ইন্দিরা গান্ধীর জন্মশতবর্ষ অনুষ্ঠানে নাম উচ্চারণ না করেই খোঁচাটা দিলেন কংগ্রেস সভাপতি। শনিবার নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত ওই স্মরণসভায় সোনিয়া গান্ধী বলেন, ঐক্যবদ্ধ, বৈচিত্র্যময়, সমানাধিকারে বিশ্বাসী ভারতবর্ষকে ধরে রাখার ক্ষেত্রে তার (ইন্দিরা গান্ধী) অবদান অবিস্মরণীয়। বিশেষ করে এমন এক সময়, যখন আমাদের নেতারা নিজেদের মহত্ব দেখানোর শর্টকার্ট রাস্তা খুঁজতে আমাদের জাতীয় নেতাদের অবদানকেও অস্বীকার করছেন। খবর এই সময়ের।
নাম না নিলেও বাক্যবাণের লক্ষ্য যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সেটা বুঝতে খুব একটা সমস্যা হয় না। মোদির নোট বাতিলের সিদ্ধান্তকে ঘিরে যখন সারা দেশে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে, সেইরকম সময়েও চুপ ছিলেন সোনিয়া। ইন্দিরার জন্মশতবর্ষেই প্রথম কটাক্ষের তির ছুঁড়লেন তিনি।
উত্তরপ্রদেশে নির্বাচনী প্রচার চালানোর সময় অসুস্থ হয়ে পড়ার পর সোনিয়াকে প্রকাশ্যে খুব একটা দেখা যায়নি। এমনকি শুক্রবার উত্তরপ্রদেশের ভোট স্ট্র্যাটেজি স্থির করার জন্য রাহুলের বাড়িতে যে বৈঠক ডাকা হয়েছিল, তাতেও তাকে দেখা যায়নি। শনিবারের অনুষ্ঠানে ইন্দিরা সম্পর্কে তিনি বলেন, তিনি আমার কাছে ইতিহাসের কোনো চরিত্র নন, তিনি আমার শাশুড়ি। আমরা একই ছাদের তলায় থেকেছি। আনন্দ-দুঃখ ভাগ করে নিয়েছি। ভারতের সংস্কৃতি, মূল্যবোধ তার থেকেই শিখেছি। রাজনীতির প্রথম পাঠ পড়েছি। আমার কাছে উনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নন, উনি ছিলেন আমার মা, শিক্ষাগুরু, বন্ধু। আমাদের হাতের বেষ্টনীতে শুয়েই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন উনি।
এরপর ইন্দিরা গান্ধীর কাজ, সেই কাজের সমালোচনা- এ সব নিয়ে বলতে শুরু করেন সোনিয়া। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অর্থনৈতিক সঙ্কটের চ্যালেঞ্জ তাকেও নিতে হয়েছিল। ইতিহাসের অন্যতম উদ্বাস্তু সমস্যা সফলভাবে সামলেছিলেন তিনি। কিন্তু ভারতের পবিত্র মানবিকতার ঐতিহ্যের সঙ্গে কখনও আপস করেননি। এখানেও যেন মোদি বিরোধী সুর। কালো টাকা উদ্ধারের নাম করেই ৫০০ ও ১০০০ টাকার পুরনো নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মোদি। কিন্তু তার জেরে সাধারণ মানুষকে যে চরম সমস্যায় পড়তে হয়েছে, তা নিয়ে বারবার সরব হচ্ছেন বিরোধীরা। প্রথম তিন দিন সংসদের কাজও মুলতবি হয়ে যায়। এহেন পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রসঙ্গ টেনে মানবিকতার খোঁচাটা মোদিকে দেওয়া হয়েছে বলেই ধারণা রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।
বিডি-প্রতিদিন/ ২০ নভেম্বর, ২০১৬/ আফরোজ-০৯