দেশে হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি) আক্রান্ত সানজিদা আক্তার (৩০) মারা গেছেন। রাজধানীর মহাখালী সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। তবে তাঁর মৃত্যু মাল্টিঅর্গান ফেইলরের (বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিকল) কারণে হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান।
তিনি বলেন, এইচএমপিভি নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে এ ভাইরাসের বিস্তার কমবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর মহাখালী সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে বুধবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় এইচএমপিভি আক্রান্ত সানজিদার মৃত্যু হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আরিফুল বাশার। তিনি জানান, ওই নারী ওইদিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে মারা যান। তবে তিনি যে শুধু এইচএমপিভির জন্যই মারা গেছেন, এটা বলা যাচ্ছে না। তাঁর আরও শারীরিক জটিলতা ছিল।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান বলেন, এইচএমপিভি নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। বিভিন্ন দেশে এ ভাইরাসের বিস্তার আগে থেকেই ছিল। সানজিদা প্রথমে বাসার আশপাশে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। তাঁর অবস্থার অবনতি ঘটলে এক মাস পর তিনি ঢাকার একটি হাসপাতালে আসেন। তাঁকে অ্যান্টিবায়োটিক ও অক্সিজেন দেওয়া হয়। চার দিন পর তাঁর অবস্থার আরও অবনতি হয়। এরপর তাঁকে পরীক্ষা করে দেখা যায় তিনি এইচএমপিভি পজিটিভ। মাল্টিঅর্গান ফেইলরের কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তাঁর নিউমোনিয়া ছিল। শরীরে একটি ভাইরাস ও একটি ব্যাকটেরিয়া ছিল। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত বিজ্ঞান যেটুকু বলেছে এইচএমপিভির কারণে মৃত্যু বিরল। তবে এইচএমপিভি ব্যক্তি যদি অন্যান্য রোগে আক্রান্ত থাকেন এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে তাহলে এ রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেশি। এ ছাড়া পাঁচ বছরের নিচে শিশু এবং ৬৫ বছরের বেশি বয়সি মানুষের সঙ্গে যদি সিওপিডি অ্যাজমা থাকে তাহলে তাঁদের কিছুটা ঝুঁকি থাকে। সায়েদুর রহমান বলেন, ইনফ্লুয়েঞ্জা আক্রান্তের একটা অংশ সব সময়ই এইচএমপিভি আক্রান্ত থাকে। তবে এইচএমপিভি কখনোই সাধারণভাবে মৃত্যুর কারণ হয় না।
তিনি আরও জানান, এইচএমপিভির লক্ষণগুলো হলো জ্বর, সর্দিকাশি, গা ব্যথা, নাক দিয়ে পানি পড়া ইত্যাদি। এজন্য সাধারণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ থাকবে। যখন অনেক মানুষের মধ্যে যাবেন তখন যাতে মাস্ক পরেন। কেউ অসুস্থ বোধ করলে যাতে ঘরে থাকেন। সাধারণ এ বিষয়গুলো মেনে চললে এ ভাইরাসের বিস্তার কমবে।