শুক্রবার, ১৪ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

পারলার ফেসিয়াল

ফেসিয়াল তো করাচ্ছেন মাসে মাসে। কোন ফেসিয়ালের উপকারিতা কতটুকু জানেন তো! না জানলে আজই জেনে নিন......

পারলার ফেসিয়াল

♦ মডেল : লাকি হামিদ ♦ ছবি : আতিক

ত্বক প্রতিদিনই পুনর্জীবিত হয়। একটু সহজভাবে বললে, ত্বকে প্রতিদিন (২৪ ঘণ্টায়) লক্ষাধিক মৃতকোষের আস্তর জমে। জন্মায় নতুন কোষও। মৃতকোষের আস্তরে ঢাকা ত্বক দেখায় অমলিন, অনুজ্জ্বল আর প্রাণহীন। আর ত্বকের এ দুর্গতি কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে ফেসিয়ালের মতো বিশেষায়িত সেবা। তবে সবার পক্ষে বাড়িতে এতকিছু করা সম্ভব নয়। আর ম্যাসাজ বা প্যাকের জন্য কিছুটা সময় না দিলে ভালো ফলাফলও আশা করা যায় না। এক্ষেত্রে পারলার ফেসিয়ালই একমাত্র ভরসা। তবে এই সেবা গ্রহণের আগে অবশ্যই জেনে রাখা প্রয়োজন কোন ফেসিয়ালের কেমন উপকারিতা।

 

পারলারগুলো আজকাল গ্রাহকদের নানা পরিষেবা দিয়ে থাকে। কিছু কিছু পারলার লেজার ট্রিটমেন্ট, হার্বাল প্রোডাক্ট, কেমিক্যাল প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করে। আবার কিছু পারলার অত্যাধুনিক যন্ত্র দ্বারা গ্রাহকদের সন্তুষ্টি লাভ করে। তবে আজকাল পারলার ফেসিয়াল বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তবে স্কিন এবং ফেসিয়াল ট্রিটমেন্টভেদে এদের উপকারিতাও ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। রেটিনল, ভিটামিন সি, ই, বি, হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড, হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড, ক্যালসিয়াম ইত্যাদিযুক্ত প্রোডাক্ট বেশ ভালো কাজে দেয়। গোল্ড ফেসিয়াল, সিলভার ফেসিয়াল, পার্ল ফেসিয়াল, ফ্রুট ফেসিয়াল, ব্রাইটনিং ফেসিয়াল, গ্লোয়িং ফেসিয়াল করাতে পারেন। সেক্ষেত্রে অবশ্যই ত্বকের ধরন বুঝে উপযুক্ত ফেসিয়াল ট্রিটমেন্টটি বেছে নিতে হবে। এই পরিষেবা নেওয়ার জন্য দক্ষ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

 

আজকাল পারলারগুলো গ্রাহকদের বিভিন্ন ধরনের স্কিন ফার্মিং এবং অ্যান্টি এজিং ফেসিয়াল পরিষেবা দিয়ে থাকে। তবে এদের সব একই ধরনের কাজ করবে তাও নয়। ফেসিয়াল ত্বকের হারিয়ে যাওয়া দীপ্তি পুনরুদ্ধারে সাহায্য করে। লোমকূপগুলো গভীর থেকে পরিষ্কার করে কমায় দাগছোপ। রোদপোড়া তামাটে ত্বকও স্বাভাবিক করে দেয়। ফলে দেখায় স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ও সুন্দর।  আজ কিছু কমন ফেসিয়ালের সন্ধান দিলাম।

 

গোল্ড ফেসিয়াল

মধ্যবয়সী নারীদের জন্য এই ফেসিয়াল বেশ কার্যকর। এই ফেসিয়াল একটু হলুদ আভা ত্বকে উজ্জ্বল ভাব আনে। ত্বকের পুরনো লাবণ্য, উজ্জ্ব্লতা ফিরিয়ে  আনতে গোল্ড ফেসিয়ালের জুড়ি নেই।

 

পার্ল ফেসিয়াল

সব ধরনের ত্বকের জন্য এই ফেসিয়াল প্রযোজ্য, তবে স্পর্শকাতর ত্বকে বেশি কার্যকর। বয়স একটু বেশি হলে এই ফেসিয়াল ট্রাই করতে পারেন। এটি ব্যবহারে ত্বকে অফহোয়াইট একটা আভা আসে এবং অনেক দিন দীর্ঘস্থায়ী হয়।

 

ডায়মন্ড ফেসিয়াল

এই ফেসিয়ালের মূল অংশ ডায়মন্ড ডাস্ট পিল অব মাস্ক, যা ত্বককে দৃঢ়তা প্রদান করে। এতে ভিটামিন সি, কিউয়ি এবং গ্রেপফ্রুট এক্সট্র্যাক্টও থাকে যা ডি-পিগমেন্টেশনে সাহায্য করে। অ্যাকনে প্রবণ ত্বক ছাড়া যে কোনো ত্বকে এই ফেসিয়াল ব্যবহার করা যায়।

 

স্কিন টাইটেনিং ফেসিয়াল

ওজন বাড়লে, গর্ভাবস্থা বা বয়সজনিত কারণে মুখের চামড়ার স্থিতিস্থাপকতা নষ্ট হয়ে ত্বক ঝুলে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। ফলত ত্বকের টানটান ভাব কমে যায়। এ ক্ষেত্রে এই ফেসিয়াল খুবই উপকারী।

 

লাইটেনিং ফেসিয়াল

যে কোনো ধরনের ত্বকে জুতসই লাইটেনিং ফেসিয়াল। এই ফেসিয়ালের মূল প্রক্রিয়া শুরু হয় ত্বক পরিষ্কারের মাধ্যমে। এটি ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়, করে তোলে দাগছোপমুক্ত। এতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ত্বকের টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে এবং লোমকূপগুলো খুলে যায়। ফলে ত্বক পরিষ্কার করা যায় পরিপূর্ণভাবে।

 

ফ্রুট ফেসিয়াল 

এই ফেসিয়ালে যে মিক্সড ফ্রুট ক্রিম ব্যবহার করা হয় যা সব ধরনের ত্বকের জন্য ভালো। বিশেষ করে ত্বকের গভীর থেকে ময়লা পরিষ্কার করে। ত্বক টান টান রাখে। এই ফেসিয়াল সব ধরনের ত্বকের জন্য ভালো। তবে স্পর্শকাতর ত্বকের জন্য বেশ কার্যকর।

 

এ ছাড়া আছে ট্রিটমেন্ট ফেসিয়ালও। এ ধরনের ফেসিয়াল নির্দিষ্ট বিষয়কে সামনে রেখে স্কিন ট্রিটমেন্ট করা হয়। যেমন- ব্রণ, রোদে পোড়া ইত্যাদি দূর করার জন্য বিশেষ ফেসিয়াল। সাধারণত তৈলাক্ত ত্বকে সেবাম কন্ট্রোল ফেসিয়াল, অ্যাকনে কন্ট্রোল ফেসিয়াল সবচেয়ে উপকারী। পিগমেন্টের জন্য পিগমেন্টেশন ফেসিয়াল, ভেজ পিল ফেসিয়াল বেশ কার্যকর। ব্ল্যাক হেডস, হোয়াইট হেডস ভালোভাবে রিমুভ করার জন্য আছে ডিপ ক্লিনজিং ফেসিয়াল। অ্যালোভেরা আর থার্মোহার্ব ফেসিয়ালে ত্বকের কালো ছোপ দূর হবে। মেছতা দূর করার জন্য আছে ভেজ পিল ফেসিয়াল ও অ্যালোভেরা ফেসিয়াল। যাদের ত্বকে বিভিন্ন ধরনের দাগ আছে তারা এই ফেসিয়ালটি করে নিতে পারেন। শুষ্ক ত্বকের জন্যও এই ফেসিয়াল খুবই উপকারী। মনে রাখবেন, ত্বকের ধরনভেদে ৩০ থেকে শুরু করে ৫০ বছর বয়সের সবার জন্য রয়েছে নানারকম ফেসিয়াল।

 

লেখক-

শোভন সাহা

কসমোলজিস্ট, শোভন মেকওভার

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর