ভারতের বাণিজ্যনগরী মুম্বাইয়ে তৈরি হচ্ছে এক শয্যার হাসপাতাল। মুম্বাই শহরের চারনি রোডের ওপর অবস্থিত সঈফি হাসপাতালেই নতুন করে একটি ভবন তৈরি করা হচ্ছে। ওই ভবনটিতেই হবে এক শয্যার একটি হাসপাতাল। এটি তৈরি হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে ভারি ৫০০ কিলোগ্রাম ওজনের মিশরীয় নারী ইমন আহমেদ আমদুলাতির চিকিৎসার জন্য।
৩০০০ হাজার বর্গ ফুটের এই হাসপাতালের মধ্যেই থাকছে একটি অপারেশন থিয়েটার, আইসিইউ, চিকিৎসকদের ঘর, পরিদর্শকদের ঘর, দুটি বিশ্রাম কক্ষ এবং একটি ভিডিও কনফারেন্স রুম।
সঈফি হাসপাতালটির প্রধান ভবনের ঠিক পিছনেই তৈরি হচ্ছে নতুন এই ভবনটি। হাসপাতালের গ্রাউন্ড ফ্লোরে এই ঘরটি আলাদা করে তৈরি করা হচ্ছে। নতুন এই ভবনটির ৭৫ শতাংশ কাজ শেষ। চলতি জানুয়ারি মাসের শেষের দিকেই পুরো কাজ শেষ হবে বলে আশা করছেন কর্তৃপক্ষ।
এক শয্যা বিশিষ্ট এই হাসপাতালটি তৈরি করতে ব্যয় হচ্ছে প্রায় দুই কোটি রুপি। ইমান আহমেদের ওজন ও চেহারার কথা মাথায় রেখেই হাসপাতালটির সবকিছু নকশা করা হয়েছে। সাধারণ মাপের চেয়ে দরজার আয়তন বাড়ানো হয়েছে এমনকি হাসপাতালের বিছানাটিকেও সাত ফুট বাই সাত ফুট করা হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, সঈফি হাসপাতালের ব্যারিয়াট্রিক (ব্যারিয়াট্রিক অস্ত্রোপচারের সাধারণ অর্থ ওজন কমানোর অস্ত্রোপচার) সার্জন পরামর্শদাতা ডা: মোফাজ্জল লাকড়াওয়ালা ছাড়াও একজন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ, চেস্ট ফিজিশিয়ান, একজন এন্ডোক্রিনোলজিস্ট, দুইজন ইনটেন্সিভিস্টস এবং তিনজন অ্যানাস্থেটিস্ট মিলে ইমান আহমেদের চিকিৎসা করবেন। অস্ত্রোপচারের পর ২৪ ঘন্টাই তার পর্যবেক্ষণে থাকবেন চিকিৎসক দলটি।
অতিরিক্ত মোটা হওয়ার কারণে গত ২৫ বছর ধরে ঘরের বাইরে বের হতে পারেন না ইমন আহমেদ আমদুলাতি (৩৬)। ডায়বেটিস, শ্বাসকষ্ট, হাইপারটেনশন, হৃদরোগসহ বিভিন্ন সমস্যা ও অবসাদের কারণে বিছানা থেকেও নড়তে পারেন না ইমন। ইমনের শারীরিক অসুস্থতার কারণ জানিয়ে টুইটারে অর্থ জোগাড় করে তাকে মুম্বাইয়ে এনে চিকিৎসার আর্জি জানান ডা: মোফাজ্জেল লাকড়াওয়ালা।
টুইটের বিষয়টি নজরে পড়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের। এরপরই ইমনকে মিশর থেকে মুম্বাইয়ে উড়িয়ে আনার ব্যাপারে ডা: লাকড়াওয়ালার সবরকম সহায়তার আশ্বাস দেন সুষমা।
ডা: লাকড়াওয়ালা জানান, ইমনের অস্ত্রোপচারের বিষয়টি নিয়ে প্রস্তুতি শুরু করা হয়েছে। পুরো অস্ত্রোপচারটি বিনামূল্যে করা হবে। এমনকি অস্ত্রোপচারের পর যাবতীয় চিকিৎসার খরচাও তার পরিবারকে বহন করতে হবে না। আগামী ছয় মাস ওই চিকিৎসকের অধীনেই থাকবেন ইমন।
ইমন ঠিক কবে নাগাদ ভারতে এসে পৌঁছবেন তা জানাননি ডা: লাকড়েওয়ালা। মিশর থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স না বাণিজ্যিক বিমানে করে ইমনকে আনা হবে, সেই বিষয়টি আলোচনাধীন রয়েছে বলে জানান তিনি।
বিডি প্রতিদিন/১৩ জানুয়ারি, ২০১৭/ফারজানা