বাংলাদেশসহ বিশ্বে প্রতি সাত সেকেন্ডে একজন মানুষ ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান (রিপোর্ট)-এর একটি জরিপে দেখা গেছে, বাংলাদেশে মোট ডায়াবেটিস আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা এক কোটি ১০ লাখ। এদের মধ্যে ১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়সীদের সংখ্যা ২৬ লাখ আরও ৩৫ বছরের বেশি বয়সীদের সংখ্যা ৮৪ লাখ।
যে ১০টি লক্ষণ দেখলে ডায়াবেটিস রোগের পরীক্ষা করাতে হবে:
১.ঘনঘন প্রস্রাব হওয়া ও পিপাসা লাগা
২.দুর্বল লাগা, ঘোর ঘোর ভাব আসা
৩. ক্ষুধা বেড়ে যাওয়া
৪. সময়মতো খাওয়া-দাওয়া না হলে রক্তের শর্করা কমে হাইপো হওয়া
৫. মিষ্টি জাতীয় জিনিসের প্রতি আকর্ষণ বেড়ে যাওয়া
৬. কোনো কারণ ছাড়াই অনেক ওজন কমে যাওয়া
৭. শরীরে ক্ষত বা কাটা-ছেঁড়া হলে দীর্ঘদিনেও সেটা না সারা
৮. চামড়ায় শুষ্ক, খসখসে ও চুলকানি ভাব
৯.বিরক্তি ও মেজাজ খিটখিটে হয়ে ওঠা
১০.চোখে কম দেখতে শুরু করা
কাদের ঝুঁকি বেশি :
যাদের বাবা-মা, ভাই-বোন বা ঘনিষ্ঠ আত্মীয় স্বজনদের ডায়াবেটিস রয়েছে, তাদের এই রোগটিতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি রয়েছে।
এছাড়া যারা নিয়মিত হাঁটাচলা বা শারীরিক পরিশ্রম করেন না, অলস বা অনিয়ন্ত্রিত জীবন-যাপন করেন, তাদের এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
এছাড়া নারীদের গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস রোগ হতে পারে। যাদের হৃদরোগ রয়েছে, রক্তে কোলেস্টেরল বেশি, উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে, তাদেরও এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। যেসব শিশুর ওজন বেশি, যাদের মায়ের গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস হয়েছিল, সেই সব শিশুর ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
ডায়াবেটিসের ঝুঁকি সম্পর্কে যেসব জানা জরুরি:
ডায়াবেটিস এমন একটি শারীরিক অবস্থা যা সারা জীবনের জন্যে বয়ে বেড়াতে হয় এবং সারা বিশ্বে এর কারণে প্রতি বছর ১০ লাখেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। ডায়াবেটিসের কারণে মানুষ অন্ধ হয়ে যেতে পারে, মানুষের হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোক হতে পারে, নষ্ট হয়ে যেতে পারে কিডনি এবং অনেক সময় শরীরের নিম্নাঙ্গ কেটেও ফেলতে হতে পারে। সারা বিশ্বেই এই সমস্যা বেড়ে চলেছে। বর্তমানে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ৪২ কোটিরও বেশি। ৩০ বছর আগের তুলনায় এই সংখ্যা এখন চার গুণ বেশি- এই হিসাব বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার। ডায়াবেটিসের এতো ঝুঁকি থাকার পরেও যতো মানুষ এই রোগে আক্রান্ত তাদের অর্ধেকেরও বেশি এই রোগটি সম্পর্কে সচেতন নয়।
কী করতে হবে?
অবশ্যই বছরে একবার ডায়াবেটিস পরীক্ষা করাতে হবে। ডায়াবেটিস শনাক্ত হলে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
চিকিৎসা : ডায়াবেটিস যত তাড়াতাড়ি শনাক্ত করা যাবে, সেই রোগীর জন্য সেটা ততো ভালো। তাতে তিনি যেমন রোগটির চিকিৎসা দ্রুত শুরু করতে পারবেন, পাশাপাশি তার জীবনযাপনও একটি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে চলে আসবে।
লেখক: কনসালটেন্ট , ফ্যামিলি মেডিসিন বিভাগ, আলোক হেলথকেয়ার লিমিটেড , মিরপুর-১০, হটলাইন : ১০৬৭২