নয় ঘণ্টা ধরে রাস্তার উপর দাঁড়িয়েছিল ১৯ টনের ট্রাকটি। পুলিশের চোখেও পড়েছিল। ছুটির দিন প্যারিসের যে কোন বড় রাস্তায় এত বড় ট্রাক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ওই ট্রাকটিকে নিসের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয়নি পুলিশ। নয় ঘণ্টা পর সেই ট্রাকেই পিষে দিয়ে গেল উৎসবরত জনতাকে।
নিসের ‘প্রোমনাদ দেজংলে’র রাস্তায় পুলিশ যতবার ট্রাকটিকে দেখেছে, চালককে প্রশ্ন করেছে যে সেখানে সে কী করছে। সেই চালক প্রতিবারই জানিয়েছে, সে আইসক্রিম বিলি করছে। শিগগিরই সে স্থান ত্যাগ করবে। এরপর রাত ১১টার দিকে যখন অনেকে বাড়ি ফিরছিল ঠিক সেই সময় এক ঘাতক ট্রাক নিয়ে তেড়ে যায়। মানুষের স্রোতে বেপরোয়া গতিতে ঢুকে যায় ট্রাকটি। ঘাতক সেই ট্রাকের চাপায় হত্যা করে কমপক্ষে ৮৪ জনকে। যাদের অনেকে শিশু। আহত হয় ২ শতাধিক নারী ও শিশু। যাদের অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ফলে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। খবর দ্য টেলিগ্রাফের।
পুলিশ সূত্রের খবর, আগ্নেয়াস্ত্র ছাড়াও ওই ট্রাকটিতে মজুত ছিল একটি করে খেলনা রাইফেল, পিস্তল এবং গ্রেনেড! কিন্তু সন্দেহ না-হওয়ায় পুলিশ লরিটির ভিতরে তল্লাশি চালায়নি।
পুলিশ সূত্রের খবর, ঘাতক-চালক নিস শহরেরই বাসিন্দা, তিউনিশীয় বংশোদ্ভূত এক ফরাসি। বয়স ৩১। নাম মোহামেদ লাহুয়াইয়েজ বুলেল। ঘাতকের সঙ্গে আইএসের যোগ রয়েছে কি না, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়।
ফরাসি সংবাদপত্র ‘নিস ম্যাতঁ’ সূত্রের খবর, দু’দিন আগে ট্রাকটি ভাড়া করেছিল মোহামেদ। ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার বেগে ছুটে আসা ট্রাকটি নিসের রাস্তায় টানা আধঘণ্টা ধরে তাণ্ডব চালায়। এক প্রত্যক্ষদর্শীর কথায়, ‘‘আমি ওর মুখ দেখেছিলাম। ওই কাণ্ড ঘটানোর সময় সে হাসছিল! আর গুলি করার সময় বলছিল আল্লাহ হু আকবার।’’
বিডি-প্রতিদিন/১৬ জুলাই, ২০১৬/মাহবুব