শুক্রবার, ১২ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

সুস্থ চুলের টোটকা

সুস্থ চুলের টোটকা
পরিচ্ছন্নতাই সৌন্দর্যের মূলকথা। তাই নিয়মিত চুল পরিষ্কার করা উচিত। সাধারণত সপ্তাহে একদিন শ্যাম্পু করা দরকার। যাদের রোজ বাইরে বেরোতে হয় তারা সপ্তাহে দুই দিন শ্যাম্পু করতে পারেন।

 

চুল পরিষ্কারের নিয়ম

পরিচ্ছন্নতাই সৌন্দর্যের মূলকথা। তাই নিয়মিত চুল পরিষ্কার করা উচিত। সাধারণভাবে সপ্তাহে একদিন শ্যাম্পু করা দরকার। যাদের রোজই বাইরে বেরোতে হয়, বাস-ট্রেনে ঘুরে বেড়াতে হয় কিংবা যাদের কলকারখানা বা ধুলো-বালির মধ্যে কাজ করতে হয়, তাদের প্রয়োজনে সপ্তাহে দুই দিন শ্যাম্পু করতে হবে। প্রয়োজনে আরও বেশিবার করা যায়; প্রয়োজনে ব্যবহার করতে হবে মেডিকেটেড শ্যাম্পু। এ ছাড়া নিয়মিত গোসল করতে হবে। রোজ চুল আঁচড়াতে হবে বেশ কয়েকবার। বেশি সরু দাঁড়ার চিরুনি ব্যবহার করা যাবে না। একটু মোটা দাঁড়ার চিরুনিই ভালো। অনেকে শুকনো চুল ব্রাশ বা চিরুনি দিয়ে জোরে জোরে আঁচড়ান। এতে চুলের ডগা কেটে যায়। সাবান বা শ্যাম্পু ব্যবহারের সময় অনেকে চুল কাপড় কাচার মতো করে কচলান। মনে রাখতে হবে, চুল শরীরেরই অংশ। তাই সাবধানে পরিচর্যা করা দরকার। সামান্য ভিজা অবস্থায় চুল আঁচড়ালে চুলে আঘাত কম লাগে। আর চিরুনি হতে হবে পরিষ্কার।

 

চুলের রুক্ষতা যে কারণে

চুল রুক্ষ হলে গন্ধহীন নারিকেল তেল ব্যবহার করা যেতে পারে। পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিত। এজন্য স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিতে হবে। চুলে উকুন আছে কিনা, দেখতে হবে। থাকলে চিকিৎসা করাতে হবে। চুলে প্রসাধন সামগ্রী কম ব্যবহার করা ভালো। প্রসাধন নির্বাচনে প্রকৃতির যত কাছে থাকা যায়, তত ভালো। প্রাকৃতিক উপাদানের প্রসাধন অনেক বেশি নিরাপদ। এ কারণে আগে মানুষের অ্যালার্জি কম হতো। অ্যালার্জি মূলত সিনথেটিক যুগের সমস্যা। চুল যাতে রুক্ষ বা লালচে না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। রোদ এড়িয়ে চলা ভালো। হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহারে সতর্ক থাকতে হবে। অতিরিক্ত ক্লোরিনমিশ্রিত পানিতে গোসল ঠিক নয়। চুলের পরিচ্ছন্নতা কিংবা রক্ষার দায়িত্ব নিজের। কাজেই চুল সুন্দর, স্বাস্থ্য-উজ্জ্বল, আকর্ষণীয় করে তোলার চাবিকাঠিও যে যার নিজের হাতে।

 

শুষ্ক বা তৈলাক্ত চুল

ত্বকের মতো, বংশগতির প্রভাবে চুল অনেক সময় শুষ্ক বা তৈলাক্ত হয়। পরিবেশগত কারণ এ জন্য অনেকটা দায়ী। অতিরিক্ত সাবান বা শ্যাম্পু ব্যবহারেও চুল অনেক সময় রুক্ষ করে দিতে পারে। আবার উল্টোটাও সত্যি। অনেকে একদম সাবান বা শ্যাম্পু ব্যবহার করেন না। কিন্তু জবজবে করে তেল মাখেন। এতে চুল অতিরিক্ত তৈলাক্ত হয়। চুলে বেশি তেল দিলে বিশেষ ক্ষতি হতে পারে, খুশকি বেশি হতে পারে, ময়লা জমতে পারে।

 

প্রবাদ আছে, তেলা মাথায় তেল দেওয়া উচিত নয়। এটি বাস্তব সত্য। চুলের পুষ্টি আসে মূলত শরীরের ভিতর থেকে। তবে যাদের মাথা বা চুল শুষ্ক কিংবা রুক্ষ, তারা তেল দিতে পারবেন। তেল গোসলের আগের চেয়ে গোসলের পরে দেওয়া ভালো। গন্ধহীন বিশুদ্ধ নারিকেল তেল মাখা ভালো। গন্ধযুক্ত নারিকেল তেল ব্যবহারে অনেক সময় অ্যালার্জি দেখা দিতে পারে। মাথায় কখনো ভিজে চপচপে করে তেল মাখা উচিত নয়। নিয়ম হলো, চুল সামান্য ভেজা থাকাবস্থায় অল্প নারিকেল তেল দিয়ে মাথার ত্বকে আলতো করে ম্যাসাজ করা। এতে মাথায় ত্বকের রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়। কখনো জোরে জোরে মাথার ত্বক বা চুলের গোড়ায় তেল ঘষা উচিত নয়। বেশি জোরে ঘষলে চুল বেশি উঠতে পারে। চুলের গোড়ায় যাতে আঘাত না লাগে, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। শ্যাম্পু ব্যবহারের ক্ষেত্রেও তাই। শ্যাম্পু দেওয়ার পর বেশি টানাহেঁচড়া করলে চুল আলগা হয়ে যায়। ব্রাশ বা চিরুনি দিয়ে জোরে আঁচড়ালেও সমস্যা হতে পারে।

 

লেখক :

ডা. দিদারুল আহসান

চর্ম ও যৌনরোগ বিশেষজ্ঞ

আল-রাজি হাসপাতাল, ফার্মগেট, ঢাকা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর