মসৃণ ও সুন্দর ত্বক সবাই চায়। আর এই সুন্দর ত্বকই যখন শুষ্ক ও মলিন হয়ে পড়ে তখন নিজের কাছেই আর ভালো লাগে না। কোনো কাজে ঠিকমতো মন বসতে চায় না। অপরদিকে ঝকঝকে মসৃণ ত্বক শুধু দেখতে সুন্দর নয়, আপনার সুখী মনের পরিচয়কও বটে। তাই সুন্দর ত্বক পেতে ব্যবহার করতে পারেন ক্লে মাস্ক। ত্বক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার পাশাপাশি পুষ্টি জুগিয়ে ত্বক কোমল করার জন্য এই মাস্ক ব্যবহার করা হয়ে থাকে। গরমের দিনে ত্বকে তেল গ্রন্থিগুলো সক্রিয় হয়ে ওঠে। এর ফলে মুখ বেশি তেলতেলে হয়ে যায়। হঠাৎ গরমে র্যাশ ও ব্রণ হয় বেশি। আবার অতিরিক্ত ঘামের জন্য ত্বকের আর্দ্রতা হারিয়ে যায়। এ সময় ব্ল্যাকহেডস, হোয়াইট হেডস, বলিরেখা, ত্বকে কালো স্পট, ছোপ ছোপ দাগ হিটের জন্য ওপেন পোস বেশি হয়। তাই গরমকালে ক্লে মাস্ক ত্বকের জন্য উপযোগী। ক্লে মাস্ক অয়েল ওপেন পোসকে একদমই কমিয়ে দেয়। হোয়াইট হেডস, ব্ল্যাকহেডসগুলোকে সারিয়ে তোলে। ত্বককে সজীব ও সতেজ রাখে। এখন দেখে নেওয়া যাক ত্বকের ধরন অনুযায়ী আলাদা আলাদা মাস্ক ব্যবহার করার নিয়ম।
তৈলাক্ত ত্বকের জন্য
মুলতানি মাটি ৩ চা চামচ, গোলাপজল ৪ চা চামচ ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে। এবার মিশ্রণটি পুরো মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষার পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই ত্বকের জন্য আরও একটি মাস্ক উপকারী। ৪ চা চামচ শসার রস, ১ চা চামচ লেবুর রস, ১ চা চামচ গোলাপজল, ২চা চামচ চন্দন গুঁড়া একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। এবার পুরো মুখে মাস্কটি লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
শুষ্ক ত্বকের জন্য ৪ চা চামচ মুলতানি মাটি, ২ চা চামচ মধু, ২ চা চামচ কাঁচা দুধ, ২ চা চামচ গোলাপজল একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। পুরো মুখে মিশ্রণটি লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এছাড়াও ২ চা চামচ ময়দা, ২ চা চামচ লেবুর রস, ২ চা চামচ টকদই, ২ চা চামচ গোলাপজল, মধু নিয়ে একটি মাস্ক বানাতে পারেন। এটিও ত্বকে লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষার পর ধুয়ে ফেলতে হবে।
মিশ্র ও স্বাভাবিক ত্বক ২ চা চামচ মুলতানি মাটি, ১ চা চামচ গোলাপজল, লেবুর রস ১ চা চামচ, চন্দন গুঁড়া ১ চা চামচ, মধু ১ চা চামচ একসঙ্গে মেশাতে হবে। এবার মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এই ত্বকের উপযোগী আরেকটি মাস্কের জন্য বেসন ৩ চা চামচ, শসার রস ২ চা চামচ, ২ চা চামচ গোলাপজল নিন। এবার সব উপকরণ ভালো করে মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
মাস্ক ব্যবহার করার সময় কিছু সতর্কতার প্রয়োজন। কারণ মুখের ত্বক অত্যন্ত স্পর্শকাতর। মাস্ক ১৫ থেকে ২০ মিনিটের বেশি ত্বকে রাখা ঠিক নয়। সপ্তাহে ২ দিন ব্যবহার করতে হবে। এর বেশি নয়, বেশি ব্যবহারে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। ত্বকে ব্যবহার করার ঠিক আগে এটি তৈরি করতে হবে। ঘরোয়া পদ্ধতিতে ক্লে মাস্ক তৈরির পাশাপাশি বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মাস্ক পাওয়া যায়। অর্গানিক ক্লে মাস্ক বেশি জনপ্রিয়। নিজের ত্বকের ধরন বুঝে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। ত্বকে এলার্জি, চুলকানি ও ত্বকের কোনোরকম সমস্যা থাকলে মাস্ক ব্যবহার করা উচিত নয়।
যারা নিতান্তই কোনো ঝামেলা করতে চান না, বাজার থেকে রেডি ক্লে মাস্ক কিনতে চান তাদের জন্য উপযুক্ত চারকোল কালো মাস্ক। ধুলা, ময়লা সরিয়ে ত্বক পরিষ্কার করার ভালো উপায় কালো ক্লে মাস্ক। যাদের ত্বকে ছোট ছোট ফুসকুড়ি বা ব্ল্যাকহেডস হয়, তারা এই ক্লে ব্যবহার করতে পারেন। ফ্যাব ইন্ডিয়ার চারকোল মাস্ক কিনতে পারেন। তাছাড়াও বডিশপের হিমালয়ান চারকোল পিউরিফাইয়িং গ্লো মাস্ক ব্যবহার করে দেখতে পারেন। চারকোল পাউডার কিনে বাড়িতেই অন্য ফেস প্যাকের সঙ্গে মিশিয়ে কালো ক্লে মাস্ক তৈরি করে নেওয়া যায়। নাইকা বা আমাজনের মতো সাইটে পেয়ে যাবেন।
শারমিন সেলিম তুলি
রূপ বিশেষজ্ঞ, বেয়ার বিজ বডি ওয়েক্স অ্যান্ড স্যালন।