নতুন মোড় নিতে চলেছে নির্বাচন কমিশন-ইসি এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মধ্যকার ‘শাপলা’ প্রতীক সংকট। চলতি সপ্তাহে এনসিপিকে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে প্রতীক বরাদ্দ দেবে ইসি। অন্যদিকে এনসিপি পরিকল্পনা করছে শাপলা আদায়ে আন্দোলনে নামার। এ সংকট থেকে সংসদ নির্বাচন বিলম্বিত হলে এর দায় ইসিকে নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন এনসিপি নেতারা। দলটির নেতারা বলছেন, শাপলা ছাড়া অন্য কোনো প্রতীক তারা মেনে নেবেন না।
ইসি সূত্র জানায়, এনসিপিকে অন্য প্রতীক বেছে নেওয়ার জন্য বেঁধে দেওয়া সময় শেষ হয়েছে। চলতি সপ্তাহেই ইসির বর্তমান তালিকা থেকে দলটিকে যে কোনো একটি প্রতীক স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে বরাদ্দ দেওয়া হবে। ইসির এমন অনড় অবস্থানের বিরুদ্ধে পাল্টা অবস্থান নিয়েছে এনসিপি। সূত্র জানায়, শাপলা না দিয়ে অন্য কোনো প্রতীক ইসি চাপিয়ে দিলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবে দলটি।
জুলাই বিপ্লবীদের এ রাজনৈতিক দলটির অভিযোগ, শাপলার জন্য এনসিপির আবেদন অনিষ্পন্ন রেখেই নির্বাচন কমিশন বিধিবহির্ভূতভাবে দলটির প্রার্থিত প্রতীক বাদ দিয়ে ইচ্ছামতো প্রতীক বরাদ্দের হুমকি দিচ্ছে, যা স্বেচ্ছাচার ও বেআইনি। দলটির নেতারা দাবি করছেন, কমিশন এখন পর্যন্ত প্রতীক অন্তর্ভুক্তি বা বাদ দেওয়ার কোনো লিখিত নীতিমালা বা মানদন্ড প্রকাশ করেনি। সংবিধানের ২৭ ও ৩১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, সব দলের সঙ্গে সমতা ও ন্যায্য আচরণ নিশ্চিত করা নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব, যা প্রতীক বরাদ্দের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। এনসিপি কমিশনের কাছে জানতে চেয়েছে- কোন নীতিমালা বা আইনি ভিত্তিতে ‘শাপলা’, ‘সাদা শাপলা’ বা ‘লাল শাপলা’ প্রতীক তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। যদি এমন কোনো নীতিমালা না থাকে, তবে তা অবিলম্বে প্রণয়ন ও প্রকাশ করতে হবে।
এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ইসির যে প্রতীক তালিকা সেখানে রাজনৈতিক কোনো প্রতীক নাই। এখন এই তালিকা থেকেই যদি ইসি তাদের ইচ্ছামতো কোনো একটি প্রতীক আমাদের ওপর চাপিয়ে দেয় তবে সেটি মেনে নেওয়ারও কোনো কারণ নাই।
যৌক্তিক কোনো ব্যাখ্যা ছাড়া ইসি যদি এটি করে তবে তাদের স্বৈরতান্ত্রিক যে চরিত্র সেটি আরও প্রকট হয়ে উঠবে। শাপলা পাওয়ার জন্য এনসিপির যে রাজনৈতিক লড়াই, সেটি চলমান থাকবে।
দলের যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দীন সিফাত বলেন, নির্বাচন কমিশন এনসিপিকে শাপলা প্রতীক বরাদ্দও দেবে না। আবার বরাদ্দ কেন দেবে না তার আইনি ব্যাখ্যাও দেবে না। ‘আমার ইচ্ছা, আমার খুশি’ টাইপের বাচ্চামি আরকি। এরকম শিশুসুলভ ব্যাখ্যা আমরা নুরুল হুদা কমিশন থেকে দেখতাম।
তিনি বলেন, যৌক্তিক ব্যাখ্যা না দিয়ে শাপলা না দেওয়াটা স্রেফ নির্বাচনকে বিলম্বিত করার ধান্দা। এ নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা সুদূরপরাহত। প্রথম দিন থেকেই এরা কারও প্রেসক্রিপশনে আমাদের সঙ্গে পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে। এই সংকটের কারণে নির্বাচন বিলম্বিত হলে এর দায় নির্বাচন কমিশনকেই নিতে হবে। শাপলা এবং শাপলা-ই হবে আমাদের প্রতীক।