লেখ্য, ৪ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে সুনামগঞ্জে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার ওপর হামলা, গুলি, টিয়ার শেল নিক্ষেপ করেন পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। এতে শতাধিক ছাত্র-জনতা আহত হন। ওই ঘটনায় নির্দেশদাতা হিসেবে এম এ মান্নানসহ ৯৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন গুলিবিদ্ধ আন্দোলনকারী জহুর আহমদের ছোট ভাই হাফিজুর রহমান। দ্রুত বিচার আইনে দায়ের করা এ মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় এম এ মান্নানকে। এ ছাড়া মামলায় সাবেক তিন এমপি, স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী, পুলিশসহ ৯৯ জনের নাম এবং অজ্ঞাত আরও ১৫০ থেকে ২০০ জনকে আসামি করা করা হয়। মামলার অন্য উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নূরুল হুদা মুকুট, সাধারণ সম্পাদক নোমান বখত পলিন, সাবেক সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক, মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, রণজিত সরকার, সাবেক পৌর মেয়র নাদের বখত, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান খায়রুল হুদা চপল প্রমুখ।